আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা আল কাসসাম ব্রিগেডের প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে টার্গেট করে হামলা করার দাবি করেছে ইসরাইল। হামাস জানিয়েছে, এতে দেইফ নিহত হননি। তিনি সুস্থভাবেই আছেন। তবে এই হামলায় অন্তত ৯০ জন নিহত এবং ৩০০ জন আহত হয়েছে।
যে এলাকায় ইসরাইল হামলা চালিয়েছে, সেটি তাদেরই ঘোষিত ’সেইফ জোন।’ সেখানে ৮০ হাজার বেসামরিক নাগরিক বাস করে। কিন্তু ইসরাইল কারো জীবনের তোয়াক্কা করেনি। ভয়াবহ হামলা চালায়। যুদ্ধবিমান, ড্রোন দিয়ে সেখানে ভয়াবহ ‘পাঁচটি বোমা ও পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র’ নিক্ষেপ করে। পুরো এলাকাটি পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেয়।
গাজার দুজনের ওপর বিশেষভাবে ক্রুদ্ধ ইসরাইল। একজন হলেন ইয়াহিয়া সিনওয়ার। তিনি হামাসের গাজা প্রধান। অপরজন হলেন মোহাম্মদ দেইফ। ১০ মাস ধরে তাদের পেছনে ছুটতে ইসরাইল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কোনো ক্ষতি করতে পারেনি তারা। ইসরাইল মনে করছে, এদুজনের পরিকল্পনাতেই ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভেতরে হামলা হয়। ইসরাইলের ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। ইসরাইলের নিরাপত্তা নিয়েই বড় ধরনের প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে এই হামলা।
ইসরাইল এখন পর্যন্ত হামাসের শীর্ষ যে নেতাকে হত্যা করতে পেরেছে, তিনি হলেন মারওয়ান ইসা। গত মার্চে ইসরাইলি বিমান হামলায় তিনি নিহত হন। তিনি ছিলেন দেইফের ডেপুটি। এছাড়া হামাসের উপ-রাজনৈতিক নেতা সালাহ আল-আরোরি গত জানুয়ারিতে বৈরুতে এক ইসরাইলি বিমান হামলায় নিহত হন।
তবে দেইফ এখন থেকে নয়, সেই ১৯৯৫ সাল থেকে ইসরাইলের টার্গেট হয়ে রয়েছে। তিনি ১৯৯০ ও ২০০০-এর দশকে ইসরাইলে বেশ কয়েকটি হামলা পরিচালনা করেছেন।
শনিবারের হামলার আগে দেইফকে হত্যার জন্য হামাস অন্তত সাতটি আক্রমণ পরিচালনা করেছে। এসব হামলার কোনো কোনোটিতে তিনি আহত হয়েছেন, কোনো কোনোটিতে তার পরিবার সদস্যরা নিহত হয়েছেন।
তার ওপর সর্বশেষ বড় হামলাটি হয় ২০২১ সালের মে মাসে। ওই সময় ১১ দিনের যুদ্ধ হয় ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে।
২০১৪ সালে গাজা যুদ্ধের সময় দেইফের স্ত্রী, নবজাতক ছেলে এবং ৩ বছরের এক মেয়ে নিহত হন।
এছাড়া ২০০১, ২০০২, ২০০৩, ২০০৬ সালেও দেইফকে হত্যা করার চেষ্ট করে ইসরাইল। বলা হয়, ২০০৬ সালে তিনি তার পা হারান। কিন্তু এই দাবি নাকচ করে দেয়া হয়।
গত ডিসেম্বরে ইসরাইলি বাহিনী তাকে এবং হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যার জন্য বিপুল অর্থ পুরস্কার ঘোষণা করে।
ঘোষণা অনুযায়ী, ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করতে পারলে চার লাখ ডলার, তার ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার (তিনি হামাসের দক্ষিণ ব্রিগেডের প্রধান) জন্য তিন লাখ ডলার, সালামার জন্য দুই লাখ ডলার, দেইফের জন্য এক লাখ ডলার।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য