সারা দেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তল্লাশির নামে ‘তাণ্ডব’ চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, তল্লাশির নামে নেতাকর্মীদের না পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাবা, ভাইসহ স্বজনদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। গ্রেফতার করছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ‘সরকার নানাভাবে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি সম্পর্কে বিভ্রান্ত তৈরি করার অপপ্রচার চালাচ্ছে। সরকারের মন্ত্রীরা অনর্গল মিথ্যাচার করে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এক সন্ত্রাসী উপরিকাঠামো শৃঙ্খলের মধ্যে সারা বাংলাদেশ নিশ্চুপ হয়ে গেছে। সারা দেশের মানুষ সমস্ত কিছু দেখছে।’
বিএনপির এ জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশ এখন আর কোনো পার্থক্য নেই। সব একাকার হয়ে গেছে। কথা বলা মানে হচ্ছে- অদৃশ্য হয়ে যাবে, লাশ হয়ে পড়বে। কয়েকদিন আগে যুবদলের এক নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার দুই/তিন পর তার লাশ পাওয়া গেছে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের চিত্র।’
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা থেকে শুক্রবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত সারা দেশে ২৬০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মামলা হয়েছে ৯টি। ১ হাজার ৫৫৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনের মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দিয়ে এরপর থেকে সারা দেশে ১৩ হাজারের বেশি নেতাকর্মীকে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেছে। একজন সাংবাদিকসহ মারা গেছেন ১২ জন।
এর আগে দুপুরে এক বিবৃতিতে রিজভী বলেন, ‘বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, রিমান্ডে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন, অপহরণ ও গুম করে দেশে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এসবের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন একতরফাভাবে করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে কর্তৃত্ববাদী সরকার। কিন্তু এটি এবার সম্ভব নয়।’
রিজভী বলেন, ‘চলমান গণআন্দোলনে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী তাদের পতনের আশঙ্কায় ভীত হয়ে পড়েছে। তারা নিরীহ মানুষসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম নির্যাতন ও গ্রেফতারের পাশাপাশি গুমের মতো চরম মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে যাচ্ছে। অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর ভয়াবহ দুঃশাসনে ক্ষিপ্ত জনগণ এখন জীবন-মরণ প্রতিজ্ঞা নিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত জনগণ ঘরে না ফিরতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’