গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৫০ হাজার মানুষ আহত হয়েছে। এছাড়া ১৮ হাজারের বেশি নিহত হয়েছে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মুনির আল-বারশ এই তথ্য জানিয়েছেন। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৫০ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত আট হাজার মানুষের অবস্থা গুরুতর। তাদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু মাত্র ৪২২ জনকে বাইরে নেয়া গেছে। অন্যদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়নি। এছাড়া আরো ১৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর গাজা যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর থেকে প্রতিদিন পশ্চিমতীরে অভিযান চালায় ইসরাইল। সেখান থেকে এখন পর্যন্ত মোট ৩ হাজার ৩৬৫ ফিলিস্তিনিকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া আরো ২৭৫ জনকে হত্যা করা হয়।
এদিকে, গাজা যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১৪৭ ইসরাইলি নিহত ও ৮ হাজার ৭৩০ জন আহত হয়েছে।
অপরদিকে, জাতিসঙ্ঘের মতে, ভয়াবহ চেহারায় পরিণত হয়েছে গাজা উপত্যকা। আরো সাহায্যের প্রয়োজন সেখানে। যত দিন যাচ্ছে গাজায় পরিস্থিতি ততই ভয়াবহ হচ্ছে।
জাতিসঙ্ঘের প্রধান আন্তনিও গুতেরেস বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি প্রমাণ করে জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ প্যারালাইসড হয়ে পড়েছে।’
ইসরাইল জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার ২৫০টি জায়গায় তারা আক্রমণ চালিয়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু সুড়ঙ্গও আছে।
ইসরাইল এবং মিশর দু’দিক থেকেই গাজা উপত্যকা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অতি সামান্য মানবিক সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে সেখানে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার এক্সিকিউটিভ বোর্ড জানিয়েছে, তাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে গাজায় আরো মানবিক সাহায্য পাঠাতে হবে। এখন যে সাহায্য পৌঁছাচ্ছে, তা নিতান্তই কম বলে তাদের দাবি।
আফগানিস্তান, কাতার, ইয়েমেন এবং মরোক্কো এই সিদ্ধান্তের বয়ান তৈরি করেছে বলে জানা গেছে। সিদ্ধান্তে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর নজর দেয়া হয়েছে। এক, গাজা স্ট্রিপে মেডিক্যাল-কর্মীদের ওপর আক্রমণ চালানো যাবে না এবং দুই, নতুন করে হাসপাতাল গড়ার জন্য দ্রুত টাকা পাঠাতে হবে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান জানিয়েছেন, গত দু’মাসের মধ্যে এই প্রথম সর্বসম্মতিক্রমে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো।
ক্যানাডা অবশ্য বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। তাদের বক্তব্য, এটি একটি আপসমূলক সিদ্ধান্ত। হামাসের বিষয়ে কোনো মন্তব্যই করা হয়নি সিদ্ধান্তে। আরো সরাসরি এর বিরোধিতা করেছে অস্ট্রেলিয়া। তাদের বক্তব্য, ৭ অক্টোবরের কোনো কথাই উল্লেখ করা হয়নি সিদ্ধান্তে। অথচ ৭ অক্টোবর হামাসের কাজের পরিপ্রেক্ষিতেই এই গোটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এবিষয়ে এখনো পর্যন্ত বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তরফে কোনো উত্তর দেয়া হয়নি।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার হামাস নেতাদের উদ্দেশে জানিয়েছেন, তাদের এবার আত্মসমর্পণ করা উচিত। তার দাবি, ‘গত এক সপ্তাহে বেশ কিছু হামাস সদস্য ইসরাইলের বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করেছে।’
তিনি জানান, এই লড়াই আসলে হামাসকে শেষ করার লড়াই।