আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইসরায়েল আট মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় আক্রমণ চালিয়ে আসছে, এতে ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এছাড়া ২০ হাজারেরও বেশি শিশু নিখোঁজ রয়েছে।
আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন এই তথ্য প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি জানায়, গাজায় ইসরায়েলের হামলার ফলে ২০ হাজারেরও বেশি শিশু নিখোঁজ হয়েছে। অনেকে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে, কেউ কেউ আটক হয়েছে, আবার অনেকের মরদেহ অচিহ্নিত কবরে সমাহিত করা হয়েছে। অন্তত ১৭ হাজার শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন।
সেভ দ্য চিলড্রেন জানায়, হামলার কারণে গাজায় তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আনুমানিক ৪ হাজার শিশু ধ্বংসস্তূপের নিচে রয়েছে এবং গণকবরেও অনেকে সমাহিত।
সংস্থাটি জানায়, কিছু শিশুকে জোরপূর্বক গুম করা হয়েছে এবং গাজা থেকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। তাদের পরিবারের কাছে তাদের অবস্থান অজানা।
মিডল ইস্টের সেভ দ্য চিলড্রেনস-এর রিজিওনাল ডিরেক্টর জেরেমি স্টোনার বলেন, পরিবারগুলো তাদের প্রিয়জনের অবস্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন। ধ্বংসস্তূপ বা গণকবর খুঁড়ে সন্তানের মরদেহ খুঁজে বের করা কোনো অভিভাবকের কাজ হতে পারে না। যুদ্ধক্ষেত্রে কোনো শিশুর একা থাকা উচিত নয়।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজায় অবিরাম হামলা চালাচ্ছে, এতে হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজারো ভবন ধ্বংস হয়েছে।
ইসরায়েলের এই আগ্রাসনে ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এই আগ্রাসন গাজায় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।
ইসরায়েলের হামলার ফলে ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। খাদ্য, পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটে গাজা এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থায় রয়েছে। এই আক্রমণে গাজার ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়েছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল তার আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।