প্রাকৃতিক রাবারের দাম কমে যাওয়া শুধু ত্রিপুরা রাজ্যের রাবার চাষিদের একার সমস্যা নয়, এটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে অন্যতম একটি সমস্যা। তবে ধীরে ধীরে আবার শিল্প কারখানা চালু হচ্ছে তাই প্রাকৃতিক রাবারের চাহিদা বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে দামও। এছাড়া, খুব দ্রুত ত্রিপুরায় চালু হচ্ছে রাবারভিত্তিক শিল্প। তাই রাজ্যের রাবার চাষিদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। একান্ত সাক্ষাৎকারে এ অভিমত ব্যক্ত করেন ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান টিংকু রায়।
ত্রিপুরা রাজ্য প্রাকৃতিক রাবার উৎপাদনে ভারতে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। কিন্তু লকডাউনের জেরে প্রথম অবস্থায় অন্য ক্ষেত্রের মতো রাবার চাষিরাও গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ করতে পারেননি। পরবর্তী সময় শিল্প উন্নয়ন নিগমের তৎপরতায় চাষিরা রাবার গাছ থেকে লেটেক্স সংগ্রহের অনুমতি পান। তবে চাষিদের অভিযোগ, বর্তমানে লেটেক্স থেকে তৈরি রাবার শিটের দাম প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ রুপি কমে গেছে। লকডাউনের আগে যেখানে প্রতি কেজি রাবার শিট ন্যূনতম ১২০ রুপি করে বিক্রি হতো, এখন তা ৮০ রুপিতেও বিক্রি করা যাচ্ছে না।
এ অবস্থায় ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগম রাবার চাষিদের সহায়তায় এগিয়ে আসবে কিনা জানতে চাইলে টিংকু রায় জানান, বিশ্বজুড়ে সব শিল্পে সঙ্কট চলছে। ত্রিপুরা রাজ্যও এর বাইরে নয়। এ রাজ্যে উৎপাদিত প্রাকৃতিক রাবার ভারতের অন্য রাজ্যে রফতানি করা হয়। এর কারণ রাবারের প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানা ও টায়ার শিল্পে কাঁচামাল হিসেবে রাবার শিট ব্যবহার করা হয়। ত্রিপুরা রাজ্যে এ ধরনের শিল্প কারখানা নেই। তাই ত্রিপুরার উৎপাদিত রাবার অন্য রাজ্যে বিক্রি করতে হয়।
লকডাউনের কারণে এসব কারখানা দু মাসের বেশি সময় বন্ধ ছিল। এসময় রাবারের চাহিদাও কমে যায়। ফলে অন্য রাজ্যের রাবার ব্যবসায়ীরা ত্রিপুরা থেকে শিট কেনেননি। এসব কারণে কমে যায় দামও। তবে ধীরে ধীরে শিল্প কারখানাগুলো চালু হচ্ছে। আর কিছুদিন পর পুরো মাত্রায় শিল্প কারখানা চালু হলে রাবার শিটের চাহিদাও বাড়বে। তখন রাবার চাষিরা অনেক বেশি দামে শিট বিক্রি করতে পারবেন।
এ অবস্থায় ত্রিপুরা রাজ্যের রাবার চাষিদের প্রতি তার আহ্বান, তারা যেন রাবার উৎপাদন বন্ধ না করেন। এখন রাবার উৎপাদনের ভরা মৌসুম। এসময় গাছ থেকে রাবার সংগ্রহ করে মজুদ করে রাখলে আগামী দিনে তারা সঠিক মূল্য পাবেন।
পাশাপাশি তিনি আরও জানান, ত্রিপুরার পশ্চিম জেলার বোধজংনগর এবং আর কে নগর শিল্পতালুকে বহিঃরাজ্যের অনেক শিল্পপতি এসে রাবার কারখানা স্থাপন করছেন। বোধজংনগর শিল্পতালুকে রাবার পার্কে জমি ফাঁকা নেই। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি কারখানা খুব দ্রুত উৎপাদন শুরু করবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারখানাটি ইতোমধ্যে ১৫ কোটি রুপি খরচ করেছে রাবার কারখানার তৈরির জন্য। তখন রাজ্যের রাবার চাষিদের উৎপাদিত রাবার বিক্রির জন্য বহিঃরাজ্যের ব্যবসায়ীদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না।