প্রতারকের খপ্পরে পড়ে প্রায় ৩২ হাজার টাকা খোয়ালেন প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওন। এ ঘটনায় মো. রবিউল ইসলাম (৪১) নামের এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে (ডিএমপি)-এর গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
বুধবার দিবাগত রাত দেড়টায় গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির গোয়েন্দা অফিস কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, প্রতারক প্রয়াত কথা সাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের সহধর্মিণী মেহের আফরোজ শাওনের কাছে ফোন করে নিজেকে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া পরিচয় দিয়ে জানান যে, নুহাশ পল্লীর উন্নয়নের জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে একটি বড় ফান্ড এসেছে। উক্ত ফান্ড বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা আছে। তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন উপ-সচিবের মোবাইল নাম্বার প্রদান করেন এবং উক্ত নাম্বারে যোগাযোগ করতে বলেন।
মেহের আফরোজ শাওন ওই মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে উপ-সচিব পরিচয়ে একজন কথা বলেন এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে আসা ফান্ড ট্রান্সফারের জন্য সরকারি ট্যাক্স বা ফি বাবদ ৩১ হাজার ৮৫০ টাকা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রদান করতে বলেন।
তিনি সরল বিশ্বাসে উক্ত টাকা প্রদান করার পর পূণরায় ওই উপ-সচিবের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে উল্লেখিত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। তখন তিনি প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এ সংক্রান্তে নুহাশ পল্লীর ম্যানেজারের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ১২ মে ২০২২ তারিখে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা রুজু হয়। ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, মামলাটি তদন্তকালে রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার প্রতারক রবিউল ২০১৯ সাল থেকে বিভিন্ন কৌশলে সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম্বার সংগ্রহ করে তাদেরকে সংসদের ডেপুটি স্পিকার কখনো বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সী ও বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের সচিব পরিচয় দিয়ে ফোন করতেন। বিদেশি অনুদান প্রাপ্তির প্রলোভন দেখিয়ে সরকারি ভ্যাট ট্যাক্স ও প্রসেসিং ফি বাবদ মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যেমে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে দিতেন। এভাবে এই প্রতারক শতাধিক মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা রিসোর্টের মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে ডিবির প্রধান বলেন, অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন দিলেই যাচাই না করে কোন লেনদেন করবেন না। কেউ ফোন করলেই সরল বিশ্বাসে টাকা পাঠাবেন না। এই ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় মামলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী মেহের আফরোজ শাওন বলেন, প্রতারক রবিউল ফোন করে এমনভাবে কৌশলে কথা বলেছে যে আমি তার প্রতারণা ধরতে পারিনি। এভাবে যাচাই না করে টাকা পাঠানো আমার ভুল হয়েছে। ধানমন্ডি থানা ও ডিবি সাইবার ক্রাইম বিভাগ যেভাবে আমার অভিযোগ গ্রহণ করে তরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তাতে আমি মুগ্ধ।