আরাকান নিউজ ডেস্ক: মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সাথে সংঘাতে লিপ্ত অন্যতম শক্তিশালী একটি সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠী বলেছে, তারা একটি বিমানবন্দর দখল করেছে। এটি ওই দেশের বিশ্বমানের সৈকত-রিসর্টের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রথম প্রতিরোধ বাহিনী এমন কোনো স্থাপনা বা প্রতিষ্ঠান দখল করল।
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলে রাখাইন প্রদেশের দক্ষিণাংশের এই এলাকার বাসিন্দা ও স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, মিয়ানমারের সর্ববৃহৎ শহর ইয়াংগনের উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ২৬০ কিলোমিটার (১৬০ মাইল) দূরে অবস্থিত থনডাই বিমান বন্দর (যা মা জিন বিমানবন্দর নামেও পরিচিত) দখল করা হয়েছে।
অং সান সু কি-র নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২১ সালে ক্ষমতায় আসা সামরিক সরকারের কাছে এটা সর্বশেষ বড় ধাক্কা। সশস্ত্র প্রতিরোধ সংঘটিত হচ্ছে মিয়ানমারের অনেকাংশে। এই প্রতিরোধ ও বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছে গণতন্ত্রপন্থী বাহিনী ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ত গেরিলা গোষ্ঠীগুলো।
আরাকান আর্মি টেলিগ্রামে রোববার রাতে এক বিবৃতিতে বলেছে, এই এলাকায় সংঘটিত সাম্প্রতিক সংঘর্ষে নিহত ৪০০ জনের বেশি সৈন্যের মৃতদেহ তারা উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি গোলাবারুদের গুপ্তভাণ্ডারের সন্ধানও তারা পেয়েছে। এই গোষ্ঠীর এই দাবিকে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস স্বতন্ত্রভাবে যাচাই করতে পারেনি। উল্লেখ্য, অতীতে তাদের দাবির যথার্থতা ও সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
রাখাইন প্রদেশের ছয়টি বিমানবন্দরের মধ্যে এটি একটি। এটি দখল হওয়ায় এই এলাকার উপকূলীয় অঞ্চল বিদ্রোহীরা অনায়াসে দখল করে নিতে পারে- এমন সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া, মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ অংশের উপর তারা তাদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম করছে।
আরাকান আর্মি হলো রাখাইনের সংখ্যালঘু বৌদ্ধদের সামরিক শাখা, যারা মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে রাখাইন প্রদেশের স্বায়ত্ত শাসন চায়। সম্প্রতি এরা নিজেদের আরাখা আর্মি বলেও আখ্যায়িত করেছে।
গত বছরের নভেম্বর থেকে এই গোষ্ঠী আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে এবং ১৭টি শহরের মধ্যে ৯টির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। তাদের নিয়ন্ত্রণ নেয়া একটি শহর আবার প্রতিবেশী দেশ চীনের সীমান্ত বরাবর। তারা আবার একটি সশস্ত্র জনজাতি গোষ্ঠীর জোটের অংশীদারও বটে, যারা গত অক্টোবরে হামলা শুরু করেছে। চীনের সাথে মিয়ানমারের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে ভূ-রাজনৈতিকভাবে কৌশলগত এলাকার দখলও নিয়েছে তারা।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা