শুনলে চমকে যাবেন, বিহারের নালন্দার বেন ব্লকের মাদি গ্রামে বহুদিন হল একজনও মুসলিম থাকেন না। ১৯৮১ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর সেই যে তাঁরা গ্রাম ছাড়েন, আর ফেরেননি। কিন্তু তাঁদের মসজিদটি আজও সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। সেই মসজিদের দেখভাল করছেন হিন্দুরা, যাদের কাছে সেটি এক জীবন্ত সত্ত্বা! শুধু দেখভাল, পরিচর্যাই নয়, দিনে ৫ বার নিয়ম করে যাতে সেখানে নমাজ পাঠ হয়, ইলেকট্রনিক যন্ত্র বাজিয়ে তা সুনিশ্চিত করেছেন তাঁরা। এটাই সম্প্রীতির ভারত। মসজিদটি তাঁদের বন্যা, নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করে বলে বিশ্বাস উদয় কুমারের মতো স্থানীয় বাসিন্দার। তাই সেটি তাঁদের কাছে জীবন্ত সত্য।
উদয় বলেছেন, মসজিদের নানা খরচাপাতির অর্থ স্থানীয় বাসিন্দারাই চাঁদা তুলে সংগ্রহ করেন। গ্রামের প্রতিটি শুভ কাজ শুরু হয় মসজিদে হাজিরা, প্রার্থনার মাধ্যমে। নবদম্পতিরা বিয়ের পর মন্দির দর্শনের আগে মসজিদে যান। কেউ গ্রাম থেকে কোথাও যাওয়ার আগে বা বাইরে থেকে সেখানে এসে প্রথমেই মসজিদে যান প্রার্থনা করতে। মাদি গ্রামেই শিকড় খালিদ আলম ভুট্টোর, যদিও তিনি থাকেন বিহার শরিফে। তিনি জানাচ্ছেন, গ্রামের আসল নাম ছিল মান্ডি। মুসলিমরা এখানে বসতি গড়েন অন্ততঃ তিনটি শতক আগে। কিন্তু ১৯৪৬ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পর সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমরা অন্যত্র চলে যান। আমার দাদুও গ্রাম ছেড়ে থিতু হন বিহার শরিফে। মাদি গ্রামে এখনও ভুট্টোদের ১৫ একরের বেশি চাষযোগ্য জমি আছে। আদতে মাদির বাসিন্দা, এখন বিহার শরিফে থাকেন, সেই মহম্মদ বশিরও বলছেন, সব মিলিয়ে ৪৫টি মুসলিম পরিবার, ৪৫টি কুর্মি, বাকি ১০টি অন্য সম্প্রদায়ের পরিবার মাদিতে থাকত ১৯৪৫ পর্যন্ত। কিন্তু ১৯৪৬ এর দাঙ্গার পর থেকে একে একে মুসলিমরা গ্রাম ছাড়তে থাকে। ১২টি পরিবার ছিল। কিন্তু ১৯৮১র দাঙ্গার পর তারাও জমিজমা, ঘরবাড়ি বেচে গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। দ্য ওয়াল ব্যুরো
