পশ্চিমবঙ্গ নিউজ ডেস্ক: কদিন পরই পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই কলকাতায় পড়েছে কেনাকাটার ধুম। নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন শপিংমলে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। এবার সেভাবে বাংলাদেশিদের আগমন তেমন না থাকলেও ভিড় শুরু গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বিক্রি ভালো। অন্যবার শেষের দিকে রাজ্যের জেলাগুলো থেকে ক্রেতারা আসেন। কিন্তু এবার অনেক আগেই এসে গেছেন। বাংলাদেশিদের পাশাপাশি স্থানীয়দের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পেয়ে আপ্লুত কলকাতার বিক্রেতারা।
কলকাতার থ্রি-পিস ব্যবসায়ী রাজেশ তিওয়াড়ি বলেন, বাজার ভালো। এ বাজার এরকমই চলবে ঈদ পর্যন্ত। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে, তা হলো ঈদের পর বাংলাদেশিদের ঢল নামবে কলকাতায়।
শহরের জনপ্রিয় দোকান মিলন। সারা বছর থ্রি-পিসের জন্য বাংলাদেশিদের ভিড় লেগেই থাকে দোকানটিতে। শহরে আসা প্রায় ৮০ ভাগ বাংলাদেশি ক্রেতা এ দোকান থেকেই থ্রি-পিস কিনে থাকেন। ফলে তিওয়াড়ির মতো ব্যবসায়ীরা খুশি।
মঙ্গলবার দেখা যায়, ইফতারের পর বহু মানুষ কেনাকাটা ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এবারেও মিলনে নানা পোশাকের পসরা সাজানো হয়েছে। রাজেশ বলেন, এবারে বেশি চলছে, আজরাক সিল্ক, মসলিন সিল্ক, সামো সিল্ক, অরগাঞ্জা ইত্যাদি। তবে হট আইটেম অরগাঞ্জার আনারকলি। তিন হাজার রুপি থেকে শুরু। পুরুষদের পছন্দ পাঠান, জওয়ান, অ্যানিমেল স্টাইলের পোশাক।
জুতা থেকে শুরু করে প্রসাধনীসামগ্রী, থ্রি-পিস লেডিস জিনস, শাড়ি, পাঞ্জাবিসহ নানা কিছু কিনতে কলকাতায় ভিড় করেন বাংলাদেশিরা। এবার কলকাতার নিউ মার্কেট, সিমপার্ক মল, শ্রীলেদার্স, বাজার কলকাতা, কোয়েস্ট মল, সাউথসিটি মলসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে বাংলাদেশি ক্রেতাদের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে।
ঢাকাবাসী জুয়েল ভ্রমণ ভিসায় এসেছে কলকাতায়। বলেন, কলকাতায় পোশাকের দাম অনেক কম। বাংলাদেশের গুণগতমানের পোশাকের দাম অনেকেরই সাধ্যের বাইরে। তাই অনেকেই কলকাতায় কেনাকাটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। যার কারণে কলকাতা থেকে তিনি সেরে ফেলছেন কেনাকাটা।
কেনাকাটার জন্যই কলকাতায় এসেছেন সোহেলি। গত বছরও পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে ঈদের কেনাকাটা করতে কলকাতায় এসেছিলেন। তিনি বলেন, কলকাতায় নারী পোশাক এবং প্রসাধনী সামগ্রী সাধ্যের মধ্যে থাকে এবং ডুপ্লিকেট হয় না। ফলে শুধু ঈদ নয়। পরিবারের বিয়ে বা যেকোনো অনুষ্ঠানে থ্রি-পিস, শাড়ি বা নারী প্রসাধনী সামগ্রী কলকাতা থেকেই কেনেন তিনি। অনেকক্ষেত্রে নিজে না আসতে পারলেও কাউকে দিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
এক বাংলাদেশি ক্রেতাকে দেখা যায়, ভিডিও কলে আত্মীয়ের পছন্দ করা পোশাক কিনছেন। শাফিন বলেন, পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। ফলে ভিডিও কলের মাধ্যমে দেখিয়ে কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে পোশাকের ছবি পাঠিয়ে পছন্দ করেই কিনছি।
কুমিল্লা থেকে আসা হারুন রশিদ জানান, তার পছন্দ শ্রীলেদার্সের জুতা। পরিবারের সদস্যদের জন্য ১১ সেট জুতা কিনেছেন। তিনি বলেন, এবার কলকাতায় আসার মূল উদ্দেশ্য শ্রীলেদার্সের জুতা আর কিছু ব্যাগ কেনা। আরও কিছু নজরে পড়লে, পছন্দ হলে কিনে ফেলব।
সব মিলিয়ে কলকাতায় ঈদের আমেজ শুরু হয়ে গেছে। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, ৫ এপ্রিল থেকে স্থানীয়দের ভিড় বাড়বে। তারপরই ঈদের ছুটিতে বাংলাদেশিরা শহরে আসতে শুরু করবেন।