‘সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দিনে অন্তত একবার (পঞ্চায়েতের নিরিখে) কোনও তফসিলি জাতি বা উপজাতি হস্টেলে অথবা এমন কোনও স্কুলে যেখানে মিড-ডে মিল দেওয়া হয়, কিংবা কোনও আহার কেন্দ্রে, অথবা কোনও অনাথ আশ্রমে খাবার খেতে হবে। যাতে তাঁরা খাবারের মান যাচাই করতে পারেন, সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত হতে পারেন।…’
সরকার তো জনকল্যাণমূলক প্রকল্প রূপায়ন করছে। কিন্তু, আমজনতা – বিশেষ গ্রামের মানুষ আদৌ সেইসব সুবিধা এবং পরিষেবা পাচ্ছে তো? ওডিশায় পালাবদলের প্রায় সাতমাস পর এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে উদ্যোগী হল বিজেপি পরিচালিত রাজ্য সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝির সরকার রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি বিভাগের সচিবদের নির্দেশ দিয়েছে, যাতে তাঁরা রাজ্যের অন্তত একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় যান এবং সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে আসেন। মূলত – সেই পঞ্চায়েতগুলিতে উন্নয়নের কাজ, জনকল্য়াণমূলক প্রকল্পগুলি ঠিকঠাক চলছে কিনা, সেগুলিই খতিয়ে দেখতে হবে সচিবদের।
এই মর্মে সংশ্লিষ্ট সবক’টি বিভাগের সচিবদের একটি চিঠি পাঠিয়েছেন উন্নয়ন কমিশনার অনু গর্গ। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের দিনে অন্তত একবার (পঞ্চায়েতের নিরিখে) কোনও তফসিলি জাতি বা উপজাতি হস্টেলে অথবা এমন কোনও স্কুলে যেখানে মিড-ডে মিল দেওয়া হয়, কিংবা কোনও আহার কেন্দ্রে, অথবা কোনও অনাথ আশ্রমে খাবার খেতে হবে। যাতে তাঁরা খাবারের মান যাচাই করতে পারেন, সেখানকার পরিবেশ সম্পর্কে অবহিত হতে পারেন।…’
ওই চিঠিতে আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অন্তত ‘একটি রাত মহকুমাস্তরের কোনও জায়গায় কাটাতে হবে। যাতে সমস্ত সরকারি প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন সম্পর্কে তাঁরা অবহিত হতে পারেন। এক্ষেত্রে মানুষের মতামত জানতে তাঁরা চাইলে পড়ুয়াদের সঙ্গে, আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। তাঁদের সঙ্গে নিরাপত্তা, সুবিধাসমূহ, আচরণ প্রভৃতি নিয়েও আলোচনা করতে পারেন।’
সরকারি ওই আমলাদের সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে, বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন রোগী, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উপভোক্তা এবং স্কুল ও হস্টেলের আদিবাসী ছাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলতে বলা হয়েছে।
জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। এই অবস্থায় সরকারি স্কুল ও শিক্ষাকেন্দ্রগুলিতে যে মিড-ডে মিল দেওয়া হয়, তার পরিমাণ, গুণমান এবং স্বাদ যথার্থ থাকছে কিনা, আইএএস আধিকারিকদের তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জিনিসপত্রের দামবৃদ্ধির কথা মাথায় রেখেই ওডিশা সরকার ইতিমধ্যেই মিড-ডে মিলের খরচ বাবদ প্রত্যেক পড়ুয়া বা শিশুর জন্য বরাদ্দ বাড়িয়েছে। প্রাথমিকস্তরে মাথা পিছু ৫ টাকা ৯০ পয়সা এবং উচ্চপ্রাথমিকস্তরে মাথা পিছু ৮ টাকা ৮২ পয়সা করে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রকল্পের দ্বারা উপকৃত হচ্ছে প্রায় ৪৩ লক্ষ শিশু ও কিশোর।