পশ্চিমবঙ্গ নিউজ ডেস্ক: টানা ২৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে স্কুল শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে রাজ্য সরকারের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
শনিবার বেলা ১০ টার দিকে তাকে কলকাতার নাকতলা এলাকার নিজ বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করে ভারতের অর্থনৈতিক গোয়েন্দা ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ পার্থের নাকতলার বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যায় ইডির একটি দল। সারা দিন ও রাতভর মন্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ইডির দাবি, দক্ষিণ কলকাতায় পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে প্রায় ২১ কোটি টাকা নগদ পাওয়া গিয়েছে। দুবস্তায় ভরা ছিল ২০০০ এবং ৫০০ টাকার নোটের বান্ডিল। ওই বাড়ি থেকে ২০টি মোবাইল ফোনও পাওয়া গিয়েছে বলে ইডির দাবি। যে নগদ উদ্ধার হয়েছে, তা ব্যাঙ্ককর্মীদের দিয়ে যন্ত্রের সাহায্যে শনিবার সকাল পর্যন্ত গোনার কাজ চলেছে।
ইডি সূত্রের খবর, ওই টাকা স্কুলে বেআইনি নিয়োগে নেয়া ঘুষের অংশ বলেই প্রাথমিক ভাবে মনে করছে তারা।
ইডির দাবি, প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টে ও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে শিক্ষাসচিব মণীশ জৈন জানিয়েছেন, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশেই সমস্ত নিয়োগ করা হয়েছিল। উনিই নিয়োগের ক্ষেত্রে মূল নিয়ন্ত্রক ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে নথি সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ করে তা যাচাই করা হয় বলে ইডি সূত্রের খবর।
অর্পিতার ফ্ল্যাটে তল্লাশি চলাকালীন ‘টাকার পাহাড়’ আবিষ্কার করেন তদন্তকারীরা। সেই টাকা গুনতে ব্যাংককর্মীদের সাহায্য নেয়া হয়। আনা হয় টাকা গণনার যন্ত্র। সেই টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য ট্রাঙ্ক ভর্তি ট্রাক নিয়ে আসে রিজার্ভ ব্যাংক। উদ্ধার হওয়া টাকা ট্রাঙ্কে বোঝাই করে তোলা হয় ট্রাকে। ইডি ওই বিপুল অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছে। ট্রাকে ট্রাঙ্কগুলিতে নির্দিষ্ট নম্বর দেয়া ছিল। হিসাবে সুবিধার জন্য ৫০০ এবং দু’হাজার টাকার নোটের জন্য আলাদা আলাদা ট্রাঙ্ক রয়েছে। ট্রাকে ছিল প্রায় ৪০টি ট্রাঙ্ক।
পাশাপাশি অর্পিতার ওই ফ্ল্যাটে আরও সম্পত্তির হদিস পাওয়া গেছে। বিভিন্ন জায়গায় সম্পত্তির একাধিক নথি উদ্ধার হয়েছে সেখান থেকে। এ ছাড়াও ৫৪ লাখ টাকার বিদেশি মুদ্রাও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অর্পিতার ওই ফ্ল্যাটে স্কুল শিক্ষা দপ্তরেরও কিছু নথি পাওয়া গেছে। এমনকি টাকার স্তূপের মধ্যেই পাওয়া গেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের খাম! ইডি সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। সূত্র: আনন্দবাজার