।। খালিদ ইবনে আমিন ।।
আওয়ামী মাফিয়াতন্ত্রের সাড়ে ১৬ বছরের দুঃশাসনের অবসান ঘটে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালানোর মধ্য দিয়ে। তার শাসনামলে বাংলাদেশের ৯টি অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তাতে শেখ হাসিনা ও তার স্বজনদের সঙ্গে টিউলিপ সিদ্দিকের নামও উঠে আসে। ক্ষমতার অপব্যবহার ও অবৈধ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের অভিযোগে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জাতীয়-আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এ সংবাদ প্রচার হওয়ার পর, বিষয়টি নিয়ে বৃটেনের বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর ও সম্পাদকীয় প্রকাশ হতে থাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার পতন ও পালানোর পর লন্ডন ও বাংলাদেশে টিউলিপের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে থাকে। এদিকে ইংল্যান্ডে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে সে দেশের ইকোনমিক সেক্রেটারি টু দ্য ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার পদ থেকে চলতি বছর ১৪ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক, যখন তার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলমান ছিল। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল টিউলিপের কাঁধে। অথচ তিনি নিজেই …….! এমনকি টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধীদলীয় কনজারভেটিভ পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য কেমি বাদেনোচ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে আসে, শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন দুর্নীতিবাজ এমপি-মন্ত্রীর সম্পত্তি টিউলিপের ব্যবহার করা নিয়ে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে টিউলিপ তার বিষয়ে তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (মন্ত্রী পদমর্যাদার স্বাধীন উপদেষ্টা) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি লেখেন। মন্ত্রীদের আচার-আচরণ, নীতিনৈতিকতা ও জবাবদিহির বিষয়ে ম্যাগনাস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শেখ মুজিব দৌহিত্রী টিউলিপ সিদ্দিক ২০১৫ সালে প্রথম যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর গত বছরের ৪ জুলাই অনুষ্ঠিত যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের হ্যাম্পস্টেড অ্যান্ড হাইগেট আসন থেকে টানা চতুর্থবারের মতো পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য টাইম’-এর অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, পাসপোর্ট ডেটাবেজ অনুযায়ী, টিউলিপের পাসপোর্ট ১৭ জানুয়ারি সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত ছিল। ১৮ জানুয়ারি ২০১১ সালে তিনি ঢাকায় এক সিম্পোজিয়ামে অংশ নেন। দুদিন পর তার খালা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মালয়েশিয়ার ফার্স্ট লেডির সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন তিনি। টিউলিপ ২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে জাতিসংঘের ৬৬তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান করেন। এছাড়া তিনি ২০১৩ সালে শেখ হাসিনার মস্কো সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকেও উপস্থিত ছিলেন। ওই সফরের ছবি ও সংবাদ বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম ফলাও করে প্রকাশ করে। সম্প্রতি এই বিষয়গুলো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এলে সব ওলটপালট হতে থাকে।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশের আদালত দুদকের মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি ও বিচার কার্যক্রম শুরু করেছে। টিউলিপ বাংলাদেশে তার মামলার বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের ১৪ এপ্রিল সংখ্যায় বলেছেন, তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’। অন্যদিকে দুদক বলছে, তার বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার চালানো হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাচ্যুত পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি এবং যুক্তরাজ্যের এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিগত ১৩ বছরের আয়কর নথি চলতি বছর ৩ জুন জব্ধ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যদি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তবে তদন্তকারী দল অনুসন্ধানের প্রয়োজনে যে কারো আয়কর নথি পর্যালোচনার জন্য জব্ধ করতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এনআইডি তথ্যভাণ্ডারে টিউলিপের যে তথ্য পাওয়া যায়, তার জন্মস্থান ঢাকা, ভোটার এলাকা ধানমন্ডি, পেশা ‘বেসরকারি চাকরি’। এনআইডির তথ্যে ট্যাগ হিসেবে আছে, ‘মাইগ্রেটেড’ বা অভিবাসী। এনআইডি সার্ভারে টিউলিপের বাংলাদেশি পাসপোর্টের নম্বরও উল্লেখ রয়েছে। এসব প্রমাণ থাকার পরও টিউলিপ দাবি করছেন, তিনি কেবলই ব্রিটিশ নাগরিক। কিন্তু জানা যায় তার বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ও এনআইডি কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের ভোটার এবং তার পাসপোর্টও রয়েছে।
টিউলিপের বাংলাদেশি নাগরিকত্ব-সংক্রান্ত নথিগুলো যাচাই করে দেখা যায়, তিনি- টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক নামে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) গ্রহণ করেন ২০১১ সালে। তাতে তার খালা শেখ হাসিনার ধানমন্ডির ৫ নম্বর সড়কের বাসা সুধা সদনের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালে টিউলিপের নামে যখন দ্বিতীয় পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়, তখন তার খালা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এই পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি। পাসপোর্ট অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে টিউলিপ ১৯ বছর বয়সে প্রথম বাংলাদেশি পাসপোর্ট গ্রহণ করেন লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে। ওই পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হলে দ্বিতীয় পাসপোর্টে আবেদনে তিনি ‘নতুন আবেদনকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এখানেও মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ- বাবার নাম ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক, মায়ের নাম রেহানা সিদ্দিক। স্থায়ী ঠিকানা দেন সুধা সদন, ধানমন্ডি, ঢাকা। জাতীয়তা বাংলাদেশি, জন্মস্থান লন্ডন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে বৃটেনের সাংবাদিকরা কোনো এক পরিস্থিতিতে টিউলিপকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তিনি কি বাংলাদেশে আটক এক ব্রিটিশ আইনজীবীর মামলায় হস্তক্ষেপ করতে পারবেন? উত্তরে টিউলিপ ব্রিটিশ সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আপনারা কি আমাকে বাংলাদেশি বলছেন? আমি ব্রিটিশ, সাবধানে কথা বলুন, আমি ব্রিটিশ এমপি…আমি বাংলাদেশি নই।’ টিউলিপের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউডের এক মুখপাত্র মতে, ‘টিউলিপ কখনো বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি গ্রহণ করেননি এবং শৈশবের পর থেকে কোনো পাসপোর্টও রাখেননি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রায় এক বছর ধরে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ টিউলিপের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য প্রচার চালাচ্ছে।’ (সূত্রঃ ১২ আগস্ট, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ব্রিটিশ সংবাদপত্র) উপরোক্ত তথ্য-উপাত্তের আলোকে, যা নির্জলা মিথ্যাচার।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের দপ্তরগুলোতে ব্রিটিশ এই এমপির নাগরিকত্বের পক্ষে প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও তিনি নিজেকে কেবলই ব্রিটিশ দাবি করে যাচ্ছেন। দ্বৈত নাগরিকত্বের গোলকধাঁধায় টিউলিপ কাণ্ডে চর্চিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। শেখ মুজিব দৌহিত্রী টিউলিপ ধূম্রজালে রেখেছেন তথ্যকর্মী, দর্শকশ্রোতা ও পাঠককে। তাকে নিয়ে নিত্যনতুন কৌতূহলের জন্ম হচ্ছে পাঠক মনে।
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের পর চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে পলাতক শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ১০ সদস্যের এনআইডি ‘লক’ করে দেয় ইসি। এর মধ্যে টিউলিপও রয়েছেন। এনআইডি সেবার বিষয়ে ইসির সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ, তারা লক করা এনআইডির তথ্য দেখতে পায় না। ফলে সব ধরনের দাপ্তরিক সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত থাকবেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে জানা যায়, এক সময়ে টিউলিপ লন্ডনের কিংস ক্রসে ৬ লাখ ৫০ হাজার পাউন্ড মূল্যের যে ফ্ল্যাটটিতে থাকতেন, প্রথমে তিনি দাবি করেছিলেন, সেটি তার বাবা-মা তাকে দিয়েছিলেন। পরে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, ওই ফ্ল্যাটের অর্থায়ন করেছিলেন শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্পৃক্ত আবদুল মোতালিফ নামক একজন ব্যবসায়ী।
টিউলিপ এমন এক সংবেদনশীল পদে থেকেও বাংলাদেশে তার পরিবারিক পরিচিতি কাজে লাগিয়ে ঢাকা ও লন্ডনে অবৈধ আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা নিয়েছেন, যা উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে মন্ত্রিত্বের পদে থাকার নৈতিক ভিত্তি ও নীতিগত প্রশ্ন উঠে আসে দুদেশের নাগরিক মননে। বিশেষত তিনি অ্যান্টি-করাপশন মন্ত্রী ছিলেন। মন্ত্রী হওয়ার সময় তার সম্পদের ঘোষণায় স্বচ্ছতা ও অন্যান্য বিষয়াবলী প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।
টিউলিপ চলতি বছর ১০ আগস্ট ইংল্যান্ডের বিখ্যাত পত্রিকা গার্ডিয়ানকে এক সাক্ষাৎকার দেন। তার শিরোনাম হয় এ রকম, “I’m collateral damage’: ex-minister Tulip Siddiq on her Bangladesh corruption trial”। সাক্ষাৎকারে তিনি জানান যে, গত বছরের ৫ আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ও বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের মধ্যে বিরোধে তিনি এগুলোর ‘পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার’ নিজেকে “collateral damage” হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এ ঘটনাগুলোর কারণে তিনি ব্রিটিশ সরকারের কাজে বিভ্রান্তি তৈরি না করতে (to avoid distraction) জানুয়ারি ২০২৫ এ তার পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইন অনুযায়ী যাঁদের বাংলাদেশের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, তাঁরা বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে গণ্য। কেউ বাংলাদেশি নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে চাইলে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদনের মাধ্যমে সেটা করতে পারেন। তবে বাংলাদেশ সরকারের বিধি অনুযায়ী, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো নাগরিক বাংলাদেশের প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রত্যাহার না করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তার নাগরিকত্ব বহাল থাকবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভিনদেশীদের নাগরিকত্ব লাভের নানা নিয়মকানুন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশের নাগরিকত্ব পেতে হলে শপথ নেওয়ার আগে নিজ দেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে হয়। তবে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব পেতে শপথ নিতে হয় না। ফলে নিজ দেশের নাগরিকত্বও ত্যাগ করতে হয় না। টিউলিপ যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর মা-বাবা উভয়েই জন্মসূত্রে বাংলাদেশের নাগরিক। তাই পিতা-মাতার সূত্রে টিউলিপ একই সঙ্গে ব্রিটিশ ও বাংলাদেশি নাগরিকত্ব রাখতে পারেন, যেহেতু উভয় দেশই দ্বৈত নাগরিকত্বের অনুমোদন দেয়। তবে প্রশ্ন হলো, তথ্যপ্রদানে এই গোঁজামিল কেন?
১৯৪৮ সালের আগে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সব প্রজাই ছিল ‘ব্রিটিশ সাবজেক্ট’। অর্থাৎ সকল মানুষই আইনি অর্থে ছিল ব্রিটিশ প্রজা । ১৯৪৯ সালে কমনওয়েলথ অব নেশনস গঠনের পর সদস্য দেশগুলো নিজস্ব নাগরিকত্ব ব্যবস্থা চালু করে। তবে ‘ব্রিটিশ সাবজেক্ট’ বা ‘কমনওয়েলথ সিটিজেন’ ধারণা থেকে যায়। সে সময় কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকরা সহজে ব্রিটেনে গিয়ে বসবাস ও কাজ করতে পারতেন। ১৯৬০-এর দশকে ভারত, পাকিস্তান, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা বা ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের বিপুলসংখ্যক মানুষ উচ্চশিক্ষা ও রুজিরোজগারের সন্ধানে ইংল্যান্ডে আসতে থাকলে। দেশটির সরকার ধীরে ধীরে অভিবাসন নীতিতে কড়াকড়ি শুরু করে এবং ১৯৭০-এর পর সেই সুবিধা সংকুচিত হয়ে এক পর্যায়ে বন্ধ হয়ে যায়। এখন তারা সাধারণ ভিসা প্রক্রিয়ায় ইংল্যান্ডে প্রবেশ করতে পারেন। যদি স্থায়ী বসবাসের অনুমোদন থাকে তবে ভোটাধিকারসহ কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক সুবিধাও পেয়ে থাকেন। উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি অনুযায়ী যে কোনো ব্যক্তি দুই দেশের নাগরিক হতে পারেন। এতে আইনি কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু তিনি সেটা স্বীকার করছেন না। বোঝা যাচ্ছে টিউলিপ সিদ্দিক অসত্যের আশ্রয় নিয়েছেন। তার এই মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা যথেষ্ট ম্লান করেছে। টিউলিপ জন্মসূত্রে ব্রিটিশ নাগরিক। মন্ত্রী ছিলেন, এখনো সংসদ সদস্য আছেন। যুক্তরাজ্যের সরকার যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে তবে টিউলিপের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেবে। এর ব্যত্যয় হলে বৃটিশ সরকারের জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতি হতে পারে বৈশ্বিক পরিমন্ডলে।
লেখক : সাংবাদিক