শফিকুল ইসলাম কাজল: ত্রিপুরা রাজ্যের খোয়াই থানাধীন কারেঙ্গিছড়া এলাকায় স্থানীয়দের হামলায় তিন বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) মধ্যরাতে এ তথ্য জানায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিজিবি ৫৫ বিজিবির হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন জানায়, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার সীমান্তবর্তী বিদ্যাবিল এলাকার তিন বাংলাদেশি গত ২-৩ দিন আগে সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের কারেঙ্গিছড়া নামক স্থানে প্রবেশ করেন। স্থানটি ৭০ ইন্ডিয়ান সীমান্তরক্ষী বিএসএফ ব্যাটালিয়নের আওতাধীন সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে প্রায় ৪-৫ কিলোমিটার ইন্ডিয়ার অভ্যন্তরে।
প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, নিহত তিনজনের বাড়ি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার সোনাচং বাজার এলাকায়। তাদের পরিচয় সুনিশ্চিত করতে বিজিবি ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন তদন্ত চালাচ্ছে। নিহতরা গরু পাচারের উদ্দেশ্যে প্রবেশ করেছিলেন বলে ধারণা করে রাতের অন্ধকারে স্থানীয় বাসিন্দারা সঙ্ঘবদ্ধভাবে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। বর্তমানে নিহতদের মরদেহ ইন্ডিয়ার সাম্পাহার থানায় রয়েছে।
এ ঘটনায় বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং ঘটনার সত্যতা যাচাই ও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখার পাশাপাশি এ ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ত্রিপুরায় একদল উচ্ছৃঙ্খল জনতা (মব) তিন বাংলাদেশিকে নির্মমভাবে প্রহার ও হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই জঘন্য কর্মকাণ্ড অগ্রহণযোগ্য। এটা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের গুরুতর লঙ্ঘন। বাংলাদেশ সরকার এই দুঃখজনক ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ভারত সরকারকে এই ঘটনার বিষয়ে অবিলম্বে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত করার আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি এ ধরনের অমানবিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ভারতকে আন্তরিক পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে বাংলাদেশ। দোষীদের শনাক্ত করে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার জোর দিয়ে বলতে চায়, জাতীয়তানির্বিশেষে যেকোনো ব্যক্তি অসাবধানবশত সীমান্তের যেকোনো পাশে যেতে পারে; কিন্তু এ অবস্থায় তাঁর মানবাধিকারের পূর্ণ সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার আছে।