ত্রিপুরা নিউজ ডেস্ক: বৃষ্টির আবহে ত্রিপুরায় শেষ হলো ২০২২ সালের দুর্গাপূজা। আবহাওয়া অধিদফতরের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী সপ্তমীর সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় বৃষ্টি, তা চলে নবমী পর্যন্ত।
এই বৃষ্টির জেরে একদিকে যেমন দর্শনার্থীরা পূজায় বের হতে পারেননি, তেমনি বিরাট ক্ষতির মুখে পড়েছেন খাবারের দোকানের ব্যবসায়ীরা।
অষ্টমীর দিনেও সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয় বৃষ্টি। তবে রাতের দিকে বৃষ্টি কমলে শহরের মানুষের একাংশ বের হন। কিন্তু শহর থেকে সামান্য দূরের মানুষ পূজায় আসতে পারেননি।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোব) নবমীর রাতেও মুষলধারে বৃষ্টি নামে। টানা কয়েক ঘণ্টা এভাবে চলার পর বৃষ্টির তীব্রতা কিছুটা কমলেও হাল্কা বৃষ্টি জারি থাকে। ফলে পূজার শেষ দিনেও আগরতলা শহরের পূজা প্যান্ডেলগুলোর বেশিরভাগই ছিল ফাঁকা। তবে বড় বাজেটের পূজাগুলোর মধ্যে রাজধানীর চিত্তরঞ্জন রোড এলাকার চিত্তরঞ্জন ক্লাব এবং ঊষাবাজার এলাকার ভারতরত্ন সংঘের প্যান্ডেলে সামান্য বেশী লোক সমাগম দেখা যায়।
চিত্তরঞ্জন ক্লাব এবছর তাদের পূজা প্যান্ডেল তৈরি করেছে দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফার আদলে। ৪০ লাখ রুপি ব্যায় করে নির্মিত এই প্যান্ডেল দেখতে বেশ আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। অনেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে ছাতা মাথায় আসেন প্যান্ডেল দেখার জন্য। প্যান্ডেলের সামনে কথা হয় দীপাবলি মজুমদার নামে এক নারীর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, শুধুমাত্র এই প্যান্ডেল দেখার জন্য প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরের সূর্যমনি নগর এলাকা থেকে এসেছেন। বৃষ্টির কারণে অন্য কোনো প্যান্ডেল না দেখে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কারণ বেশি রাত হলে গাড়ি পাওয়া যাবে না। আসতে তার অনেকটা কষ্ট হয়েছে তারপরেও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এসেছেন।
তিনি আরও জানান, বৃষ্টি কমবে কমবে ভেবে সপ্তমী-অষ্টমীতে বাড়ি থেকে বের হননি। কিন্তু নবমীতে বৃষ্টি থাকলেও এক প্রকার বাধ্য হয়ে বের হয়েছেন। তা না হলে আগামী বছরের অপেক্ষা করতে হবে। কারণ পূজা বছরে একবার আসে এবং পূজাতে এক দিনের জন্য বের না হতে পারলে বছর ভর এই আফসোস থেকে যাবে।
একই ভাবে রাজধানী আগরতলার ঊষাবাজার এলাকার ভারতরত্ন সংঘ তৈরি করেছে তামিলনাড়ুর মীনাক্ষী মন্দির। কিন্তু সেখানেও তেমন ভিড় নেই।
লাগাতর বৃষ্টির কারণে হতাশ পূজাকে কেন্দ্র করে যারা নানা ধরনের তেলেভাজা সামগ্রীর দোকান নিয়ে বসেছেন। চিত্তরঞ্জন ক্লাবের পূজা প্যান্ডেলের বাইরে রোলের দোকান নিয়ে বসেছেন সমীরণ পাল। তিনি বলেন, অনেকেই ঋণ নিয়ে পূজা উপলক্ষে খাবারের দোকান খুলেছেন। আশা ছিল পুজোর দিনগুলোতে বিক্রি ভালো হবে এবং বাড়তি কিছু আয় হবে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে লাভ তো দূর অস্ত অনেকেই ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
গত দু’বছর করোনা মহামারির কারণে পূজা জমজমাট হয়নি। এবছর রাজ্যে করোনার বিধি-নিষেধ নেই। এ পরিস্থিতিতে অনেকে আশা করেছিলেন ধুমধামের সঙ্গে দুর্গাপূজায় আনন্দ করার। কিন্তু তাদের পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দিল বৃষ্টি। সূত্র: বাংলা নিউজ