হারলেই বাংলাদেশকে বিদায় নিতে হত টি ২০ বিশ্বকাপ থেকে। প্রথম রাউন্ডের গ্রুপ বি-র ম্যাচে স্কটল্যান্ড পাপুয়া নিউ গিনিকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পাওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কেন না, প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে স্কটল্যান্ড হারিয়েছিল, ওমান পাপুয়া নিউ গিনিকে। তবে ওমান ক্রিকেট আকাদেমির মাঠে ওমানের বিরুদ্ধে ২৬ রানে গুরুত্বপূর্ণ জয় পেয়ে টি ২০ বিশ্বকাপে টিকে রইল বাংলাদেশ। ডু অর ডাই ম্যাচে মাহমুদুল্লাহর অধিনায়কত্ব প্রশংসা কুড়িয়ে নিল ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। বাংলাদেশের ১৫৩ রানের জবাবে ওমান থামল ৯ উইকেটে ১২৭ রানে। মুস্তাফিজুর রহমান চার উইকেট পেলেন চার ওভারে ৩৬ রান খরচ করে। ব্যাট হাতে ৪২ রান করার পর বল হাতে তিন উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা শাকিব আল হাসান।
আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ। সৌম্য সরকারের পরিবর্তে প্রথম একাদশে এসে দলের হয়ে সর্বাধিক ৬৪ রান করলেন মহম্মদ নঈম। তাঁর ৫০ বলের ইনিংস সাজানো ৩টি চার ও চারটি ছক্কা দিয়ে। ৪.৩ ওভারে ২১ রানের মধ্যে বাংলাদেশের দুই উইকেট পড়ে গিয়েছিল। লিটন দাস ৬ ও মেহেদি হাসান শূন্য রানে ফেরেন।
এরপর দলের হাল ধরেন শাকিব আল হাসান ও নঈম। ১৩.৩ ওভারে শাকিব আউট হন দলের ১০১ রানের মাথায়। ২৯ বলে ৪২ রান করেন শাকিব। তবে ডেথ ওভারে দ্রুত বেশ কয়েকটি উইকেট হারানোয় ২০ ওভারে ১৫৩ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ ৫ ওভারে ৪১ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। বিলাল খান ও ফৈয়াজ বাট নেন তিনটি করে উইকেট। কলিমুল্লাহর ঝুলিতে গিয়েছে ২টি উইকেট। এদিনও বাংলাদেশি সমর্থকরা ওপেনার তামিম ইকবালের অভাব অনুভব করে ব্যানার টাঙিয়েছিলেন গ্যালারিতে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের টি ২০ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ বৃষ্টিবিঘ্নিত যে ম্যাচে ওমানকে হারিয়েছিল সেই ম্যাচে শতরান করেছিলেন তামিম।
জবাবে খেলতে নেমে পাওয়ারপ্লেতে ৬ ওভারের শেষে ওমানের রান ছিল ২ উইকেটে ৪৭। ওপেনার আকিব ইলিয়াস ৬ ও কাশ্যপ প্রজাপতি ২১ রান করে মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হন। সেখান থেকে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন যতীন্দর সিং ও অধিনায়ক জিশান মাকসুদ। মাঝের ওভারে মেহেদি হাসান, শাকিব আল হাসানরা চাপে ফেলেন ওমানের ব্যাটারদের। ১১.২ ওভারে মেহেদির বলে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন জিশান, করেন ১২। ৮১ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর ৯০ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় ওমান। ৩৩ বলে ৪০ রান করেন শাকিবের শিকার হন যতীন্দর, দুরন্ত ক্যাচ ধরেন লিটন দাস। যতীন্দর ফেরার পর থেকেই ওমান লক্ষ্যের দিকে এগোতে গিয়ে হোঁচট খেতে শুরু করে,বাড়তে থাকে আস্কিং রেট। ৭ থেকে ১৫ ওভারের মধ্যে ওমান ৫৩ রান করতে গিয়ে ২ উইকেট হারায়। ১৫.৩ ওভারে সন্দীপ গৌড় চার রান করে মহম্মদ সৈফুদ্দিনের বলে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ১৬.৩ ওভারে আয়ান খান ৯ রান করে শাকিব আল হাসানের দ্বিতীয় শিকার হন। পরের বলেই নাসিম খুশিকে আউট করেন টি ২০ আন্তর্জাতিকে সর্বাধিক উইকেটশিকারী শাকিব। শাকিব ৪ ওভারে ২৮ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট পেলেন। মেহেদি চার ওভারে ১৪ রান খরচ করে নেন ১ উইকেট। ১৭.৪ ওভারে কলিমুল্লাহ মুস্তাফিজুরের তৃতীয় শিকার হন উইকেটকিপার নুরুল হাসানের অনবদ্য ক্যাচে। এই ওভারেরই শেষ বলে ফয়াজ বাট মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। ১৫ বলে মাত্র ১১ রানের ব্যবধানে শেষ ৫ উইকেট হারায় ওমান।
বাংলাদেশ শেষ ম্যাচ খেলবে পাপুয়া নিউ গিনির বিরুদ্ধে। ওমান স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে। পাপুয়া নিউ গিনি দুটি ম্যাচেই হেরেছে, স্কটল্যান্ড জিতেছে দুটি ম্যাচে। বাংলাদেশ যদি পাপুয়া নিউ গিনিকে হারিয়ে দেয় এবং স্কটল্যান্ড ওমানকে হারায় তাহলে স্কটল্যান্ড ও বাংলাদেশ চলে যাবে সুপার টুয়েলভে। ওমান শেষ ম্যাচে জিতলে গুরুত্বপূর্ণ হবে নেট রান রেট।