কলকাতা: অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগে আট বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ। বুধবার (১৪ নভেম্বর) রাতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার খরদহ থানার পুলিশ তাদের আটক করেছে।
জানা যায়, ওই জেলার খরদহ থানার অন্তর্গত তিনটি এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতো সেসব বাংলাদেশিরা। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ এবং হাতে নাতে তাদের ধরা হয়। প্রাথমিকভাবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় তারা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক এবং অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে তারা ভারতে বসবাস করছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কারো কাছেই ভারতে প্রবেশ ও বসবাস করার বৈধ নথি ছিল না। তাদের বিরুদ্ধে ১৪এ (৬) ফরেনার্স অ্যাক্ট এবং পাসপোর্ট আইনের ১২ ধারায় মামলা করা হয়েছে।
আটকরা হলেন- সাহিন শেখ (৩৮), নূর আলম (২৮), বিলাল শেখ (২৬), আলী শেখ (৫০), চন্দন সাহা (২৩), শহিদুল শেখ (৪০), আল আমিন শেখ (২০), মহম্মদ বাবুল (২৭)। এদের মধ্যে শহিদুল শেখ ও আল আমিন শেখের বাড়ি বাংলাদেশের গোপালগঞ্জে। বাকিদের বাড়ি ফরিদপুর জেলায়।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে তাদের প্রথমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এরপর তাদের ব্যারাকপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। আদালত তাদের প্রত্যেককেই ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজত এর নির্দেশ দেয়। আগামী ২৮ নভেম্বর ফের তাদের আদালতে তোলা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এরা সবাই বাংলাদেশের সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী বলে পরিচিত। সেদেশে সরকার পরিবর্তনের পর প্রাণ বাঁচাতে ভারতে অনুপ্রবেশ করে গা ঢাকা দিয়েছিল।
কলকাতা থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে খরদহ থানার নাকের ডগায় দিনের পর দিন বাংলাদেশিরা কীভাবে আত্মগোপন করেছিল তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
এদিকে বৃহস্পতিবার ঝাড়খণ্ড রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচনী প্রচারণায় গিয়ে অনুপ্রবেশ ইস্যুতে সরব হন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম) নেতৃত্বাধীন রাজ্যটির জোট সরকারকে নিশানা করে শাহ অভিযোগ করেন ভোট ব্যাংকের কারণেই অবৈধ অনুপ্রবেশকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এ সরকার।
ঝাড়খণ্ডের গিরিডিতে একটি নির্বাচনী জনসভায় উপস্থিত থেকে শাহ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার অনুপ্রবেশকারীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের বিষয়টিতে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ অনুপ্রবেশকারীরা কেবল আমাদের জমি দখল করেনি, এ রাজ্যে তাদের পা রাখার জন্য স্থানীয় মেয়েদের বিয়েও করছে।
বিজেপি ক্ষমতায় এলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, একটি পাখিকেও অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তাদের দখল করা প্রতিটি ইঞ্চি জমি পুনরুদ্ধার করতে আমরা কঠোর আইন প্রয়োগ করব।
উল্লেখ্য, আগামী ২০ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় ঝাড়খণ্ডে ৩৮ আসনে ভোট নেওয়া হবে। প্রথম দফায় গত ১৩ নভেম্বর ৪৩ আসনে ভোট নেওয়া হয়। ভোট গণনা আগামী ২৩ নভেম্বর।