- শর্তে গ্রেফতার হতে রাজি।
লণ্ডন, ১৫ অক্টোবর- ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর ফ্যাসিবাদী দল আওয়ামী লীগের নেতা-এমপি-মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা গা ঢাকা দেন। এমনই খবর বের হয়, পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম চলতি মাসের ৬ অক্টোবর দেশ থেকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পালিয়ে গেছেন। কোটা সংস্কার ঘিরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমনের নামে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২৫ কোটি টাকা আনার অভিযোগ আছে পুলিশের এই খুনি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
পুলিশের ডিএমপি শাখায় প্রায় ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করেছেন এই খুনি পুলিশ কর্মকর্তা। ডিএমপির মুখপাত্র থাকায় গণমাধ্যমে ছিলেন আলোচিত মুখ। ২০২১ সালে হয়েছিলেন এসবি শাখার প্রধান। ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালা বদলের পর পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা গ্রেফতার হলেও আলোচিত কর্মকর্তাদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবস্থান জানান দেন পুলিশের এই খুনি কর্মকর্তা। এরপর থেকে নিয়মিত ফেসবুকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে তাকে।
পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান মনিরুল ইসলাম দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন, নাকি দেশেই আছেন—তা নিয়ে ভিন্ন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল সোমবার দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনিরুল ইসলাম বলেন, পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার কারণে দেশ ছাড়া সম্ভব হয়নি তার। তিনি দেশেই আছেন। ৫ আগস্টের পর দেওয়া মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হলে আত্মসমর্পণেও রাজি আছেন বলে জানিয়েছেন একসময়ের প্রভাবশালী এই পুলিশ কর্মকর্তা।
দিল্লির ছবির বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, ২০২২ সালে মার্চের দিকে মালদ্বীপ গিয়েছিলাম পরে দিল্লিতে দুইদিন অবস্থান করেছিলাম। দেশে থাকার দাবি করলেও কেন আত্মসমর্পণ করছেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে জঙ্গিরা। আমি যেকোনো মুহূর্তে গ্রেফতার হতে পারি। এটা আমি ধারণা করছি। সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রফেশনাল তদন্তে সংশ্লিষ্টতা মিললে গ্রেফতার হতে রাজি। আত্মসমর্পণ করারও চিন্তা করে দেখব। এমনকি সুষ্ঠু তদন্ত ও প্রফেশনাল তদন্তে সংশ্লিষ্টতা মিললে গ্রেফতার হতে রাজি বলে জানিয়ে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করেছেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) সাবেক প্রধান মনিরুল ইসলাম।
তবে মনিরুল ইসলামের দেশে থাকার এই দাবি মিথ্যা বলে উল্লেখ করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী আল-জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের খান। আজ বুধবার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এমনটা দাবি করেন তিনি।
অনুসন্ধানী এই সাংবাদিক লেখেন, ‘পলাতক পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের বাংলাদেশে অবস্থানের দাবি মিথ্যা। অন্তত ৬ই অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত তিনি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতেই ছিলেন। ৬ অক্টোবর স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩৯ মিনিটে তোলা ছবির ফরেনসিক এনালাইসিস করে নয়াদিল্লিতেই তিনি ছিলেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অবশ্য বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন, তা আমাদের জানা নেই।’