আগরতলা (ত্রিপুরা): বাঙালি উৎসবপাগল। সেজন্য বলা হয়ে থাকে, বারো মাসে তেরো পার্বণ।
অবশ্য বিশ্বায়নের যুগে এখন শত রকমের দিবস উদযাপন হয়। মাদারস ডে, ফাদার্স ডে, গার্লস ডে, ওমেন্স ডে, চকোলেট ডে, রোজ ডে, প্রপোজ ডে, ভ্যালেন্টাইনস ডে— আরও কত কী। যেখানে সারা বিশ্ব এসব দিবস নিয়ে মাতোয়ারা, এমন অবস্থায় বাঙালি কম যায়?
তাই তো যখন যে দিবস সামনে আসে তাতেই উচ্ছ্বাসে ভাসে বাঙালি সমাজ। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সরস্বতী পূজা, বাংলা বসন্তকালের প্রথম দিন, সেই সঙ্গে আবার ভ্যালেন্টাইনস ডে বা ভালোবাসা দিবস। তাই অন্যান্য জায়গার মতো ত্রিপুরার আগরতলা শহরেও এদিন পূজা, বসন্তবরণ আর ভালোবাসা দিবস একসঙ্গে উদযাপন করেছে বাঙালি তরুণ-তরুণীরা। দিনটিকে ঘিরে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে সবার বাঁধনহারা উচ্ছ্বাস দেখা যায়।
দিনটির প্রথমার্ধ সবাই ভাগ্যদেবী সরস্বতীর পূজায় মগ্ন থাকলেও দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই উৎসবের রঙ বদলে যায়। দুপুরবেলা যেখানে বিভিন্ন স্কুল কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে রং-বেরঙের শাড়ি এবং পাঞ্জাবি পরা তরুণ-তরুণীদের ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়, বিকেল হতেই এই ভিড় চলে আসে আগরতলার শকুন্তলা রোড এলাকার আশেপাশে।
রাজধানীর ফুলের বাজার হিসেবে পরিচিত শকুন্তলা রোড। এখানে দোকানগুলিতে বছরভর মৌসুমী ফুল থেকে শুরু করে গোলাপসহ নানা জাতের ফুল থাকে। ফলে ঘড়ির কাঁটা দুপুর গড়িয়ে বিকেলে যেতেই ভালোবাসার মানুষের জন্য পছন্দের ফুল কিনতে ভিড় জমতে থাকে শকুন্তলা রোডে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে ভিড়। এখানে ফুল কিনতে আসা তরুণ-তরুণীরা ভালোবাসা দিবস নিয়ে তাদের অনুভূতির কথা জানান। অনেকেই আবার দোকান থেকে ফুল কিনে সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষী করে ভালোবাসার মানুষের হাতে তুলে দেন ফুলের তোড়া ।
বসন্তের প্রথম দিন আর ভালোবাসার বিশেষ এই দিনের কথা মাথায় রেখে দোকানিরাও নানা আকার ও নানা রঙের গোলাপসহ বাহারি ফুলের সমাহার সাজিয়ে বসেন। ফুলের বিক্রি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়। কেউ বলেছেন, বিক্রি ভালো; আবার কারও মতে আশানুরূপ বিক্রি হয়নি।
তবে ফুল বিক্রি যেমনই হোক, একদিনে তিন উৎসবে মেতেছে বাঙালির নতুন প্রজন্ম। সেজন্য এদিন আগরতলা যেন উৎসবের নগরে রূপ নেয়।