- পূর্ত দফতরের কর্তারা জানান, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে ১৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে। চলতি আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে মার্চে আরও ৩১টি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। আরও ৩৪টি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে।
পশ্চিমবঙ্গ নিউজ ডেস্ক: আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার উপরে সদ্য সমাপ্ত বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে (বিজিবিএস) শিল্পমহলকে সড়ক পরিকাঠামো বিষয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, এ বার কয়েক বছর আগে থেকে হাতে থাকা সড়ক পরিকাঠামোর কাজগুলি শেষ করার জন্য সময়ের লক্ষ্য বেঁধে দিল পূর্ত দফতর। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, চলতি বছর শেষের আগেই জেলা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে দফায় দফায় সেই সব সড়ক প্রকল্প উদ্বোধন করানোর পরিকল্পনা আছে প্রশাসনের।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে পূর্ত দফতরের অধীনস্থ দু’টি ডিরেক্টরেটের (পূর্ত এবং সড়ক) হাতে থাকা বেশিরভাগ সড়কের কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে সড়ক পরিকাঠামো মজবুত করা, সম্প্রসারণ, সংস্কার এবং নতুন সড়ক তৈরি হচ্ছে। রয়েছে নতুন সেতু তৈরির কাজও। পূর্ত ডিরেক্টরেটের অধীনে থাকা প্রায় ৭৬৩ কিলোমিটার সড়কে এই ধরনের কাজ করার জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ১৯৫৬ কোটি টাকা।
পূর্ত দফতরের কর্তারা জানান, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে ১৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে। চলতি আর্থিক বছর শেষ হওয়ার আগে মার্চে আরও ৩১টি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে। আরও ৩৪টি প্রকল্পের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে ডিসেম্বরের মধ্যে। পূর্ত-সড়ক ডিরেক্টরেটের অধীনে আরও প্রায় ৫১৮ কিলোমিটার সড়ক প্রকল্পের কাজে ব্যয় করা হচ্ছে প্রায় ২৭৩৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে সংস্কারের কাজের জন্য ব্যয় হবে প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা। প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “ডিসেম্বর পর্যন্ত সড়ক প্রকল্পগুলিতে খরচের অঙ্ক সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।”
বিজিবিএস-এ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ছ’টি আর্থিক করিডর তৈরি হচ্ছে রাজ্যে। সেগুলি হচ্ছে রঘুনাথপুর-তাজপুর, ডানকুনি-কল্যাণী, ডানকুনি-ঝাড়গ্রাম, ডানকুনি-কোচবিহার, খড়গপুর-মোড়গ্রাম এবং পুরুলিয়ার গুরুটি-কলকাতা। প্রশাসনিক কর্তারা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বারাণসী-কলকাতা, খড়্গপুর-মোড়গ্রাম এবং রক্সৌল-হলদিয়ার আর্থিক করিডর প্রকল্প তৈরি করছেন কেন্দ্রের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (এনএইচএআই)। বারাণসী-কলকাতা আর্থিক করিডরের প্রাথমিক পরিকল্পনা বাড়িয়ে হুগলি নদীর উপরে নতুন একটি সেতুর মাধ্যমে জাতীয় সড়ক ১১৭ বা ডায়মন্ড হারবার রোড পর্যন্ত তা জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর সমান্তরালে পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা অন্যান্য রাস্তাগুলির যথাযথ সংস্কার সম্ভব হলে বৃহৎ পরিকাঠামোগুলিকে একসূত্রে জুড়তে পারে। তা বিনিয়োগকারীদের কাছে আরও বেশি আকর্ষণীয় হবে।
প্রশাসনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “লক্ষ্য রাখা হয়েছে, জাতীয় সড়ক এবং রাজ্য সড়কের মধ্যে সংযোগস্থাপন এবং জেলাগুলির মধ্যে যোগাযোগ সুগম করা। বিশেষ নজর আছে তুলনামূলক ভাবে পিছিয়ে থাকা উত্তরবঙ্গ এবং পশ্চিমাঞ্চলের এলাকাগুলির পরিকাঠামোর দিকেও।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)