হাবিবুর রহমান, ঢাকা: বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের ভীড়ে আত্মগোপন করে আসা দুষ্কৃতীদের অপকর্ম এখানেও থেমে নেই। প্রতিদিনই তাদের দস্যিপনায় অতিষ্ঠ রোহিঙ্গাসহ কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা।
শরনার্থী শিবিরের তরুণী-যুবতীদের অপহরণ করে হোটেলে নিয়ে জোর করে দেহব্যবসার পাশাপাশি বিদেশেও পাচার করছে। আধিপত্য বিস্তার আর তোলাবাজি নিয়ে খুন-খারাপি তো নিত্যদিনের ব্যাপার।
কক্সবাজারের টেকনাফের আলিখালী ক্যাম্প থেকে অপহৃত রোহিঙ্গা কিশোর জাহাঙ্গির আলমের (১৬) বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেরত পাঠিয়েছে অপহরণকারীরা। তবে জিম্মি থাকা অপর চারজনের জন্য চাওয়া হয়েছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ।
জাহাঙ্গির আলম টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের আলিখালী ২৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সামসু আলমের ছেলে। তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে আলিখালী ক্যাম্প থেকে অপহরণ করা হয় পাঁচ রোহিঙ্গাকে।
এদের মধ্যে একজন জাহাঙ্গির আলম। অপহৃত অপর চারজন হলেন-একই ক্যাম্পের নুর হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ ইউনুস (৩২), মোহাম্মদ রফিকের ছেলে মোহাম্মদ সুলতান (২৪), আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৬) ও মোহাম্মদ সৈয়দের ছেলে আনোয়ার ইসলাম (১৮)।
ওই ক্যাম্পের কমিউনিটি নেতা (মাঝি) নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার রাতে অস্ত্রধারী দুষ্কৃতীরা ৫ রোহিঙ্গাকে অপহরণ করে পাহাড়ের ভেতরে নিয়ে যায়। শনিবার সন্ধ্যায় ক্যাম্পের কাঁটাতারের পাশের পাহাড়ের পাদদেশে জাহাঙ্গির আলমের একটি হাত বিচ্ছিন্ন করে ফেলে রাখে।
খবর পেয়ে ক্যাম্পের লোকজন তাকে উদ্ধার করে এনজিও হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নুরুল আমিন জানান, অপহরণকারী চক্রটি অপহৃত অপর চারজনের পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। না দিলে তাদের হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
টেকনাফ থানার আবদুল হালিম জানান, ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারী এপিবিএন সদস্য ও থানা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং অপহরণের শিকার রোহিঙ্গাদের উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন। ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক পুলিশ সুপার জামাল পাশা বলেন, আলিখালী ক্যাম্প থেকে ৫ রোহিঙ্গাকে অপহরণ ঘটনাটি জানার পর উদ্ধার তৎপরতা চলছে।