।। শর্মিলা মিত্র ।।
ছুটি কাটাতে যদি একটু দূরে কোথাও যেতে চান তাহলে ঘুরে আসতেই পারেন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে।ভ্রমণ পিপাসুদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম নাম হল কুয়ালালামপুর। পুরোন ঐতিহ্যের পাশাপাশি আধুনিকতার ছোঁয়াও খুঁজে পাওয়া যায় কুয়ালালামপুরে।
মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে পৌঁছাতে হলে বিমানে করে পৌঁছে যেতে হবে কুয়ালালামপুর বিমান বন্দরে। বিমান বন্দর থেকে ৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কুয়ালালামপুর শহর। বিমান বন্দর থেকে বাস বা ক্যাবে করেই পৌঁছে যেতে হয় কুয়ালালামপুর শহরে।কুয়ালালামপুর শহর জুড়ে রয়েছে অসংখ্য ঐতিহাসিক স্মৃতিস্তম্ভ, সুদৃশ্য পার্ক, মিনার, মুঘল ধাঁচের গম্বুজ ও স্কাই স্ক্যাপার।
কুয়ালালামপুর শহরের গুরুত্বপূর্ণ কিছু পর্যটন স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম হল,
পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার:
কুয়ালালামপুর শহরের প্রতীক হল এই পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা টাওয়ার হিসেবে পরিচিত ছিল এই পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার। কুয়ালালামপুরের প্রধান হল আকর্ষণ এই টাওয়ার।
ইসলামিক আর্ট মিউজিয়াম:
বিশ্বের সেরা ইসলামিক ভবন, চমত্কার স্থাপত্যের নমুনা মডেল, কার্পেট, গহনা ও ক্যালিওগ্রাফি সহ গোটা বিশ্বের ইসলামিক বিভিন্ন শিল্প প্রদর্শিত রয়েছে এই ইসলামিক আর্ট মিউজিয়ামে। যা গোটা বিশ্বের পর্যটকদের নজর কাড়ে।
চায়না টাউন:
পুরোন কুয়ালালামপুর শহর খুঁজে পেতে হলে অবশ্যই পৌঁছে যেতে হবে চায়না টাউনে। চায়না টাউনে দেখার মতো বেশ কয়েকটি জায়গা রয়েছে। যেমন রয়েছে মিনারা টাওয়ার, মারদেকা স্কোয়ার, জংসান বিল্ডিং। তেমনই রয়েছে সেন্ট্রাল মার্কেট ও পেতালিং স্ট্রীট মার্কেটও।
লেক গার্ডেনস:
১৭৩ হেক্টরের বিশাল এই জায়গা হল কুয়ালালামপুরের সবচেয়ে বড় সবুজ জায়গা। এখানকার লেক ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের সৌন্দর্য মনে টেনে নেয় প্রকৃতিপ্রেমীদের। পারডোনা বোটানিক্যাল গার্ডেন ও লেক ছাড়াও কে এল বার্ড পার্কেরও বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে পর্যটকদের কাছে।
কে এল বার্ড পার্ক:
প্রায় ৩০০০-এরও বেশী পাখি রয়েছে এই ২১ হেক্টর বিস্তৃত পাখিশালায়। ফ্লামিংগো থেকে
টিয়া পাখি, এইরকম প্রায় ২০০ প্রজাতির এশিয়ান পাখি রয়েছে এই কে এল বার্ড পার্ক-এ।
কে এল ফরেস্ট ইকো পার্ক:
৯.৩৭ হেক্টর বিশিষ্ট এই পার্ক কুয়ালালামপুর শহরের মধ্যে অবস্থিত সংরক্ষিত জঙ্গল। নানা ধরনের পোকা মাকড় ও পাখির দেখা পাওয়া যায় এখানে।
ন্যাশনাল মিউজিয়াম:
মালয়েশিয়ার অতীত থেকে বর্তমানের ইতিহাস ধারন করে রয়েছে কুয়ালালামপুরের এই ন্যাশনাল মিউজিয়াম। দেশের ভূতাত্ত্বিক বিভিন্নবৈশিষ্ট্য ও প্রাগৈতিহাসিক সময়ের ইতিহাস তুলে ধরার পাশাপাশি আধুনিক ইতিহাসেরও স্বাক্ষ্য বহন করে এই ন্যাশনাল মিউজিয়াম।
মানেরা কুয়ালা লামপুর:
৪২১ মিটার লম্বা এই টাওয়ার থেকে কুয়ালালাপুর শহরের সুন্দর দৃশ্য মনোমুগ্ধ করবে সকলকে। টাওয়ারের শীর্ষে রয়েছে একটি ঘূর্ণায়মান রেস্তোরা। টাওয়ারের ২৭৬ মিটার উঁচুতে রয়েছে একটি অভ্যন্তরীণ অবজারভেশন ডেক। অন্যদিকে, টাওয়ারের ৩০০ মিটার উপরে রয়েছে স্কাই ডেক। যা পর্যটকদের কাছে খুব প্রিয় একটি জায়গা।
মার্দেকা স্কোয়ার:
মার্দেকা স্কোয়ার হল বর্গাকৃতি খোলামেলা বিশাল একটি জায়গা। যেখান থেকে ১৯৫৭ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল মালয়েশিয়ার। বর্তমানে এই বর্গাকৃতি জায়গাটি ঘেরা থাকে ৯৫ মিটার ফ্ল্যাগ পোল দিয়ে।
এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা রয়েছে কুয়ালালামপুর শহর জুড়ে। রয়েছে ডিয়ার পার্ক, অর্কিড গার্ডেন, বাটারফ্লাই পার্ক সহ আরও সুন্দর সুন্দর পর্যটনস্থল।মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বিভিন্ন পর্যটনস্থলগুলির পাশাপাশি পর্যটকদের কাছে টানে রাস্তার ধারের সারি সারি রঙ্গিন স্ট্রীট ফুডের দোকান গুলি।
নভেম্বর থেকে মে, এই সাত মাস সবচেয়ে ভালো সময় মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর যাওয়ার জন্য।আর কখনও জানুয়ারীতে এই শহরে বেড়াতে গেলে অংশগ্রহণ করতে ভুলবেন না স্থানীয়দের থাইপুসাম উত্সবে।তাই আর দেরি না করে চট করে প্ল্যান করে ফেলুন কবে ঘুরতে যাবেন মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে।