মোহাম্মদ নাঈম, সৌম্য সরকার, সাকিব আল হাসান। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরের তিনটি নেটে পাশাপাশি তিন ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং খুব মনোযোগে দেখছিলেন দূরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। এক নেটে আবার সাকিবকে বোলিং করছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এই দৃশ্যটা নিশ্চয়ই বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে স্বস্তি দেবে। জিম্বাবুয়ে থেকেই যে সৌম্য, সাকিব ও মোস্তাফিজ চোটের শঙ্কা বয়ে দেশে ফিরেছিলেন!
ভয় তো দূর হলো। এরপর প্রাণবন্ত অনুশীলনে কাল শুরু হতে যাওয়া অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রস্তুতি নেওয়া যাক! আজ বিকেলে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতির ভাবটা এমনই ছিল। সাকিব যেমন তাঁর ব্যাটিং অনুশীলনের শেষে দলের ফাস্ট বোলারদের সঙ্গে ছোট ছোট লক্ষ্য বেঁধে ব্যাটিং অনুশীলন করছিলেন।
তরুণ বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলামের বোলিংয়ে যেমন ১ বলে ৩ রান করার চ্যালেঞ্জ নেন সাকিব। আম্পায়ারের দায়িত্বে ছিলেন পেস বোলিং ওটিস গিবসন। বোলিং মার্ক থেকে চেঁচিয়ে শরীফুল সাকিবকে বলেন, ‘ফাইন লেগ ভেতরে, পয়েন্টের ফিল্ডার সীমানায়।’ বার্তাটা সাকিব পর্যন্ত পৌঁছাল না। গিবসন তখন হলেন বার্তা বাহক। হাতের ইশারায় সাকিবকে বুঝিয়ে দলেন কোথায় আছেন কোন ফিল্ডার, যা কল্পনা করলেই আঁচ করা যায়, বলটা শরীফুল করবেন ওয়াইডের সীমানায় ইয়র্কার লেংথে। কিন্তু শরীফুল খেললেন জুয়া। ওয়াইড ইয়র্কারের জায়গায় করলেও লেগ স্টাম্পের লেংথ বল, যা সাকিব ফ্লিক করলেন সজোরে।
সাকিবের দাবি, ‘এটা নিশ্চিত চার। ফাইন লেগ তো উপরে!’ কিন্তু শরীফুল একমত নন। তিনি একবার তাকাচ্ছেন গিবসনের দিকে, আরেকবার সাকিবের দিকে। এমন সময় মুখে দুষ্টামির হাসি নিয়ে এগিয়ে এলেন মোস্তাফিজ, যিনি সাধারণত ফাইন লেগেই ফিল্ডিং করেন। তিনি হাসতে হাসতে শরীফুলকে বলছিলেন, ‘আমি তো ওখানে ওইখানেই ফিল্ডিং করি, আমি জানি এটা চার।’
এমন ছোট ছোট প্রতিযোগিতা চলল সারা বিকেল ভর। সৌম্য, সাকিব, নাঈম নেট ছাড়ার পর ব্যাটিং অনুশীলন করেছেন মাহমুদউল্লাহ, নুরুল হাসান ও আফিফ হোসেন। শামীম হোসেন, মেহেদী হাসান এলেন এদের পর। যেন একে একে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের সম্ভাব্য এক থেকে আট ব্যাটসম্যানই ক্রমানুসারে অনুশীলন করলেন।
বোলিং আক্রমণে যে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোস্তাফিজ ও তাসকিনের থাকাটা প্রায় নিশ্চিত। চমক হয়ে আসতে পারেন শরীফুলও। সে ক্ষেত্রে মূল তিন পেসারের একজনকে জায়গা ছাড়তে হবে। বিতর্ক আছে স্পিনারদের নিয়েও। মেহেদীর অফ স্পিন নাকি নাসুম আহমেদের বাঁহাতি স্পিন হবে সাকিবের সঙ্গী? এই প্রশ্নটা হয়তো ম্যাচের আগপর্যন্ত টিম ম্যানেজমেন্টকেও ভোগাবে।