আরাকান নিউজ ডেস্ক: ২৫ আগস্ট, রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস। ২০১৭ সালের এই দিনে সেনাবাহিনীর নিপীড়নের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন মিয়ানমারের প্রায় সাত লাখ রোহিঙ্গা। শরণার্থী জীবনের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তারা কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের খোলা মাঠে সমাবেশ করেছেন।
লম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের গণসমাবেশে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সমাবেশে বক্তব্য দেন রোহিঙ্গা নেতা নুরুল আমিন, জুবাইর আহমদ, জামাল হোসেন, কুতুপালং আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা কামাল হোসেন, বালুখালী আশ্রয়শিবিরের হেডমাঝি (নেতা) মো. রফিক প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। পাশাপাশি ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে পাঁচ বছর ধরে মানবিক আশ্রয় এবং নিরাপত্তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান তারা।
সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতা জুবাইর বলেন, আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গারা রাখাইনের জন্মভূমিতে ফিরতে চান। আজকের সমাবেশ থেকেও আমরা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করার দাবি জানাচ্ছি। কিন্তু শর্ত আছে। একসঙ্গে বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে ১০০-২০০ জন করে পাঠালে হবে না। পাঠালে পুরো একটা গ্রাম ধরে পাঠাতে হবে। পুরো এক গ্রামের লোকজনকে একসঙ্গে পাঠানো গেলে নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা থাকবে না।
রোহিঙ্গা নেতা কামাল হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে শুরু থেকে তৎপর ছিলেন রোহিঙ্গাদের শীর্ষ নেতা মুহিবুল্লাহ। তিন বছর আগে গণহত্যা দিবসে কয়েক লাখ রোহিঙ্গার উপস্থিতিতে মহাসমাবেশটি করেছিলেন মুহিবুল্লাহ। কিন্তু প্রত্যাবাসন থামিয়ে দিয়ে অস্ত্রধারীরা মুহিবুল্লাহকে হত্যা করে। মুহিবুল্লাহর রক্ত বৃথা যাবে না। মুহিবুল্লাহর স্বপ্ন বাস্তবায়নে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রুত শুরু করতে হবে।
আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তায় উখিয়ার কুতুপালং, বালুখালী, লম্বাশিয়া, মধুরছড়া, থাইনখালী, জামশিয়া, টেকনাফের শালবন, জাদিমুরা, নয়াপাড়া, উনচিপ্রাংসহ বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে গণহত্যা দিবসের কর্মসূচি চলে। বালুখালী আশ্রয়শিবিরের ফুটবল মাঠের সমাবেশেও ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সেখানেও নাগরিকত্ব, রাখাইনে ফেলে আসা ধনসম্পদ-জায়গাজমি ফেরত, কারাগারে বন্দী রোহিঙ্গাদের মুক্তিসহ নানা দাবি উত্থাপন করেন রোহিঙ্গা নেতারা।
সমাবেশ শেষে আয়োজিত বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেয়া রোহিঙ্গারা তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের বিচার ও নিজ দেশে মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেন।