আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি মাসে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরায়েল। সোমবার (২১ অক্টোবর) ইসরায়েলের রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেল কান ১১-কে দেওয়া বিবৃতিতে এ তথ্য জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা।
বিবৃতিতে ওই কর্মকর্তা বলেন, ইরানে একটি বড়সড় হামলার প্রস্তুতি ইসরায়েল নিচ্ছে। এছাড়া ইরানের যে কোনো সম্ভাব্য হামলা ঠেকানোর জন্য ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীকে (আইডিএফ) আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।
তবে ইসরায়েল ইরানের ঠিক কোন কোন জায়গায় আঘাত হানতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি। তবে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের তেলক্ষেত্র বা পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে আইডিএফ।
গত ১ অক্টোবর রাতজুড়ে ইসরায়েলে অন্তত ১৮০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরানি সেনাবাহিনীর এলিট শাখা ইসলামি রেভোল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)। হামলার ২ দিন পর ৩ অক্টোবর ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান কাতারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময় সভায় বলেন, ইসরায়েল যদি গাজা ও লেবাননে সামরিক অভিযান বন্ধ না করে, তাহলে এ ধরনের হামলা অব্যাহত থাকবে।
ইরানের হামলার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য মিত্রদের সঙ্গে নিজেদের সুরক্ষা ও মধ্যপ্রাচ্যের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে পরামর্শমূলক নিবিড় আলোচনায় যুক্ত রয়েছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে শনিবার (১৯ অক্টোবর) ইসরায়েলে নিজেদের এয়ার ডিফেন্স ব্যবস্থা ‘থাড’ মোতায়েন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে শক্তিশালী ও উন্নত যুদ্ধাস্ত্রগুলোর মধ্যে থাড অন্যতম।
এদিকে, তেহরানও হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে ইরানের ভূখণ্ডে হামলা ঘটলে তার ভয়ানক পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে ইসরায়েলকে।
সম্প্রতি গাজা যুদ্ধ ও লেবাননে ইসরায়েলের হামলার পর তেহরান ও তেল আবিবের মধ্যে বৈরিতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। হিজবুল্লাহ, হামাস, হুথি, প্যালেস্টাইনিয়ান ইসলামিক জিহাদসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীকে গত চার দশক ধরে নিয়মিত আর্থিক ও সামরিক সহায়তা দিয়ে আসছে ইরান। এসব গোষ্ঠীর প্রধান ও একমাত্র লক্ষ্য হলো ইসরায়েলকে নির্মূল করা।
এদিকে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪২ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছে অন্তত ৯৯ হাজার ৮০০ জন।