শিলচর, আসাম: অসমের ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার মাকুমে সম্প্রতি বাংলা ও হিন্দি ভাষীদের প্রতিষ্ঠানে হানা দিয়ে লাচিত সেনা নামক এক সংগঠনের সদস্যরা সমস্ত নামফলক অসমিয়া ভাষায় পরিবর্তিত করতে হবে বলে ফতোয়া জারি করেছে এবং ,অন্যথা তাঁরা দেখে নেবে বলে হুমকি দিয়েছে। এমনকি কোথাও বাংলা পত্র পত্রিকা বিক্রি করা যাবেনা বলেও তাঁরা ফতোয়া দিয়েছে। এসবের পরিপ্রেক্ষিতে দুষ্কৃতীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবার দাবিতে এবার সরব হল “আমরা বাঙালি” সংগঠন।
এক প্রেস বার্তায় “আমরা বাঙালি” র আসাম রাজ্য কমিটির সচিব সাধন পুরকায়স্থ বলেন যে এর আগে একই সংগঠনের সদস্যদের আমরা গৌহাটিতে বাংলা নামফলকে কালো কালি লেপন ও সম্মানীয় ভারত সেবাশ্রমের মতো সংগঠনের কর্মকর্তাদের অসমিয়া নামফলক লাগাতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে। তিনি বলেন বেসরকারি সংগঠনের সদস্যরা কি ভাষায় নামফলক ব্যবহার করবেন তাতে কারো জোর খাটানো অনুচিত। যেহেতু বাংলা একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ভাষা তাই তাঁরা চাইলে এটি ব্যবহার করতেই পারেন। এই স্বাধীনতা আমাদের সংবিধান প্রদত্ত। কাজেই এইসব উগ্র জাতীয়তাবাদী সংগঠনের সদস্যরা সম্পূর্ণ আইনবিরোধী কাজকর্ম চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন ইচ্ছে করলে কেউ হিন্দি বা বাংলার সাথে অসমিয়া ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু হিন্দি বা বাংলা একদমই ব্যবহার করা যাবেনা এই ধরনের ফতোয়া কেউ দিতে পারেন না। বাংলা স্কুলের নামফলকে বাংলা থাকবেনা এরকম হাস্যকর যুক্তি কেউ মানতে পারবেন না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
সাধনবাবু বলেন সাম্প্রতিক ভাষা বিতর্কে আমরা যেমন কিছু উগ্র জাতীয়তাবাদী তথা বাঙালি বিদ্বেষী লোকজনের পরিচয় পেয়েছি তেমনি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ও যুক্তিবাদী অসমিয়া সমাজকেও মুখ খুলতে দেখেছি। তাই আমরা আশা করছি তাঁরা এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরব হবেন। তিনি বলেন সরকার যদি এসব ব্যাপারে নিষ্ক্রিয় থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে যে এসবের পিছনে তাঁদের নীরব প্রশ্রয় রয়েছে। তাই আমরা অবিলম্বে সরকারকে এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেবার আবেদন জানাচ্ছি।
আমরা বাঙালি’র পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় প্রচার সচিব আবুল কালাম বাহার এই খবর জানিয়েছেন।