কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে গঙ্গাবক্ষে মেট্রো চলবে আর কয়েকদিনের মধ্যেই। সেই প্রস্তুতি প্রায় শেষ। তবে মাটির নিচ দিয়ে কলকাতা মেট্রোরেলের মতো ভারতীয় রেলের প্ল্যাটফর্ম এ প্রথম। আর সেই রেলপথে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে জুড়তে চলেছে সিকিম। পাহাড় ভেদ করে রেল চলাচলে যাত্রীদের জন্য থাকছে অত্যাধুনিক আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন।
উত্তরপূর্ব রেলের সহযোগিতায় পশ্চিমবঙ্গের সেবক রোড থেকে পাহাড়ে ঘেরা সিকিমের রংপোজুড়ে যাচ্ছে পাহাড়ের গভীরে রেলপথের মাধ্যমে। যার জেরে পর্যটকরা দার্জিলিং যাওয়ার জন্য হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে রেলপথে শিলিগুড়ি (এনজিপি-নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন) না নেমে নামতে পারবেন তিস্তা বাজার স্টেশন। সেখান থেকে মাত্র দুই ঘণ্টায় দার্জিলিং পৌঁছে যাওয়া যাবে। পাহাড়ি এ পথে পাড়ি দেওয়ার জন্য নতুন এ রুটে থাকছে অত্যাধুনিক পাতাল স্টেশন।
পাহাড়ি এলাকায় ইতোমধ্যে তৈরি হয়ে গেছে সেই আন্ডারগ্রাউন্ড টানেল। কাজও প্রায় শেষের পথে। টানেল এতটাই বড় করা হয়েছে যেখানে একটি ২৪ বগির ট্রেন দাঁড়াতে পারবে। সেবক-রংপো ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেলপথের মধ্যে ৪১ কিলোমিটারই রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলার মধ্যে। বাকি ৪ কিলোমিটার রয়েছে সিকিমের অধীন। একইসঙ্গে এ পথে রয়েছে ১৪টি টানেল, ২২টি সেতু ও ৫টি স্টেশন। পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা পোক্ত করতে এ পথে রেল যোগাযোগ চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় রেল।
প্রজেক্ট ডিরেক্টর মহেন্দ্র সিং জানিয়েছেন, প্ল্যাটফর্মটি হবে ৬২০ মিটার লম্বা আর টানেল মোট দৈর্ঘ্য ৬৫০ মিটার। ফলে ২৪ কোচের ট্রেন দাঁড়ালেও কোনো সমস্যা হবে না। যাত্রীদের যাতে কোনো অসুবিধা না হয় তাই টানেলের ভেতরে থাকবে ভেন্টিলেশনের যথাযথ ব্যবস্থা। স্টেশন থেকে বাইরে বের হওয়ার রাস্তার কাজ তৈরি হয়ে গেছে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের মধ্যে এ প্রকল্প চালু হয়ে যাবে।
তিনি আরও জানান, এ পথে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন তিস্তা বাজার। এ পাতাল স্টেশন থেকে দার্জিলিং ও গ্যাংটকের আলাদা আলাদা রাস্তা বের করা হয়েছে। পর্যটকদের মধ্যে কলকাতার যাত্রীরা শিলিগুড়িতে না নেমে নামতে পারবেন তিস্তা বাজার স্টেশনে। তারপর সেখান থেকে মাত্র দুই ঘণ্টায় দার্জিলিং পৌঁছে যাওয়া যাবে।
ফলে দেশ-বিদেশের পর্যটকরা উপকৃত হবেন বলে মনে করছে ভারতীয় রেল। এর আগে রেলের জেনারেল ম্যানেজার অংশুল গুপ্ত বলেছেন, সেবক-রংপো রেল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে একদিকে যেমন সিকিমের আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থার উন্নতি হবে তেমনি সিকিমের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।