মহান মুক্তিযুদ্ধে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে পরিচালিত ‘অপারেশন হিট অ্যান্ড রানে’ অংশগ্রহণকারী ক্র্যাক প্লাটুনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে শনিবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড এবং ইন্টারকন্টিনেন্টাল ঢাকা যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিধন্য হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকা’ শীর্ষক সেমিনারে এ সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, হাবিবুল আলম বীর প্রতীক, আলী আহমেদ জিয়াউদ্দিন বীরপ্রতীক, আবদুস সামাদ বীরপ্রতীক, শহীদ আবু বকর বীরবিক্রম, মুনীর আলম মীর্জা বাদল এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দুই কর্মী শহীদ খাজা নিজামুদ্দীন আহমেদ বীর উত্তম ও শহীদ ওসমানকে সম্মাননা জানানো হয়।
সেমিনার ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীর সভাপতিত্বে এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, ক্র্যাক প্ল্যাটুনের সদস্য হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক ও আলী আহমেদ জিয়াউদ্দিন বীরপ্রতীক। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার মইন গনি।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি দখলদারদের অত্যাচারে চারদিকে যখন ধ্বংস আর মৃত্যুর বিভীষিকা, তখন বৈদেশিক সহায়তার আশায় পাকিস্তানিরা বাইরের দুনিয়াকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখানোর জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানায়। ১৯৭১ সালের ৯ জুনই তাদের ওঠার কথা ছিল ইন্টারকন্টিনেন্টালে।
ঠিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় যখন বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি বহনকারী গাড়িটি হোটেল গেটে এসে পৌঁছায়, তখনই ক্র্যাক প্ল্যাটুনের সদস্যরা হোটেলে সফলভাবে গ্রেনেড চার্জ করে। গ্রেনেডের আঘাতে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধিদের বহনকারী গাড়িটি ও হোটেলের প্রবেশপথ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ঢাকা শহরে প্রথম গেরিলা অপারেশন ছিল এটি যা ইতিহাসে ‘অপারেশন হিট অ্যান্ড রান’ নামে পরিচিত। এর মাধ্যমেই সারা বিশ্ব জেনে যায় ঢাকার কেন্দ্রস্থলেও বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঢুকে পড়েছে। কোথাও আর পাকিস্তানিদের নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে বাতিল হয়ে যায় বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তার বিষয়টিও।
এরপর বীর মুক্তিযোদ্ধারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দ্বিতীয় সফল গেরিলা অপারেশন চালান ১৯৭১ সালের ১১ আগস্ট।