ইআরআইয়ের সেমিনারে বক্তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক: গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হওয়া সম্ভব নয় । ২৫ নভেম্বর সোমবার পূর্ব লন্ডনের একটি হলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠিত হওয়া “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও বাংলাদেশে চরম মানবাধিকার লংঘন” শীর্ষক সেমিনারে এমন মন্তব্য করেন বক্তারা।
ই আর আইয়ের ক্যাম্পেইন সেক্রেটারি সোহরাব উদ্দিন রোমানের পবিত্র কালামে হাকিম থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া উক্ত সেমিনারে উদ্বোধনী ও বক্তব্য দিয়ে থাকেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল নওশীন মোস্তারি মিয়া সাহেব। সংগঠনের সহ-সভাপতি মোঃ হাসনাত আল হাবিবের পরিচালনায় উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মোঃ ওসমান গনি । এবং এতে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা সাংবাদিক হাসান আল জাভেদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কলামিস্ট লেখক রাকেশ রহমান, অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার ইসহাক হোসাইন আক্তার।
উক্ত সেমিনারে বক্তব্য রাখেন ইআরআইয়ের সহ-সভাপতি মো: রোকতা হোসেন
জয়েন্ট সেক্রেটারি মোঃ ফাহিদুল আলম, জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ মহিবুল্লাহ, জয়েন্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ হানিফ রব্বানী, মাইনোরিটি রাইট সেক্রেটারি তাহমিনা, ক্যাম্পেইন সেক্রেটারি আবু জেহাদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি তানিম আহমেদ ও আব্দুল আজিজ মিলাদ, মাইনোরিটি রাইট সেক্রেটারি সৌরভ চৌধুরী,মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ রনি, ক্যাম্পেইন সেক্রেটারি শাহিন আহমেদ, মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক শাকিল আহমেদ সোহাগ,জয়েন্ট সেক্রেটারি আব্দুল আজিজ মিলাদ, ক্যাম্পেইন সেক্রেটারি সোহরাব উদ্দিন রোমান, গুম বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ তফুর আহমেদ, ক্যাম্পেইন সেক্রেটারি রুহুল আমিন তোফায়েল, মাইনোরিটি রাইট সেক্রেটারি সরোয়ার চৌধুরী, ক্যাম্পেইন সেক্রেটারি সায়েম আহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোঃ ফজল আহমদ এক্সিকিউটিভ মেম্বার আব্দুল মান্নান, এক্সিকিউটিভ মেম্বার মাহমুদুল হক ইমরান। অন্যান্য মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের থেকে বক্তব্য রাখেন ফাইট ফর রাইট ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি বোরহান উদ্দিন চৌধুরী, স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশ এর সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম মুকুল, স্ট্যান্ড ফর হিউম্যান রাইটসের জয়েন্ট সেক্রেটারি জয়নাল হোসাইন, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই, ইউকের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোঃ তাজুল ইসলাম প্রমূখ।
এ ছাড়াও উক্ত সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ই আর আইয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোঃ আশরাফুল আলম, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি তোফায়েল আহমেদ,অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আব্দুল আলিম, সদস্য আব্দুল রশিদ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শিমুল, আরিফ হোসাইন, মোহাম্মদ আব্দুল মুকিত, ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি সেক্রেটারি ইমদাদুর রহমান ফাহিম,জয়েন্ট সেক্রেটারি ও ব্লগার ইয়াস কাউসার তাহিন ইসলাম, আলী আশরাফ, আমিনুল ইসলাম, একেএম রুহুল আমিন সরকার, খালেদ আহমেদ প্রমূখ।
হাসান আল জাভেদ বলেন, বিগত সরকারের গুম খুন নির্যাতন গায়েবী মামলা অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই বিপ্লবী ছাত্র-জনতা শেখ হাসিনাকে উৎখাতের পর বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বসিয়েছে। তাই মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়ে ড. ইউনুস সরকারকে ভুলে গেলে চলবে না। বিগত সরকারের মত অন্তর্বর্তীকালীন এ সরকারকেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলা দায়ের করতে দেখা গেছে। আওয়ামী লীগের কারো বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ থাকলে সুস্পষ্ট মামলায় তাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। এভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়, আর মানবাধিকারের দেশ প্রতিষ্ঠিত করতে হলে দরকার জনগণের শাসন।
রাকেশ রহমান বলেন ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে প্রাপ্ত এই নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে একটা গণতান্ত্রিক সরকারের বিকল্প নাই। গণতন্ত্র হলো মানবাধিকারের অন্যতম একটা অংশ। তিনি আরো বলেন নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবিরকে বিমানবন্দরে হয়রানীর সহ সাম্প্রতিক যেসব ঘটনাগুলো ঘটছে তার সবই পরিকল্পিত। দেশে আবার ও ওয়ান-ইলেভেন সৃষ্টির পাঁয়তারা চলছে। এটা বাস্তবায়ন হলে আবারও আমরা ভারতের দাসত্বে পরিণত হবো। বাংলাদেশের মানুষ ও সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এবং যত দ্রুত সম্ভব একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তবেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
মোঃ হাসনাত আল হাবিব বলেন বিগত সরকারের দুঃশাসনের হাত থেকে রক্ষা পেতে জনগণ ছাত্র-জনতার এই বিপ্লবকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করেছিল। কিন্তু আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পেলাম যে এই বিপ্লবী সরকার জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশাকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করতে যাচ্ছে। তাই অচিরেই এই সরকারের উচিত নির্বাচনের আয়োজন করা।
সমাপনী বক্তব্যে মো: ওসমান গনি বলেন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিগত সরকারের হাতে গড়া আয়না ঘরের দুর্বিষহ জীবন থেকে পরিত্রাণের আশায় ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত দ্বিতীয় এই স্বাধীন বাংলাদেশ। সাধারণ জনগণের একটাই চাওয়া একটা সুস্থ সুন্দর সমাজ। কিন্তু এ সরকার নানান ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে মানুষকে আজকে হতাশ করেছে। পরিশেষে তিনি বাংলাদেশে মানবাধিকার রক্ষার জন্য সকল মানবাধিকার কর্মীদের প্রতি সোচ্চার হতে উদাত্ত আহ্বান জানান।
সেমিনারে বক্তারা বর্তমান সরকারের সমালোচনা করে বলেন এ সরকার মানবাধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে গণপিটুনি বা তথাকথিত ‘মব জাস্টিসের’ শিকার হয়ে নিহত হয়েছেন ৬৮ জন।
বক্তারা আরো বলেন আমরা এবং আমাদের পরিবার নির্দোষ হওয়া সত্ত্বেও এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অনিয়ম এবং গাফেলতির কারণে আজকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিভিন্ন মামলার শিকার হতে হচ্ছে আমাদেরকে এবং হামলার শিকার হতে হচ্ছে আমাদের পরিবারকে। আমরা অতিসত্বর এই এইসব হয়রানির অবসান চাই।