- ইসরাইলকে আলজেরিয় প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি।
লণ্ডন, ২০ আগস্ট- টানা দশ মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজা ভূখণ্ডে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী সন্ত্রাসীদের অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল। এই বর্বর অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে তারা। আর নিহতদের মাধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১৬ হাজার ৪০০ জনের বেশি।
সোমবার (১৯ আগস্ট) গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস এ তথ্য জানায়। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের প্রধান ইসমাইল থাওয়াবতেহ বলেছেন, গাজ্জা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনির কঠোর অবরোধের মধ্যে অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় ৩৫ ফিলিস্তিনি শিশু মারা গেছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, গাজায় খাদ্য সরবরাহে ইসরায়েলি নিষেধাজ্ঞার কারণে খাদ্যের অভাব এবং অপুষ্টির মধ্যে অন্তত ৩৫০০ শিশু মৃত্যুর ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে।
থাওয়াবতেহ বলেন, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ১৭ হাজারেরও বেশি শিশু তাদের বাবা-মাকে হারিয়েছে বা তাদের মধ্যে অন্তত একজনকে হারিয়েছে। এছাড়া গত কয়েক মাস ধরে আন্তর্জাতিক এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলো গাজায় ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক আক্রমণের কারণে ফিলিস্তিনি শিশুদের ওপর নেতিবাচক মানসিক প্রভাব সম্পর্কে সতর্ক করে চলেছে।
গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন, আলজেরিয় প্রেসিডেন্টের হুঁশিয়ারি
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের আগ্রাসন অন্যায্য এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর চালানো গণহত্যা মর্মান্তিক বলে দাবি করেছেন আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট আবদেল মাদজিদ তেবোউন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইহুদিবাদী শাসক গোষ্ঠী গাজায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়ে ফিলিস্তিনকে ধ্বংস করতে চায়। কিন্তু আলজেরিয়া এটি কখনোই মেনে নেবে না।
সোমবার আলজেরিয়ার উত্তর-পূর্বে কনস্টান্টিনোপলে এক বক্তৃতায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। সেই সঙ্গে আলজেরিয়া ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে আছে জানিয়ে আবদেল মাদজিদ বলেন, ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে তার দেশ অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় সেনা পাঠাতে প্রস্তুত। ৭৮ বছর বয়সি আবদেল মাদজিদ তেবোউন আবারও আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দেশটিতে সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে সোমবার নিজের নির্বাচনী প্রচারণার চতুর্থ দিনে, আবদেল মাদজিদ জোর দিয়ে বলেছেন, আলজেরিয়া গাজা উপত্যকার পুনর্গঠনে সহায়তা করতে সৈন্য পাঠাতে প্রস্তুত।
আলজেরিয়ার উত্তর-পূর্বে কনস্টান্টিনোপলে ওই বক্তৃতায় তেবোউন বলেন, আমরা কখনই ফিলিস্তিন, বিশেষ করে গাজাকে পরিত্যাগ করব না। আমি সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে শপথ করছি যে, যদি মিশর এবং গাজার মধ্যকার সীমান্ত আবার খুলে দেওয়া হয়, আমরা সেখানে সৈন্য পাঠাতে এবং গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে সাহায্য করতে প্রস্তুত। এ সময় তিনি ২০ দিনের মধ্যে গাজা উপত্যকায় তিনটি সজ্জিত হাসপাতাল নির্মাণের প্রতিশ্রুতিও দেন। তেবোউন আরও বলেন, তার দেশ অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শত শত চিকিৎসক পাঠাতেও প্রস্তুত।
এদিকে গাজার চিকিৎসা সূত্রের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, সোমবার সকাল থেকে মধ্য ও দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বোমা হামলায় অন্তত ১৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় মধ্যে ৪০ জন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরাইলি হামলায় ৪০ হাজার ১৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৯২ হাজার ৭৪৩ জন আহত হয়েছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ১১ মাস ধরে চলা যুদ্ধে প্রায় ২০ লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং পুরো উপত্যকাজুড়ে একটি গুরুতর মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে।