যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে ৯০ বছরেরও বেশি সময় ধরে রাখা একটি বইয়ের বাঁধন থেকে মানুষের চামড়া অপসারণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
‘ডেস্টিনিজ অব দ্য সোল’ নামের ঊনবিংশ শতকের বইটি নিয়ে গবেষণা হয়। ২০১৪ সালে জানা যায়, এক নারীর চামড়া দিয়ে বাঁধাই করা এই বই।
বুধবার এক বিবৃতিতে হার্ভার্ড বলেছে, ‘বইটির বাঁধাই অপসারণ করা হয়েছে। বইটির তদারককারীদের অতীতের ব্যর্থতা যা মানুষের মর্যাদাকে আরও আপত্তিকর এবং যার দেহাবশেষ বাঁধাইয়ের জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল তাকে হেয় করেছে।’
বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, তারা ‘এই মানব দেহাবশেষের একটি চূড়ান্ত সম্মানজনক অবস্থান নির্ধারণ করতে ফরাসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাচীনতম কলেজ হিসেবে বিবেচিত হার্ভার্ড ‘এই বিষাদগ্রস্থ গল্পের বইটির প্রতি আগ্রহ জাগিয়েছিল, ২০১৪ সালের আবিষ্কারটিকে ‘নৃতাত্ত্বিক গ্রন্থপঞ্জি, গ্রন্থ সংগ্রাহক এবং নরখাদকদের অনুরাগীদের মধ্যে উদ্দীপক হিসেবে অভিহিত করেছিল।’
হার্ভার্ড ২০১৪ সালের একটি ব্লগ পোস্টে বলেছিল, নৃতাত্ত্বিক গ্রন্থপঞ্জিতে মানুষের ত্বকে বই বাঁধাই করার অভ্যাস একসময় তুলনামূলকভাবে সাধারণ অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল।
ইউনিভার্সিটি বলেছে, ফরাসি লেখক আর্সেন হাউসেয়ের লেখা বইটির প্রথম মালিক বই সংগ্রাহক, চিকিৎসক লুডোভিক বোল্যান্ড সেই সময়ে মানসিকভাবে অসুস্থ এক নারীর শরীর থেকে চামড়া নিয়েছিলেন, যিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি কাজ করতেন।
বোল্যান্ড একটি নোটে হাউসেয়েকে বলেছিলেন, ‘মানুষের আত্মা সম্পর্কে একটি বই মানুষের ত্বকের আবরণ পাওয়ার যোগ্য।’
হার্ভার্ড বিবৃতিতে বলেছে, ‘বইটির সঙ্গে সম্পর্কিত বোল্যান্ডের স্টুয়ার্ডশিপ অনুশীলনগুলো ‘নৈতিক মানগুলোর স্তর পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
এতে বলা হয়, বইটি মানুষের ত্বকে আবদ্ধ ছিল তা নিশ্চিত করার বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের পরে লাইব্রেরি ব্লক পোস্টে বইটি সম্পর্কে ‘একটি চাঞ্চল্যকর, বিষাদগ্রস্ত এবং হাস্যকর টোন ব্যবহার করেছে, যা অনুরূপ আন্তর্জাতিক মিডিয়া কভারেজকে উৎসাহিত করে।’
২০২২ সালে হার্ভার্ড একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যলয়টির বিভিন্ন সংগ্রহে ২০,০০০ টিরও বেশি বইয়ে বাঁধাইয়ে মানুষের দেহাবশেষ শনাক্ত করেছে। এতে কঙ্কাল থেকে দাঁত, চুল এবং হাড়ের টুকরো পর্যন্ত রয়েছে। সূত্র : এএফপি