কোভিডের কারণে কলকাতা কর্পোরেশনের ভোট স্থগিত করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেখানে প্রশাসক বসিয়েছে নবান্ন। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন যে একুশের বিধানসভার আগে বোধহয় পুর ভোট হবে না। কিন্তু একটি মামলার রায়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, কলকাতা পুরসভা ভোট করাতে হবে। শীর্ষ আদালত রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, কবে ভোট তা ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে জানাতে হবে। আর রাজ্য যদি ভোট করাতে না পারে তাহলে সুপ্রিম কোর্ট স্বাধীন প্রশাসক নিয়োগ করবে। গত মে মাসে মেয়াদ ফুরোয় কলকাতা পুরসভার। তারপর নির্দেশিকা জারি করে সেখানে প্রশাসকমণ্ডলী নিয়োগ করে তার মাথায় বসানো হয় বিদায়ী মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। যা নিয়ে মামলা মোকদ্দমাও হয়েছে। লকডাউন পরিস্থিতিতে কলকাতা পুর নিগম জরুরি কাজ চালিয়ে যেতে পারে বলে নির্দেশে জানিয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। এক মাসের জন্য এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়ে এক মাস পর মামলার বিস্তারিত শুনানির জন্য ধার্য করেন বিচারপতি। তারপর একে একে সমস্ত পুরসভাতেই প্রশাসক নিয়োগ করে রাজ্য সরকার। অধিকাংশ জায়গাতে বিদায়ী চেয়ারম্যানদেরই সেই পদে বসানো হয়। তবে অন্যত্র প্রশাসক বসানোর বিধি থাকলেও কলকাতা পুর আইনে তা নেই। কিন্তু সিঙ্গেল বেঞ্চের এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন মামলাকারী কলকাতার অরবিন্দ সরণির বাসিন্দা শরত্কুমার সিং। তাঁর আইনজীবী বিকাশ সিং হাইকোর্টে প্রশ্ন তোলেন, একজন পুর মন্ত্রীকে কীভাবে পুর নিগমের প্রশাসক হিসাবে বসানো যায়? এই পদ্ধতিকে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক দাবি করে, প্রশাসক বসানোর সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে করেছিলেন তিনি। বিকাশ সিং আদালতে জানিয়েছিলেন, পৌর আইন অনুযায়ী কলকাতা পৌর নিগমের ক্ষেত্রে এভাবে প্রশাসক বসানো যায় না। অন্যান্য পুরসভায় প্রশাসক বসানো গেলেও পৌরনিগমের ক্ষেত্রে তা আইন বিরুদ্ধ। তিনি বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে করোনা মহামারির জন্য এই পরিস্থিতিতে পুরভোট স্থগিত হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফিরহাদ হাকিমকেই প্রশাসক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মনে করা হয়েছিল, পুরভোট হলে একুশের জল মেপে নেওয়া যাবে। গ্রামীণ বাংলার মানুষের মনোভাব না বোঝা গেলেও শহর, মফস্বলের একটা বার্তা পাওয়া যাবে পুরভোটে। কিন্তু কোভিড সংক্রমণ সব লণ্ডভণ্ড করে দেয়। বিজেপি মনে করে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল ইচ্ছে করে ভোট আটকে দিয়েছে। হায়দরাবাদ কর্পোরেশনে গেরুয়া শিবিরের ব্যাপক আসন বৃদ্ধির পর এ নিয়ে তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে আক্রমণও শানিয়েছিলেন গেরুয়া নেতা অমিত মালব্য। এখন দেখার কলকাতায় ভোট করানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে কী বলে রাজ্য সরকার। দ্য ওয়াল ব্যুরো
