জন্মজিত্ / সমীপ, করিমগঞ্জ (অসম): দক্ষিণ অসমের করিমগঞ্জ জেলা সদর শহর এবং পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিককালে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই সহ নানান অসামাজিক কার্যকলাপ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। কিন্তু পুলিশ সুপার মায়াঙ্ক কুমারের বাহিনী কোনও ঘটনারই কিনারা করতে পারছে না। ছিনতাইবাজদের দৌরাত্ম্যে দিনের আলোয় শহরে সাধারণ জনগণ চলাফেরা করতে ভয় পাচ্ছেন। চুরি ডাকাতির ভয়ে জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের জনগণের রাতের ঘুম উবে গেছে। পুলিশ শহর সহ জেলাবাসীর জানমালের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যার্থতার পরিচয় দিচ্ছে। জেলা পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে এ সব অভিযোগ এনে করিমগঞ্জ কংগ্রেস বুধবার প্রতিবাদী ধরনা কর্মসূচি পালন করেছে।
বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের নেতৃত্বে জেলা কংগ্রেসের বিভিন্ন স্তরের পদাধিকারীগণ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মুখস্থিত অস্থায়ী ধরনা শেডে দু ঘণ্টার প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেন। বেলা বারোটা থেকে দুটা পর্যন্ত চলে ধরনা কর্মসূচি। বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ জেলা পুলিশ প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, একমাত্র পুলিশি ব্যার্থতার কারণে শহর সহ সমগ্র জেলাবাসী আতঙ্কে দিন যাপন করছেন। সাধারণ জনগণ সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন। কারণ ঘরে ফিরে গিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক পাবেন কি না! এর কোনও নিশ্চয়তা নেই। ব্যাঙ্ক এবং এটিএম থেকে টাকা তুলে নিরাপদে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে পারছেন না সাধারণ মানুষ। ছিনতাইবাজরা মাঝপথে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিচ্ছে। আর এ সবই হচ্ছে পুলিশ সুপার মায়াঙ্ক কুমারের নাকের ডগায়।
বিধায়ক কমলাক্ষ এ সবের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে সরাসরি দায়ী করে বলেন, শহর সহ জেলাবাসীর পুলিশের উপর থেকে ভরসা উঠে গেছে। কারণ গত মাস তিনেকের মধ্যে শহরের স্টেট ব্যাঙ্কের প্রধান শাখা সহ বিভিন্ন এটিএমের সামনে থেকে ছিনতাইবাজরা সাধারণ নাগরিকদের টাকার ব্যাগ ছিনতাই করে নিয়ে গেছে। পুলিশ একটি ঘটনারও কিনারা করতে পারেনি। প্রকাশ্য দিবালোকে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে দ্বিচক্র যান, অটোরিকশা ও ই-রিকশা উধাও হয়ে গেলেও পুলিশের কোনও হেলদোল নেই। কমলাক্ষ আরও বলেন, জেলা সদরেই যদি জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে মায়াঙ্ক কুমারের পুলিশ বাহিনী ব্যর্থতার পরিচয় দেয়, তা-হলে গ্রামাঞ্চলের জনগণের অবস্থা কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, তা অত্যন্ত চিন্তার বিষয় বলে, জেলা পুলিশ প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেন বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ।
একই সঙ্গে জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠ দলীয় কাজে ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্যও জেলা প্রশাসনকে একহাত নেন বিধায়ক কমলাক্ষ। প্রতিবাদী ধরনা কর্মসূচি পালনের পর জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে জেলাশাসকের উদ্দেশ্যে এক স্মারকপত্রও প্রদান করা হয়। জেলাশাসকের অনুপস্থিততে অতিরিক্ত জেলাশাসক ধ্রুবজ্যোতি দেব তাঁদের স্মারকপত্র গ্রহণ করেছেন। আজকের প্রতিবাদী ধরনা কর্মসূচিতে প্রাসঙ্গিক বক্তব্য পেশ করেন জেলা কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রজত চক্রবর্তী, উত্তম মজুমদার, জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র শাহাদত আহমদ চৌধুরী, জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক পঙ্কজ নাগ, মহিলা কংগ্রেস সভানেত্রী সংঘমিত্রা দাস, শুভঙ্কর দাস। উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের শহর মণ্ডল সভাপতি তাপস পুরকায়স্থ, প্রাক্তন উপ-পুরপতি পার্থসারথি দাস, সুলেখা দত্তচৌধুরী, রাজন চৌধুরী প্রমুখ।