অমর সাহা, কলকাতা: করোনার জন্য আদালতের আদেশে পশ্চিমবঙ্গে এ পর্যন্ত ১২ হাজার বন্দি মুক্তি পেয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে সম্প্রতি পাঠানো এক চিঠিতে একথা জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ কারা দপ্তরের আইজি পীযূষ পান্ডে।
করোনার সক্রমণ এবং মৃত্যু মিছিল এখনো অব্যাহত পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা ভারতে। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যু এবং সংক্রমণের সংখ্যা। তবুও ভারত সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এই মৃত্যু ও সংক্রমণ মিছিলের রাশ টানতে মাঠে নেমে আছে।
করোনা ভারতজুড়ে ছড়িয়ে পড়লে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টসহ বিভিন্ন রাজ্যের হাইকোর্ট দেশের বিভিন্ন কারাগারে বন্দিদের অবিলম্বে জামিন এবং প্যারোলে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয়। গত মার্চ মাসের শেষের দিকে এসব আদেশ দেওয়া হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার রাজ্যের ৬০টি কারাগারে বন্দিদের সাধারণ জামিন ও প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেয়।
পশ্চিমবঙ্গ কারা দপ্তরের আইজি পীযূষ পান্ডে জানিয়েছেন , যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদের ১ হাজার ৪২৬ জন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিকে ৯০ দিনের জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আর রাজ্য লিগ্যাল সার্ভিসেস অথরিটির সুপারিশে ৩ হাজার ২৩০ জন বিচারাধীন বন্দিকে ৩ মাসের অন্তবর্তী জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। এছাড়াও বিভিন্ন আদালত থেকে বিচারাধীন আরও ৭ হাজার ৬৩৪জন বন্দিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। মার্চের শেষে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারে ২৭ হাজার বন্দি ছিল। পশ্চিমবঙ্গের ৬০টি কারাগারে ২১ হাজার বন্দি রাখার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। এর মধ্যে থেকেই ১২ হাজার ২৯০ জন বন্দিকে জামিন এবং প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়। রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারে থাকা বন্দিদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত কোনো বন্দি নেই । রাজ্যের সমস্ত কারাগারের বন্দি করোনামুক্ত।
গত ১১ জুন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিবি রাধাকৃষ্ণন এবং বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের বন্দিসংখ্যা , জামিন ও প্যারোলে মুক্ত বন্দিদের সংখ্যা ইত্যাদি নিয়ে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চ শুনানী শেষে কারা দপ্তরকে এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপরই রাজ্য সরকার এ সংক্রান্ত তথ্য দিল।
এদিকে সুপ্রিম কোর্ট ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাইকোর্টের নির্দেশেও ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে কয়েকহাজার বন্দিকে।
সংবাদ মাধ্যম সূত্র থেকে জানা যায়, রাজধানী দিল্লির বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ১৭ হাজার ৪৪০ জনের মধ্যে প্যারোলে ও জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় ৩ হাজার ৬৭৮জনকে।
মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে ৩৬ হাজার বন্দির মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার।
উত্তর প্রদেশে ৫০ হাজার বন্দির মধ্যে মুক্তি পায় ১১ হাজার জন।
মধ্যপ্রদেশে ৩৯ হাজার ৫০০ বন্দির মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয় ৬ হাজার ৫০০ জনকে।
গুজরাটে ১৬ হাজার বন্দির মধ্যে মুক্তি পায় ২ হাজার ৫০০ বন্দি।
তামিলনাড়ুতে ১৩ হাজার ৫০০ বন্দির মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয় ৬ হাজার জনকে।
আসামে ১২ হাজার ৮৭ জন বন্দির মধ্যে মুক্তি পায় ৩ হাজার ৫৭৭ জন।
আর ছত্রিশগড়ে ৬ হাজার বাড়তি বন্দির মধ্যে মুক্তি দেওয়া হয় ৩ হাজার ৪১৮জনকে।