আইজল: মিজোরামের আন্তঃরাজ্য সীমান্ত এলাকা থেকে আসাম পুলিশের ক্যাম্প সরানোর চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার, জানান গৃহমন্ত্রী লালচামলিয়ানা।
এক সাক্ষাৎকারে গৃহমন্ত্রী লালচামলিয়ানা জানান, আন্তঃরাজ্য সীমান্ত বিবাদের জেরে গত বছরের জুন মাসে মিজোরামের আইতলাং, বুয়ারচেপ এবং সাইহাপুই ‘ভি’ এলাকায় আসাম পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করেছে। ওই সব ক্যাম্প সরানোর জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে মিজোরাম সরকার। তিনি জানান, অসমের কাছাড়, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি জেলার সঙ্গে মিজোরামের ১৬৪.৬ কিলোমিটার দীর্ঘ আন্তঃরাজ্য সীমানা রয়েছে।
বিরোধী কংগ্রেস নেতা লালরিন্দিকা রাল্টের এক বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে লালচামলিয়ানা বলেন, মিজোরাম সরকার অসমের হাইলাকান্দি এবং কাছাড় জেলা-ঘেঁষা বুয়ারচেপ এবং সাইহাপুই ‘ভি’-র সীমান্তবর্তী এলাকা আইতলাং থেকে আসাম পুলিশের ক্যাম্প প্রত্যাহার করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকার অসমের সাথে রাজ্যের সীমান্ত পাহারা দিতে মিজোরাম পুলিশকে আরও শক্তিশালী করতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে। তাই ওই সব এলাকায় আসাম পুলিশের নজরদারির আর প্রয়োজন হবে না।
এক জিজ্ঞাসার উত্তরে গৃহমন্ত্রী লালচামলিয়ানা বলেন, প্রতিবেশী উভয় রাজ্যের আইনসভা সীমানা বিবাদ সম্পর্কে একে অপরকে দোষারোপ করছে, তা-ও অসম এবং মিজোরাম সরকার আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে চাইছে। তিনি বলেন, ১৯৮৭ সালের ২০ আগস্ট নির্ধারিত আন্তঃরাজ্য ইনার লাইনে কাছাড়ের দক্ষিণ সীমান্তবর্তী অবস্থানগুলি স্বীকার করেছে মিজোরাম সরকার।
গৃহমন্ত্রী লালচামলিয়ানার অভিযোগ, ইনার লাইনের অধীনে বিশাল পরিমাণ এলাকা বর্তমানে অসমের দখলে রয়েছে বা অসমের অধীনে চলে গেছে। রাজ্য বিধানসভাকেও নাকি তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁরা এখনও মিজোরামের কোনও অঞ্চল হারাননি। তবে যতটুকু অসমে দখলে গেছে, সেগুলি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। মিজোরামের প্রকৃত ভূখণ্ড, যা বর্তমানে অসমের অধীনে, তা হয়ত পরিমাপ এবং প্রকাশ করা সম্ভব নয়। বলেন, ১৮৭৫ সালে জারিকৃত নোটিশ অনুযায়ী সীমানাকে মেনে নিতে রাজ্য সরকার এবং মিজো নাগরিকরা দৃঢ়-প্রতিজ্ঞ। তবে এটা ঠিক, মিজোরাম হারানো সীমান্তবর্তী ভূখণ্ড দখলে আনবে।
প্রসঙ্গক্রমে গৃহমন্ত্রী বলেন, যদিও উভয় রাজ্য সরকার জেলা প্রশাসন থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্তর পর্যন্ত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দীর্ঘদিনের সীমান্ত বিরোধের সমাধান করার চেষ্টা করছে, এখন পর্যন্ত কোনও উল্লেখযোগ্য ফলাফল সাধিত হয়নি। তিনি বলেন, মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা গত বছরের নভেম্বরে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের উপস্থিতিতে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। ওই বৈঠকে আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সকল স্টেকহোল্ডার সহ তাঁদের নিজস্ব প্যানেল তৈরি করতে সম্মত হয়েছেন দুই রাজ্যের প্রধান। এর পর অবশ্য উভয় নেতা সময় সময় মুখ্যমন্ত্রী স্তরে আলোচনা করছেন, বলেন মিজোরামের গৃহমন্ত্রী লালচামলিয়ানা।