ইস্ট ওয়েস্ট করিডোর এনএইচ-২৭ মহাসড়ক নির্মাণ নিয়ে এবার ক্ষোভ অসমের ডিমা হাসাও জেলার জনগণের। আসলে কবে নাগাদ সরকার এই পথ নির্মাণে সক্ষম হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন পাহাড়বাসী। কারণ এই পথ নির্মাণের নামে অনেক নাটক রচনা হয়েছে। তবে আর নয়।
কেন্দ্রের বর্তমান নরেন্দ্র মোদী সরকারের দ্বিতীয় কার্যকালের ইতিমধ্যে দুই বছর সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে পাহাড় বরাকের একমাত্র লাইফ লাইন তথা অন্যতম পথ যোগাযোগ ব্যবস্থার কিঞ্চিত্ উন্নয়ন হয়নি। বরং চরম অবনতি হয়েছে। জাটিঙ্গা- নেরিমবাংলো এবং জাটিঙ্গা- হারাঙ্গাজাও সামান্য ৪৯ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ নিয়ে দশকজোড়া যমের যন্ত্রনা ভোগ করছেন পাহাড় বরাকের সাধারণ জনগণ।
এদিকে হারাঙ্গাজাও থেকে বালাচড়া ২৫ কিলোমিটার পথ নির্মাণ কাজ নানা অজুহাতে অগ্রসর হচ্ছে না। কিন্তু এক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের কোনো হেলদোল নেই। ওই ২৫ কিলোমিটার নির্মাণ কাজ ন্যাশনাল হাইওয়েজ অ্যাণ্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল)।
জাটিঙ্গা-হারাঙ্গাজাও এবং জাটিঙ্গা- নেরিমবাংলো ৪৯ কিলোমিটার পথ ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইণ্ডিয়া (নাহাই)র অধীনে হচ্ছে। কিন্তু বলা বাহুল্য গত এক দশকে পথ নির্মাণে ব্যর্থ হওয়ার বিপরীতে পথ সচল রাখতে গিয়ে নাহাই নিজেদের অক্ষমতার পরিচয় তুলে ধরেছেন। সড়কের মেরামত তথা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে রত্না ইনফ্রা। কাজ করছে শিলচরের লক্ষ্ণী মোটর্স। কিন্তু সড়কের হাল ফিরেনি। জাটিঙ্গার নিউ লেইকুল গ্রামের কাছের পথের অবস্থা আজও বেহাল। তাছাড়া লক্ষ্ণীর নিম্নমানের কাজের জন্য হারাঙ্গাজাও অংশ বেহাল।
অথচ কাজ করতে ব্যর্থ রত্না ইনফ্রা বা লক্ষ্ণীকে ব্ল্যাক লিস্টেড করা হচ্ছে না। এই মুহূর্তে জাটিঙ্গা-হারাঙ্গাজাওর ন্যায় জাটিঙ্গা- নেরিমবাংলো পথ। এদিকে জাটিঙ্গা- নেরিমবাংলো পথের অবস্থা অধিক শোচনীয় হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জনগণ। কিন্তু নাহাই নির্বাক। গত প্রায় দেড় দশক ধরে জাটিঙ্গা-হারাঙ্গাজাও পঁচিশ কিঃমিঃ মহাসড়ক নির্মাণ এবং পথ রক্ষণাবেক্ষণের নামে সরকারী কোষাগারের বেশ কয়েকশো কোটি টাকা গচ্চা গেছে। কিন্তু বাস্তবে সড়কের চেহারার পরিবর্তন হয়নি।
প্রকৃতার্থে পার্বত্য স্বশাসিত জেলায় মহাসড়ক নির্মাণের নামে বড় ধরনের দুর্নীতি বাসা করেছে। আর এতেই বাহানা বাজি আশ্রয় নিয়েছে। অথচ এর আগে নাহাইর সহজ সরল বাহানা ছিল যে ফরেষ্ট ক্লিয়ারেন্স বা জমি অধিগ্রহণ সমস্যা ইত্যাদি। তাছাড়া ঠিকাদারি সংস্থার অযুহাত ছিল আইন শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা ইত্যাদি। কিন্তু আজকে এসব কিছুই নেই। নাহাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পথ নির্মাণ নিয়ে কথা বলতে গেলে শুনানো হয়েছে এবং আজও হচ্ছে যে নতুন ডিপিআরে জাপানিজ প্রযুক্তিতে ইস্ট ওয়েস্ট করিডোর নির্মাণ হবে।
২০১৭ সাল থেকে একই রেকর্ড প্লে হয়েছে এবং আজও ওই গান প্লে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ২০২১ সাল প্রায় শেষ। তাহলে কবে হচ্ছে নতুন ডিপিআরে পথ নির্মাণ কাজ ? মাইবাঙের নেরিমবাংলো থেকে হারাঙ্গাজাওয়ের বড় নারায়ণপুর পর্যন্ত ৪৯ কিলোমিটার পথ নির্মাণ এই মুহূর্তে পাহাড় বরাকের যোগাযোগে বড় বাধা। কারণ হারাঙ্গাজাও-বালাচড়ার কাজ চলছে। ২০২৫ সালের মধ্যে হলেও পথ নির্মাণ হবে। কিন্তু পাহাড়ের ৪৯ কিলোমিটার নিয়ে নাহাই বা সরকারের টালবাহানার আসল রহস্য কি ? প্রশ্ন ডিমা হাসাও জেলার সচেতন মহলের।