পঙ্কজকুমার দেব, হাফলং: জাপানিজ প্রযুক্তিতে চারলেন যুক্ত মহাসড়ক কবে নির্মাণ হবে তা ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি অফ ইণ্ডিয়া (নাহাই) বা সরকার পক্ষ জানে। কারণ তিন চার বছর ধরে উপরোক্ত ইস্যুতে চর্চা চলছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো জাটিঙ্গা-হারাঙ্গাজাও সড়ক সচল রাখতে গিয়ে নাহাই সেই ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করে আসছে। কিন্তু বাস্তবে পথের অবস্থার পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় নি।
আজ পথের হাল তেমন সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। আসন্ন বর্ষায় পথ সেই অতীতের পর্যায়ে চলে আসবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। প্রকৃতার্থে শিলচরের লক্ষ্ণী মোটর্স পথের বারোটা বাজাতে সক্ষম হয়। বিশেষ করে তদানীন্তন প্রজেক্ট ডিরেক্টর কার্গে কামকি এবং মহাপাত্র পদবির জনৈক অ্যাকাউন্টস অফিসারের বদান্যতায় শিলচরের লক্ষ্ণী মোটর্সের পাহাড়ের মহাসড়ক নির্মাণ কাজে অভিষেক ঘটে। কামকির আশীর্বাদে লক্ষ্ণী গোষ্ঠী হারাঙ্গাজাও এলাকায় বেশ সদম্ভে কাজ চালিয়ে যায়। ২০১৭ সালে ভাগে ভাগে একাধিক কাজের বরাত লাভ করে। কিন্তু তেমন কোনো কাজ হয়নি।
পরবর্তীতে জাটিঙ্গা-হারাঙ্গাজাও পঁচিশ কিলোমিটার পথ সচল এবং নির্মাণের জন্য নাহাই ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। এবার কাজের দায়িত্ব লাভ করে রত্না ইনফ্রাস্ট্রাকচার। অভিযোগ মতে রত্না ইনফ্রা লক্ষ্ণী মোটর্স গোষ্ঠীর ভগ্নী সংস্থা। অথচ রত্নারূপী লক্ষ্ণী সেই পথ নির্মাণ করতে গিয়ে বিভিন্ন বাহানা ক্রমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ তথা ভূতাত্ত্বিক সমস্যার কথা তুলে ধরে। এমনকি ২৪ কিলোমিটারের জাটিঙ্গা-নেরিমবাংলো অংশের মেরামতের কাজও সেই রত্না অর্থাৎ লক্ষ্ণীর গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। জাটিঙ্গা-নেরিমবাংলো পথের ভালো অংশে বিটুমিনের কালো আস্তরণ ল্যাপে দিয়ে রত্নার কাজ শেষ হয়।
শুক্রবার জাটিঙ্গার জনৈক যুবক জানান যে শুকনোর মরশুমে নাহাই বা ঠিকাদারি গোষ্ঠীকে পথ নির্মাণে গুরুত্ব দিতে দেখা যায় না। অথচ এরপরই তাঁরা বলে থাকেন যে বৃষ্টির জন্য কাজ সম্ভব নয়। আসলে নিজেদের মুনাফার জন্যই তাঁরা কাজ করে থাকে। হারাঙ্গাজাওয়ের জনৈক ক্রুজার চালক বলে গত কিছুদিন ধরে ওই পথে কাজ হচ্ছে। তবে কাজের গুণগত মান একেবারে নিম্ন। এক বৃষ্টিতে বিটুমিনের কালো আস্তরণ ধুয়ে মুছে চলে যাবে।
এদিকে সড়ক নির্মাণে সামগ্রিক ব্যর্থ রত্না ওরফে লক্ষ্ণী গোষ্ঠীকে ফের এক সড়ক মেরামতের দায়িত্ব সমঝে দেয় নাহাই। মাইবাং থেকে হাফলং আসার পথে নেরিমবাংলোর কাছে বর্তমান মহাসড়কের ঠিক ডান দিকে থাকা লোক নির্মান বিভাগের প্রায় দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পথ এবার সচল করবে রত্না ইনফ্রা। পরশু হঠাৎ করেই মহাসড়ক থেকে ডাইভার্শনে থাকা পথ বন্ধ করে দেয় নাহাই।
জানাগেছে ১৯ জানুয়ারি অসমের হাফলঙে অনুষ্ঠিতব্য রাজ্য কেবিনেটের জন্যই তড়িঘড়ি এই পথ নির্মাণ করার দায়িত্ব রত্নাকে দেওয়া হয়েছে। অথচ পার্বত্য ডিমা হাসাও জেলায় ওইসব পথ নির্মাণ কাজ করার জন্য অভিজ্ঞ ঠিকাদার থাকার পরও কাজের অভিজ্ঞতা নাথাকা রত্না বা লক্ষ্ণীকে ফের কাজের দায়িত্ব তুলে দেওয়ার ভেতরের রহস্য কি ? আসলে পার্বত্য ডিমা হাসাও জেলায় মহাসড়ক নির্মাণের নামে আজও সেই লুটপাট চলছে। তাই বছরের পর বছর অতিক্রান্ত হলেও পথের হাল ফিরছে না। যেন এক কামধেনু!