গেল বছরের ৯ মার্চ পারিবারিক আয়োজনে ব্যবসায়ী পাত্র কানাডার টরেন্টো প্রবাসী হিশাম চিশতীর সঙ্গে ঢাকাই নায়িকা তমা মির্জার বাগদান হয়। বিয়ে হয় ৭ মে। দুজন দুদেশে থাকায় তাদের দাম্পত্য মধুরতায় একটা ছিদ্র থেকেই যায়। করোনাকালে অসুস্থ মাকে দেখতে কানাডা থেকে দেশে ফিরেন হিশাম।
সম্প্রতি রাজধানীর বাড্ডা থানায় তমা ও তার স্বামী হিশাম পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা করেছেন। তমার করা মামলায় যৌতুক, নির্যাতন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অপরদিকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তমার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন হিশাম।
এ নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে যখন গুঞ্জন ভারি হচ্ছে তখন গতকাল শনিবার রাতে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন তমা মির্জা। ৩৯ মিনিটের ওই লাইভের শেষ দিকে তমা জানান, তিনি এখন চরম এক পর্যায়ে পৌঁছেছেন। আত্মহত্যার ইঙ্গিত দিয়ে তমা বলেন, ‘যদি আমার কিছু হয়, তবে এর জন্য দায়ী থাকবেন হিশাম চিশতী।’
ফেসবুক লাইভের শুরুতে তমা বলেন, ‘আমার এক কমন বন্ধুর মাধ্যমে হিশামের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। প্রথমে তাকে আমি অত্যন্ত ভদ্র ছেলে হিসেবে পেয়েছি। তার কনভেন্সির পাওয়ার খুবই বেশি, যার ফলে অল্প সময়ের মধ্যে আমি তাকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিই।’
স্বামীর সম্পর্কে তমা মির্জা আরও বলেন, ‘স্বামী বা স্ত্রী হিসেবে কে কাকে কী গিফট করেছেন, তা বলাটাও খুব ছোটলোকি বিষয়। সে বলেছে আমাকে নাকি ২০ লাখ টাকা ধার দিয়েছে। এত টাকা দিলে তো প্রমাণ থাকে, হয়তো অ্যাকাউন্টে দেবে বা আমার অ্যাকাউন্টে জমা হবে। এগুলো প্রমাণ দিক। একটা প্রমাণ দিলেই হবে। সে আমাকে নিয়ে নাকি গুরতে গেছে! মূলত আমার সঙ্গে সে যেতো। সম্প্রতি আমি ফ্যাশন ইউকে শো স্টপার হিসেবে গিয়েছি। আমার স্বামী ফ্রি লোডে গেছে, আয়োজকদের কাছে খোঁজ নিলেও হবে।’
ডিভোর্স সম্পর্কে তমা বলেন, ‘সে ডিভোর্স চেয়েছে, আমি নাকি তা দিইনি। অথচ গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর আমি ডিভোর্স ফাইল করি। এটা বিয়ের ছয় মাসের মধ্যে। সে কিন্তু ডিভোর্স ফাইল করেননি এবং আমি সেখানে উল্লেখ করেছি, কী কী কারণে আমি এটা করতে চাইছি।’
শাশুড়ির প্রশংসা করে তমা বলেন, ‘আমার শাশুড়ি খুব ভালো মানুষ। তিনি মারা গেছেন। কিডনি রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসকরা বলে দিয়েছিলেন, তিনি আর বেশিদিন বাঁচবেন না। তিনি চলাফেরা করতে পারতেন না। হুইল চেয়ারে করে সেই মানুষ আমার বাসায় এসে বললেন, “আমি বেঁচে থাকতে এটা দেখতে পারবো না যে, তমা আমার ছেলেকে ডিভোর্স দিয়েছে। যেহেতু আমি মৃত্যু পথযাত্রী, তমা তুমি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ডিভোর্সটা তুলে নাও।” সব মিলিয়ে আমি ডিসেম্বরের ২৫ বা ২৬ তারিখে সেটা তুলে নিই।’
মামলা প্রসঙ্গে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘মামলায় সে বলেছে আমি তাকে হত্যা করতে চেয়েছি। তার বন্ধুরা আমাকে বলেছে, সে জাস্ট ৫ মিনিটের জন্য আমার সাথে কথা বলতে চায়। যেদি রাতে সে আমাদের বাসায় আসে তার বন্ধুর ফোন, ভাইয়ের ফোনের রেকর্ডিং আমার কাছে আছে। পরের দিন আমাদের মিউচুয়াল ডিভোর্স হবে। যখন সে বাসায় আসলো তখন রাত ৩টা বাজে। এসেই সে দুর্ব্যবহার শুরু করে। সে আমার ফোন নিয়ে নেয়। বলে, সে আমার ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাস দেবে। সে লিখেছে, ‘আমি তমা মির্জা, আমি পরকীয়া করি। আমার স্বামী আমাকে হাতেনাতে ধরেছে’- এগুলো। আমি বললাম, কী সমস্যা বলো! তার পকেটের মধ্যে ৩০-৪০টা ঘুমের ওষুধ। মদের গন্ধও আসছে। তার সঙ্গে দারোয়ান ছিল। আমি তাকে গিয়ে বললাম, হিশামের অবস্থা তো ভালো না। বাসায় ফোন দিন।’