গত বৃহস্পতিবার অসমের দরং জেলায় জবরদখলকারী উচ্ছেদের সময় দু’জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পিছনে পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া নামে এক জঙ্গি সংগঠনের হাত ছিল বলে দাবি করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। শুক্রবার তিনি বলেন, উচ্ছেদের সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনও সম্পর্ক নেই। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও ক্লিপ নিয়ে সম্প্রতি হইচই শুরু হয়েছে দেশ জুড়ে। তাতে দেখা যাচ্ছে, জবরদখলকারীদের ওপরে গুলি চালাচ্ছে পুলিশ।
হিমন্ত বিশ্বশর্মার দাবি, ওই একটা ভিডিও ক্লিপ দেখেই পুরো ঘটনা সম্পর্কে ধারণা করা উচিত নয়। ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, লুঙ্গি ও গেঞ্জি পরা একটি লোককে গুলি করছে পুলিশ। আহত অবস্থায় সে মাটিতে পড়ে গেলে তাকে লাঠিপেটা করা হয়। পরে তার দেহের ওপরে লাফিয়ে পড়েন সরকারি ক্যামেরাম্যান। ওই ব্যক্তি মারা গিয়েছেন। শুক্রবার জানা যায়, তাঁর নাম মইনুল ইসলাম। ৩০ বছর বয়সী মইনুল ঢোলপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। মইনুল তিনটি শিশুসন্তানের বাবা ছিলেন। তাঁর বাড়িতে আছেন বয়স্ক বাবা-মা। তিনি সবজির চাষ করে জীবিকা অর্জন করতেন। সরকারের বক্তব্য, যে জমিতে তিনি চাষ করতেন, তা তাঁর নিজের নয়। মইনুলের বাবা এদিন বলেন, ‘তারা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘আমরা কি বাংলাদেশি? তাহলে আমাদের ফেরত পাঠিয়ে দিক।’ এর আগে সোমবার অসমের ঢোলপুর থেকে ৮০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়। রাজ্যে কৃষি প্রকল্পের জন্য ৪৫০০ বিঘা জমি পুনরুদ্ধার করতে চাইছে সরকার। এদিন পুলিশ জানায়, দরং জেলায় উচ্ছেদ করতে গেলে স্থানীয় মানুষ তাদের দিকে পাথর ছোড়ে। বাধ্য হয়ে তাদের বলপ্রয়োগ করতে হয়।
পুলিশ সম্প্রতি চারটি এলাকা থেকে জবরদখলকারী উচ্ছেদ করেছে। তার মধ্যে আছে গরুখুটি এবং ঢোলপুর ১, ২ ও ৩ এলাকা। মইনুল হক মারা যান ঢোলপুর ৩ অঞ্চলে। বুধবার রাতে ওই গ্রামের বাসিন্দাদের উচ্ছেদের নোটিশ দেওয়া হয়। উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয় বৃহস্পতিবার সকালে। বৃহস্পতিবার পুলিশ সুপার সুকান্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, ‘ন’জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। দুই সাধারণ মানুষও আহত হয়েছিলেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’ ঘটনাস্থলে এসপি উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদ অভিযান শেষ করতে পারিনি। এখনকার মতো আমরা ফিরে এসেছি।’ জনতার ওপরে পুলিশের গুলি চালানো নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘বিরাট এলাকা জুড়ে উচ্ছেদ অভিযান চলছিল। আমি অন্যদিকে ছিলাম। পরে খতিয়ে দেখব ঠিক কী হয়েছিল।’ দ্য ওয়াল ব্যুরো