ঢাকা, ১৮ আগস্ট- বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি শেখ হাসিনা সরকার। এসব তথ্য যেন গণমাধ্যমে না আসে, সে বিষয়েও ছিল যারপরনাই তৎপর। শুধু তাই নয়, আন্দোলনকালে আহত, বিশেষ করে গুলিবিদ্ধ হাজার হাজার ছাত্র-জনতা যেসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন, সেসব হাসপাতালের এ সংক্রান্ত সব নথিপত্রও জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশসহ একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এসব হাসপাতালের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও। তদুপরি এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য যেন কোনোভাবেই গণমাধ্যমে না যায়, সে বিষয়েও সব হাসপাতালের কর্তৃপক্ষকে শাসানো হয়।
এখানেই শেষ নয়, রাজধানীর সংঘাতপ্রবণ এলাকাগুলোর হাসপাতালগুলোতে প্রতিনিয়ত চোখ রাখত পুলিশ প্রশাসনসহ হাসিনা সরকারের অনুগত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। পাশাপাশি আন্দোলন দমাতে কিংবা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সরকারের হয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে নানারকম গুজব ছড়ানো হতো। যেদিন ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এর আগের রাতেও শিক্ষার্থীদের ‘মার্চ টু ঢাকা‘ কর্মসূচি নিয়ে নানা গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি জারি করা হয় কারফিউও। কিন্তু এত সব কা-কীর্তির পরও শেষ রক্ষা হয়নি।
লুকোচুরি ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে সৃষ্ট সংঘাত-সহিংসতায় হতাহতদের মিছিল ছিল সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোয়। সরকারি হাসপাতালের তথ্য কিছুটা পাওয়া গেলেও সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র ছিল বেসরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোয়। বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাতে আহত ও নিহতদের ব্যাপারে গণমাধ্যমে কোনো তথ্য প্রদান না করে, এ ব্যাপারে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। শুধু হাসপাতাল নয়, সহিংসতাকে কেন্দ্র গ্রেপ্তার ও মামলার তথ্য দিতেও নিষেধ ছিল পতিত সরকারের। এমনকি গণ-আন্দোলন দমাতে পরিকল্পিতভাবে ইন্টারনেট শাটডাউন করে তৎকালীন সরকার ডাটা সেন্টার পুড়ে যাওয়ার অজুহাত বারবার গণমাধ্যমে প্রচার করে। এমনিভাবে সঠিক তথ্যপ্রাপ্তি থেকে জনগণকে বঞ্চিত করে পতিত সরকার। একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
হতাহতের সঠিক তথ্য প্রদানে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে নিষেধ করায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ঠিক কী পরিমাণ হতাহত হয়েছে, তার সঠিক তথ্য নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। গত ১৬ জুলাই থেকে ২১ জুলাই পর্যন্ত সংঘর্ষ-সংঘাতের ঘটনায় গণমাধ্যমে দুই শতাধিক মৃত্যুর খবর প্রকাশ পায়। তারপরও সে সময় ইন্টারনেট পুরোপুলি চালু না থাকায় এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হয়। তবে এ সময়ে ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। পরদিন আরও তিনজন বাড়িয়ে ১৫০ জনের কথা জানান তিনি। এরপর হাসিনা সরকারের পতনের এক দফা আন্দোলন জোরালো হলে ৪ থেকে ৬ আগস্ট তিন দিনেই তিন শতাধিক মৃত্যুর তথ্য জানা যায়। যেখানে শিশু, শিক্ষার্থী, সাধারণ মানুষ, রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও পুলিশও রয়েছে। এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন তাদের প্রাথমিক এক প্রতিবেদনে বলেছে, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশে ৬৫০ জন নিহত হয়েছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার বলেছে, ১৫ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছে আহত প্রায় ১৯ হাজার মানুষ। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪০৭ জনের। তবে বেসরকারি হাসপাতালে কতজন মারা গেছে, কি পরিমাণ আহতরা চিকিৎসা নিয়েছে, এর কোনো হিসাব দিতে পারেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হতাহতের তথ্য পেতে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে তারা চিঠি দিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতালগুলোর তরফে কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। কিন্তু একাধিক বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তারা কোনো চিঠিই পাননি! রাজধানীর রামপুরার ডেল্টা হেলথ কেয়ার হাসপাতাল। ১৮ থেকে ২০ জুলাই তিন দিনেই আন্দোলনে আহত দুই শতাধিক মানুষকে চিকিৎসা দিয়েছে হাসপাতালটি। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ অন্তত ৪০ জনের অবস্থা ছিল একেবারে সংকটাপন্ন। কিন্তু পুলিশ ও বিজিবির বাধায় কাউকে ভর্তি করাতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। মৃত্যু হতে পারে জেনেও অন্য হাসপাতালে যেতে বলা হয় গুরুতর আহত অনেককেই। এমনকি হাসপাতালের গেটের সামনেই এক রিকশাচালক বিজিবির গুলিতে নিহত হলেও তার লাশ হাসপাতালে নিতে দেওয়া হয়নি। উপরন্তু এসব তথ্য গণমাধ্যম পর্যন্ত যেন না ছড়ায়, সে বিষয়ে প্রশাসনিক হুমকি ও ভীতি প্রদর্শনও চলেছে।
ডেল্টা হেলথ কেয়ারের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হাসান মিয়া বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসা দেওয়াই আমাদের কাজ। কিন্তু সেটি করতে গিয়ে চরম বাধার মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের। কাউকে ভর্তি করার সুযোগ হয়নি। কারণ পুলিশ, বিজিবি, এমনকি স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও এক্ষেত্রে মারাত্মক বাধা দেন। তিনি যোগ করেন, নিতান্ত মানবিক কারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার জেরে হাসপাতালে ভাঙচুরও চালিয়েছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ তথা আওয়ামী লীগের লোকজন। এ বিষয়ে মামলা করতে গেলেও পুলিশ তা গ্রহণ না করে উল্টো নানারকম ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের সামনেই নিরীহ একজনকে গুলি করে হত্যা করে বিজিবি। পুলিশকে এ খবর দেওয়া হলেও আসেনি। প্রায় দুই ঘণ্টা ঘটনাস্থলেই লাশটি পড়ে ছিল। এরপর গোয়েন্দা সংস্থা থেকে তথ্য চাইতে আসে আমাদের কাছে। এ সময় তারা গণমাধ্যমে হতাহতের কোনো তথ্য দিতে নিষেধ করার পাশাপাশি রোগী ভর্তিসংক্রান্ত নথিপত্র, এমনকি সিসি ক্যামেরার ফুটেজও নিয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটির প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরও জানান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আন্দোলনকালে হতাহতদের তথ্য প্রদানসংক্রান্ত কোনো চিঠি তারা পাননি।
রামপুরা ডিআইটি সড়কে অবস্থিত বেটার লাইফ হাসপাতালের পরিস্থিতি ছিল আরও সঙ্গীন। গুলিবিদ্ধ এত সংখ্যক মানুষ এবং এহেন সংকটময় পরিস্থিতি এর আগে কখনো দেখেননি বলে জানান হাসপাতালটির জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রাজিব সাহা। বলেন, একের পর এক আহত, গুলিবিদ্ধ শিক্ষার্থী-জনতা আসছিলেন, তাদের জায়গা দিতে পারছিলাম না। উপায়ান্তর না পেয়ে জরুরি বিভাগের সামনে বেঞ্চ পেতে দিয়ে তাতে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। চিকিৎসকের সংখ্যা যতটা সম্ভব বাড়িয়েও উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছিল না। প্রায় দেড়শর মতো আহত আমাদের হাসপাতালে এসেছিলেন যাদের প্রত্যেকেই ছিলেন গুলিতে বিদ্ধ। আর লাশ এসেছিল অন্তত ১০টি। সবাই ঘটনাস্থলে মারা যান। এতকিছুর মধ্যেও মাথার ওপর ছিল হতাহতের তথ্য আড়াল করাসহ প্রশাসনের নানামুখী চাপ।’ তিনি আরও বলেন, ডিজিএফআইসহ সরকারের অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন এসে চিকিৎসাধীনদের তথ্য নিয়ে যায়। সঙ্গে কঠোরভাবে বারণ করে যায় যেন এসব তথ্য কোনোভাবেই গণমাধ্যমে না যায়।
একইরকম চাপের কারণেই সে সময় আন্দোলনকালে হতাহতদের কোনোরকম তথ্য দিতে অস্বীকৃতি জানায় বাড্ডার এএমজেড হাসপাতাল। গত বুধবার হাসপাতালটিতে গেলে একাধিক কর্মকর্তা বলেন, প্রায় হাজার মানুষকে এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। অন্তত ৪০টি লাশ এসেছে যাদের অধিকাংশই ঘটনাস্থলে মারা গেছেন। অন্যরা হাসপাতালে আসার পরপরই মারা যান। কিন্তু সরকারের প্রশাসনের চাপে কারো তথ্য পর্যন্ত লিপিবদ্ধ করা যায়নি। হাসপাতালের কাছে মাত্র ১৫৭ জনের তথ্য রয়েছে যারা আহতাবস্থায় এখানে ভর্তি ছিলেন। এসব তথ্যও যেন গণমাধ্যমে ফাঁস না হয়, সে বিষয়ে কড়া নির্দেশনা ছিল সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে।
একই চিত্র পাওয়া গেছে মিরপুরের হাসপাতালগুলোতেও। ঢাকার যেসব এলাকায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হতাহত সবচেয়ে বেশি হয়েছে, মিরপুর এর একটি। সহিংসতায় হতাহতরা সম্ভাব্য যেসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে পারেন, এমন সব হাসপাতালের ওপরই কড়া নজরদারি ছিল পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার; তারা ঘুরে-ঘুরে এসব হাসপাতাল থেকে প্রতিনিয়ত তথ্য নিয়ে গেছেন এবং গণমাধ্যমসহ অন্য কাউকে এসব তথ্য দিতে কড়াভাবে নিষেধ করে যান। প্রায় তিনশ আহতকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে মিরপুর-১০ এর আলোক হেলথ কেয়ার হাসপাতাল। এর মধ্যে চারজনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালটির উপব্যবস্থাপক মো. হাসিনুর রহমান বলেন, ‘সে সময় আহতদের চাপ সামলাতে ভীষণ হিমশিম খেতে হয়েছিল। হাসপাতালে আসা অধিকাংশই ছিলেন গুলিবিদ্ধ। কিন্তু প্রশাসনিক নানা চাপ থাকায় ভর্তি করা যায়নি। এসব তথ্য যেন কোথাও প্রকাশ না পায়, সে জন্য প্রশাসনের লোকজন আমাদের রেজিস্ট্রার খাতা, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ছাড়াও সব নথিপত্র জব্দ করে নিয়ে যায়।’
মিরপুর এলাকার ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, ডা. আজমল হাসপাতাল ও আল হেলাল স্পেশালাইজড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভাষ্যও অভিন্ন। তারাও হতাহতদের চিকিৎসাসংক্রান্ত তথ্য নিয়ে মারাত্মক চাপে ছিলেন পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার। আইন ও মানবাধিকারের এমন চরম লঙ্ঘন প্রসঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হওয়া সহিংসতার শুরু থেকে আমরা সোচ্চার ছিলাম। প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এড়িয়ে সবাইকে সহনশীল আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছিলাম। এর পরও এমন ঘটনা ঘটেছে। গণমাধ্যমের তথ্য পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সঠিক তথ্য তারা না পেলে মানুষের মাঝে ভুল তথ্য যাবে, বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে। তাই জাতির স্বার্থেই হাসপাতালে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা ও এসব ঘটনায় কত মামলা ও গ্রেপ্তার হয়েছে তার সঠিক তথ্য অবশ্যই তাদের দিতে হবে। আমরা তখন তথ্য দিতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আহ্বান জানিয়েছিলাম।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে হতাহতের সংখ্যা, গ্রেপ্তার ও হামলা-মামলার তথ্য নিয়ে শুরু থেকেই লুকোচুরি করছিল শেখ হাসিনার মুঠোবন্দি প্রশাসন। পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবস্থা পুরোপুরি শাটডাউন করে দিয়ে মানুষে-মানুষে যোগাযোগ ব্যাহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল। এ ছাড়া গণমাধ্যমকেও নানাভাবে চোখ রাঙিয়েছিল এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য প্রচার করেছিল। সে সময় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেছিলেন, নাশকতায় মহাখালীর ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়ায় ইন্টারনেট চালু করতে বিলম্ব হচ্ছে। পরবর্তীকালে অন্তর্বর্তী সরকারের তদন্তে বেরিয়ে আসে, পরিকল্পিতভাবেই ইন্টারনেট শাটডাউন করেছিল হাসিনার সরকার। ডেটা সেন্টার পুড়ে যাওয়ার তথ্য ছিল ¯্রফে বানোয়াট।
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন কেন্দ্র করে মধ্য জুলাই থেকে সারাদেশে গণগ্রেপ্তার শুরু করেছিল পুলিশ। দেশের বিভিন্ন স্থানে চলা হামলা-সংঘর্ষ, গুলি-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ কা-ে কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কতগুলো মামলা হয়েছে, কতজনই বা আসামি- এ সংক্রান্ত কোনো তথ্য পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও পাওয়া যায়নি। এ সংক্রান্ত তথ্য পেতে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখায় বারবার যোগাযোগ করা হলে তৎকালে বলা হয়, তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গ্রেপ্তার ও মামলার তথ্য পুলিশ সদর দপ্তরের যেসব শাখা সংরক্ষণ করে, সেসব শাখাকে সে সময় নির্দেশ দেওয়া হয়- গণমাধ্যমে এসব তথ্য দেওয়া যাবে না। ফলে পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম শাখা থেকে সাংবাদিকদের কোনো তথ্য দেয়নি। এ বিষয়ে সে সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আইজিপিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল যেন কোনো তথ্য কোথাও দেওয়া না হয়। হাসিনা সরকারের অনুগত আইজিপি সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগরও বলেন, সে সময় সাংবাদিকদের চাহিদানুযায়ী গ্রেপ্তার ও মামলার তথ্য সরবরাহের জন্য তারা বার বার পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট শাখাগুলোয় যোগাযোগ করেন। কিন্তু এসব শাখা থেকে কোনো তথ্য সরবরাহ করা হয়নি। ফলে সাংবাদিকদের চাহিদা মোতাবেক তথ্য দেওয়া যায়নি।