প্রতিনিধি, কলকাতা: ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ সম্পর্কে রাজ্যবাসীকে সতর্ক করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠকে এ সতর্কবার্তা দেন তিনি। এ ছাড়া সম্প্রতি নাগাল্যান্ডে সেনাদের গুলিতে ১৫ নিরীহ গ্রামবাসীর মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদও জানিয়েছেন তিনি।
মমতা বলেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের, বিএসএফের নয়। তাদের দায়িত্ব সীমান্ত রক্ষা করা। কিন্তু বিএসএফ এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে এখন সীমান্ত এলাকায় গ্রামগুলোর ভেতর ঢুকে পড়ছে। সীমান্তের ১৫ কিলোমিটার এলাকায় টহল দেওয়ার কথা থাকলেও বিএসএফ এখন তা মানছে না।
নাগাল্যান্ডের মন জেলায় খনি থেকে কাজ শেষে ঘরের ফেরার সময় ১৫ শ্রমিককে হত্যার ঘটনার পরই বিএসএফের বিরুদ্ধে কথা বললেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আমাদের সীমান্তবর্তী জেলা মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের মানুষ এবং প্রশাসনকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। কারণ, বিএসএফ তাদের এখতিয়ার লঙ্ঘন করে ঢুকে পড়ছে আমাদের সীমান্ত এলাকায়। অত্যাচার চালাচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনকে আরও সতর্ক হতে হবে।’
মমতা বলেন, ‘বিএসএফ ভোটের লাইনে ঢুকছে, গ্রামে গিয়ে অত্যাচার করছে। মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর—সর্বত্র এ সমস্যা। তাই পুলিশ সতর্ক থাকুন। বিএসএফকে নিজ এলাকার মধ্যে থাকতে বলুন। প্রয়োজনে রাজের শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তারাও শীর্ষ বিএসএফ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন।’
মমতা ব্যানার্জি আরও বলেন, লোকাল পুলিশকে না জানিয়ে কোনও সংঘাত হোক এটা আমি চাই না। তাই পুলিশকে সতর্ক হতে হবে। আর আমাদের অনেক আইসি ভাবে, না না ওদের ছেড়ে দাও। কেন! বিডিওদেরও আমি বলবো, একটি অ্যালার্ট থাকবেন। কোনও অভিযোগ এলে আইসিকে নিয়ে এলাকায় যাবেন। ভিজিট করবেন। বলে দেবেন, এটা আপনাদের জুরিডিকশনে পড়ে না।
এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারতের কয়েকটি রাজ্যে সেনাবাহিনীর জন্য বিশেষ ক্ষমতা আইন ‘আফস্পা’ প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন মমতা। এ দাবি নিয়ে আজ বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদলের স্মারকলিপি পেশ করার জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার নাগাল্যান্ড ইস্যুতে ভারতীয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভার অধিবেশন বয়কট করেন কংগ্রেস, বাম দল, সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি ছাড়াও বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সাংসদেরা। তবে বিরোধী দলগুলোর মধ্যে শুধু মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদেরা অধিবেশন বয়কট করেননি।