শীত এলেই এক অন্যভাবে সেজে ওঠে শহর কলকাতা। আর এই মৌসুমে প্রতিবার আরও আকর্ষণ বাড়িয়ে দেয়ে চলচ্চিত্র উৎসব।
সেখানে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সিনেমা উপভোগ করতে ব্যস্ত এখন বঙ্গবাসী। শীতের আমেজ আর রঙিন পর্দায় জমে উঠেছে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। ২৯ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এশিয়ান সিলেকশন পেয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র ছবি ‘নোনা পানি’।
সৈয়দা নিগার বানু নির্মিত ‘নোনা পানি’ সিনেমাটি মনোনীত হয়েছে ‘এশিয়ান সিলেক্ট’ বিভাগে। যা দেখে আপ্লুত শহরবাসী। খুশি পরিচালকও। তার অভিমত, সত্যিকারের সংস্কৃতিপ্রেমী দর্শক আমি কলকাতায় খুঁজে পাই।
পরিচালক সৈয়দা নিগার বানু আরও বলেন, আমরা যখনই সিনেমা বানাই আমাদের স্বপ্ন থাকে যে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটা দেখানো হবে। আর আমার স্বপ্ন পূরণ হল। সিনেমাটি তিনদিন দেখানো হবে। সঙ্গে আরেকদিন বিশেষ স্ক্রিনিং হবে। তাই আমি খুব খুশি। একটিমাত্র বাংলাদেশের ছবি দেখানো হবে। আর সেটা আমার। খুলনায় আমার সিনেমার প্রথম প্রিমিয়ার শো হয়েছিল। সেখানে ৫০০ দর্শক আসনে আটশো মানুষ দেখেছিল। আর কলকাতায় সিনেমাটা দেখার জন্য এত মানুষের ভিড় জমাবেন আমি ভাবতেও পরিনি। সত্যিই ভালো লাগছে।
‘নোনা পানি’র প্রথম শো প্রদর্শিত হয় শনিবার (৯ ডিসেম্বর) কলকাতার রবীন্দ্র সদনে। এরপর ১১ ডিসেম্বর এই সিনেমা দেখানো হবে নজরুল তীর্থ ২-এ, স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৷ ১২ ডিসেম্বরও বিকেল ৫টায় ‘নোনা পানি’ দেখানো হবে প্রাচী সিনেমাতে। বাংলাদেশের এই একটিমাত্র সিনেমাই দেখানো হবে এবারের কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে।
বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের জীবন যাপনের গল্প তুলে ধরা হয়েছে ‘নোনা পানি’তে ৷ মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিলকিস বানু, রাকিবুল হক রিপন, জয়িতা মহলনাবিশ, রুবল লোদী, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, বীণা মজুমদার, সুকান্ত সরকার প্রমুখ।
আপ্লুত কলকাতাবাসীও। দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের বাসিন্দা বিক্রম সাহা বলেছেন, আমরা জন্মও বাংলাদেশে। পরে ভারতে এসেছি। এ ধরনের সিনেমা আরও আসা উচিত। কেমন জানি নস্টালজিয়া হয়ে পড়েছিলাম। তবে মনটা খারাপ এবারে একটা সিনেমা এসেছে। আরও আসা উচিত বাংলাদেশের সিনেমা। শেষবার হাওয়া সিনেমা দেখার সময় দুবার লাইন দিয়েও হলে প্রবেশ করতে পারিনি। ফিরে যেতে হয়েছিল। তৃতীয়বার দেখতে পেয়েছি। নোনা পানি অসাধারণ সিনেমা। পরিচালকের চিন্তাভাবনাকে সাধুবাদ জানাই। ক্যামেরার কাজ খুবই ভালো। অসাধারণ কোরিওগ্রাফি।
অপর এক শহরবাসী বলেছেন, খুবই ভালো সিনেমা। অসাধারণ অনুভব হলো। সাধারণত বাংলা নাটক সামাজিক মাধ্যমের বাংলাদেশি তারকাদের দেখতে পাই। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব আর কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভাল, এ দুটোতেই বাংলাদেশ সিনেমা দেখতে পাই। আমরা আরও দেখতে চাই। বাংলাদেশে সিনেমার কাজ এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগের তুলনায় বেশ শক্তিশালী সিনেমা বানাচ্ছেন তারা।
এদিন স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় সিনেমার প্রদর্শনী হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় দুপুর দুটোয়। শনিবার সিনেমাটি একবারই প্রদর্শিত হয়েছে। ফলে সব বয়সের মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।