- অভিনন্দন জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট
আসাম নিউজ ডেস্ক: পুজো প্যান্ডেলে বাংলা ব্যানার লাগানোর প্রতিবাদে আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় তান্ডব চালিয়েছে বীর লাচিত সেনা অথচ এই ব্যাপারে এখন অবধি নিশ্চুপ রাজ্যের সরকার।
বাধ্য হয়ে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ যৌথ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন আসামের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বেশ কয়েকটি বাঙালি সংগঠন। তাঁদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
বিডিএফ এর এক সাধারণ সভায় এই ব্যাপারে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিডিএফ মিডিয়া সেলের মুখ্য আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন যে এটি উৎসাহব্যঞ্জক যে অবশেষে অস্তিত্বের স্বার্থে উগ্র জাতীয়তাবাদীদের এধরনের অসাংবিধানিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালিরা।
১লা নভেম্বর, লংকা শহরে এক যৌথ প্রতিবাদী সভার ডাক দেওয়া হয়েছে,যাতে যোগ দেবেন হিন্দু, মুসলমান নির্বিশেষে বিভিন্ন বাঙালি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জয়দীপ বলেন যে এছাড়া এই রাজ্যের বাঙালিদের কাছে কোন বিকল্প ছিলনা। কারণ পুজো প্যান্ডেলে তান্ডব চালানোর পরও যেভাবে দুষ্কৃতীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, যেভাবে সামাজিক মাধ্যমে ও গনমাধ্যমে বাঙালিদের ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে,হেয় করছে,অথচ সরকার সম্পুর্ন নীরব ভূমিকা পালন করছে তাঁতে এটা স্পষ্ট যে সমস্তটাই পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে।
যেহেতু বাঙালিদের কোন সমস্যার সমাধান করেনি এই সরকার, তাই তাঁদের ক্ষোভের প্রভাব যাতে ব্যালট বাক্সে না পড়ে তাই এই ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি করে বাঙালিদের হিন্দুদের ভোট হাসিল করতেই এই পরিকল্পনা। তিনি বলেন যে এই রাজ্যে বাঙালিদের নাগরিকত্ব,জমির অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার এমনকি ধর্মাচরণের অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে।
কাজেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর প্রতিবাদ করা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই এই রাজ্যের বাঙালিদের। তিনি বলেন এবার তাই সম্ভব হতে চলেছে। এজন্য উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন যে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার ৮০ লক্ষ বাঙালিকে শুধু মুখে নয়, ভোটের বাক্সে এইধরণের হেনস্থার জবাব দিতে হবে।
দরকার হলে নিজস্ব ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল গঠন করতে হবে। প্রতিবাদী মঞ্চ থেকে এই ঘোষণা করা হোক।
বিডিএফ এর অপর আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে বলেন যে বরাক উপত্যকার মানুষ সামগ্রিকভাবে এইধরণের অপকর্মের প্রতিবাদ জানালেও এই উপত্যাকারই কিছু সংখ্যক মানুষ ব্যক্তিস্বার্থে বিশ্বাসঘাতকদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন।
বীর লাচিত সেনা নামক কুখ্যাত সংগঠনের শাখা আগে থেকেই হাইলাকান্দি জেলায় রয়েছে। এবার কাছাড় জেলায়ও এই সংগঠনের শাখা তৈরি করার চেষ্টা চলছে এবং তাঁতে মদত দিচ্ছেন এই উপত্যকার কিছু মীরজাফর।
আরেকদল আবার বীর লাচিতের নামে সমন্বয়ের জন্য সভা করছেন। তিনি বলেন এঁদের ব্যাপারে জনগনকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ও দেশীয় কিছু জমিদার বৃটিশের হয়ে দালালি করেছিলেন। ৬১ এর ভাষা আন্দোলনের সময়ও হাইলাকান্দিতে বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে মিছিল বেরিয়েছে।
একই ভাবে এই রাজ্যের বাঙালিদের আজকের দুর্দিনেও শাসক দলের পরোক্ষ মদতে বা তাদের তৈলমর্দনের উদ্দেশ্যে এই ধরনের দালালরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন। তিনি বলেন যাতে এদের চক্রান্ত কোনভাবেই সফল না হয় সেই দায়িত্ব আপামর বরাক বাসীর। তাই সজাগ থাকা জরুরী।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক দেবায়ন দেব।