আগরতলা : নদীপথে বাংলাদেশ থেকে পণ্য পরিবহণে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য জোর দিয়েছেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। পাশাপাশি, বহিঃরাজ্য থেকে আগত পণ্যবাহী লরি গুলিকে চেক-আপ করার ক্ষেত্রে ‘লেজার স্ক্যানার প্রযুক্তি’ শীঘ্রই ব্যবহার করার জন্য পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের পৌরোহিত্যে আজ সোমবার সচিবালয়ে পরিবহণ দফতরের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় পরিবহণমন্ত্রী প্রণজিত্ সিংহ রায়, মুখ্যসচিব মনোজ কুমার, আগরতলা আখাউড়া রেল লিঙ্ক প্রজেক্টের নির্মাণ সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার রমন সিংলা, পরিকল্পনা ও সমন্বয় দফতরের সচিব অপূর্ব রায়, বিশেষ সচিব প্রশান্ত কুমার গোয়েল ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পরিবহণ দফরের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সোনামুড়া শ্রীমন্তপুর নির্মীয়মাণ জেটি থেকে মূল সড়ক সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো দ্রুত নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সভায় মুখ্যমন্ত্রী বাংলাদেশের সাথে নদীপথে পণ্য পরিবহণ দ্রুত শুরু করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী গোমতি নদীর গভীরতা বাড়ানোর বিষয়ে দফতরকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলেন যাতে শীতকালে নদীর নাব্যতা বজায় থাকে। মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনাল বিল্ডিঙের নির্মাণকাজ দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বহিঃরাজ্য থেকে আগত পণ্যবাহী লরিগুলিকে চেক-আপ করার ক্ষেত্রে ‘লেজার স্ক্যানার প্রযুক্তি’ শীঘ্রই ব্যবহার করার জন্য পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি লরিগুলি যেন নিয়মের বাইরে অতিরিক্ত ভার বহন না করে সেদিকেও তিনি দফতরকে নজর দিতে বলেছেন। সভায় আগরতলা-আখাউড়া রেল লিঙ্ক প্রকল্প সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুততার সাথে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া ধর্মনগর-কৈলাসহর-পেঁচারথল রেল লিঙ্ক প্রজেক্টের বিষয়ে বিস্তারিত খোজখবর নেন মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রেও তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিনের সভায় রেজিস্ট্রেশন অব ভেহিক্যালস, রোড পারমিট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, কর সংগ্রহ, ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, মোটর ভেহিক্যাল আইনের আওতায় এনফোর্সমেন্ট, সড়ক সুরক্ষা বিষয়ক সচেতনতা কর্মসূচি ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়। সভায় পরিবহণ দফতরের প্রধান সচিব এলএইচ ডারলং জানান, ২০১৯-২০ সালে মোট ৫৮,০৩২টি যানবাহন রেজিস্ট্রিকৃত করা হয়েছে। ৩,৯৪২টি রোড পারমিট দেওয়া হয়েছে। ৩,১৯৭টি ই-রিক্সার রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হয়েছে। ৪২,৫৪৫ জনকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। ৮০টি সড়ক সুরক্ষা বিষয়ক কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি জানান, ২০১৯-২০ সালে পরিবহণ দফতর পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ১,২৯১ টি অভিযান চালানো হয়েছে। প্রধানসচিব জানান, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকরা যেন মটর ভেহিক্যাল অ্যাক্ট যথাযথভাবে মেনে চলে সে জন্যই এই অভিযানগুলি করা হয়েছে। চলতি বছরে ৩০ মে, ২০২০ পর্যন্ত ৪,১৮৪টি নতুন যানবাহন রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে। তিনি বলেন, চলতি বছরে সড়ক সুরক্ষা সম্পর্কিত ৪৫টি স্থানে হোর্ডিং লাগানোর কাজ চলছে। সাথে তিনি যোগ করেন, চলতি বছরে ৩৩টি ধোঁয়া পরীক্ষা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। উদয়পুরে একটি বাস পোর্ট এবং ডম্বুরনগরের নারিকেলকুঞ্জে একটি হেলিপোর্ট নির্মাণ করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সন্দীপ / এসকেডি