নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ৯ বছরেও সংশোধন হয়নি বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) অধিভুক্ত কলেজগুলোতে নিয়োগ বিধিমালা। এটি অনুসারে একজন মাধ্যমিক (কারিগরি) পাশ কর্মকর্তা হতে পারবেন কলেজের অধ্যাপক। তাছাড়া আরও নানা অসংগতি ও অসামঞ্জস্যতা রয়েছে বস্ত্র অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি-২০১৪ তে।
জানা গেছে, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ২০১৪ সালের ২৬ জুন প্রকাশিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ নিয়োগ বিধিমালা অনুসারে একজন মাধ্যমিক সমপর্যায়ের কারিগরি (ভোকেশনাল) পাশ করা ল্যাব সহকারী বা মাঠ কর্মকর্তা ৩৬ বছরের ক্রমাগত পদন্নোতিতে কোন প্রকার উচ্চতর ডিগ্রি ছাড়াই হতে পারবেন কলেজের অধ্যাপক। যদিও একই অধ্যাপক পদে সরাসরি নিয়োগ পেতে হলে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বা টেক্সটাইল টেকনোলজি বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি ছাড়াও প্রয়োজন পড়বে ১২ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা। আবার কেউ পিএইচডি ডিগ্রি ছাড়া শুধুমাত্র স্নাতকোত্তর ডিগ্রির সাথে ১০ বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা দ্বারাও নিয়োগ পেতে পারেন।
এছাড়াও নিয়োগ বিধিমালায় বস্ত্র অধিদপ্তরের প্রশাসনিক দায়িত্ব, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট হতে ডিপ্লোমা ও টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট (মাধ্যমিক) থেকে সরাসরি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে স্নাতক পর্যায় সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতির সুযোগও রয়েছে।
আবার টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের (ডিপ্লোমা) একজন অধ্যক্ষ বা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসনিক) হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর কোনো রকম শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা ছাড়াই অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেতে পারেন।
এমন ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগবিধি মোতাবেক বিগত নয় বছর যাবত বুটেক্স অধিভুক্ত কলেজগুলোর নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি হয়ে আসছে। যা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলে তারা নতুন নিয়োগবিধি প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে বলে জানান। কিন্তু নতুন নিয়োগ বিধি প্রণয়নের কাজ ছয় বছর আগে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বুটেক্স অধিভুক্ত নোয়াখালী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক সহযোগী অধ্যাপক জানান, পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় অসংগতি সম্পর্কে অবগত থাকলেও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। নিয়োগ বিধির জটিলতার জন্য টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, সরকার কোটি টাকার মেশিনারি কিনলেও সেগুলো চালানোর মতো দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে পারছে না। এতে শিক্ষার্থীরা শেখা তো দূরের কথা নতুন মেশিনগুলো দিনদিন অচল অবস্থায় থেকে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের উচিত নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে বস্ত্র খাতে সরকারের যে উন্নয়ন প্রচেষ্টা সেটা বাস্তবায়নে সহায়তা করা।