সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রয়াত গায়ক এন্ড্রু কিশোরের স্ত্রী লিপিকা এন্ড্রু। লিপিকা বলেন, ভেবেছিলাম আর কিছু লিখব না। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন খবর দেখে না লিখে থাকতে পারলাম না। তিনি বলেন, যাদেরকে কিশোর স্নেহ করত বা শ্রদ্ধা করত, তারা কী সুন্দর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কথা বলেছে বা লিখেছে।
রবিবার রাতে ‘প্লেব্যাক সম্রাটের’ ফেইসবুক অ্যাকাউন্টে দীর্ঘ পোস্ট দেন লিপিকা। সঙ্গে যোগ করেন শিল্পীর শেষ জীবনের একটি ভিডিও।
নিচে লিপিকার পোস্টটি তুলে ধরা হলো—
“আমি লিপিকা, ভেবেছিলাম আর কিছু লিখব না। কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন খবর দেখে না লিখে থাকতে পারলাম না। কিশোর বেঁচে থাকতে যারা কিছু বলার সাহস পায়নি আজ তারা অবলীলায় যা ইচ্ছা তাই বলছে। যাদেরকে কিশোর স্নেহ করত বা শ্রদ্ধা করত, তারা কী সুন্দর বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কথা বলেছে বা লিখেছে।
যেমন – ১. আগের দিন কফিন বানাতে বলল ২. মায়ের পাশে সমাধি হতে চাই ৩. বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল ৪. মুক্তিযোদ্ধাদের গান শোনাত ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর ইউটিউব এ তো ভুয়া খবরের ছড়াছড়ি। বিয়ে, ছেলে, মেয়ে, বাড়ি, গাড়ি, টাকা, সম্পত্তি নিয়ে মনগড়া গল্পের খবর আর ভিডিওর প্রতিযোগিতা চলছে যেন।
খুব অবাক হয়েছি। মিথ্যা খবর বানিয়ে কার কী লাভ হচ্ছে ঠিক বুঝতে পারছি না। অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান নাকি সামাজিকভাবে লাভবান – ঠিক জানি না।
কিশোরের কোন ছাত্র বা শিষ্য ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে একজন নিজেকে শিষ্য বলে প্রচার করতে লাগলো। কিশোর ফোন করে তাকে বকা দিয়েছিল এবং বলেছিল কথাটা না লিখতে, কিন্তু সে সেটা শোনেনি। কিশোর খুবই কষ্ট পেয়েছিল এবং অসন্তুষ্ট ছিল।
সে নিজেকে শিষ্য পরিচয় দিয়ে প্রতিনিয়ত ইউটিউব এ ভুয়া ভিডিও ক্লিপ আর খবর দিয়ে চলেছে। মানুষজন এই সব ভুয়া খবর কতটুকু বিশ্বাস করছে, সেটাও বোঝার উপায় নাই।
কিশোর একজন সত্যিকারের শিল্পী। একজন শিল্পীর যে গুনগুলো থাকা প্রয়োজন তা প্রায় সবগুলোই ওর মধ্যে ছিল।
সিঙ্গাপুরে কিশোরের চিকিৎসা খরচ হয়েছিল প্রায় পৌনে তিন কোটি টাকা। যার ২৪% দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার, ৩২% আমাদের পরিবারবর্গ ও আত্মীয়স্বজন, আর সবচেয়ে বেশি ৪৪% দিয়েছিল দেশে ও বিদেশের অগণিত শিল্পী, ভক্ত, অনুরাগী- যারা অন্তর থেকে চেয়েছিল কিশোর সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসুক। কিশোরের একটা বড় আত্মতৃপ্তি ছিল, সে আমাকে বলেছিল, আমি এত অসুস্থ না হলে কোনদিন বুঝতেই পারতাম না যে, মানুষ আমাকে এত ভালোবাসে। আমার জন্য এভাবে দুইহাত বাড়িয়ে দিবে এবং সে দেশে ফিরে সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাবে বলে অনেক কিছু ভেবে রেখেছিল। ভাবনাগুলো ভাবনাই থেকে গেল।
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। পরিশেষে, কিশোরের মুখের কথা দিয়ে শেষ করবো।”
৬ জুলাই রাজশাহীতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এন্ড্রু কিশোর। এ শিল্পী কয়েক বছর ধরে ক্যানসারে ভুগছিলেন। বিদেশেও চিকিৎসা নেন তিনি।





