সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরকারবিরোধী পোস্ট দেয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আটক বাংলাদেশি লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩) গাজীপুরের কাশিমপুর হাই-সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি মারা যান।
কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুশতাক আহমেদ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে কারাগারের ভেতর হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে কারা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন।
মুশতাকের বাবা আবদুর রাজ্জাক এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘মুশতাককে ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করা হয়েছিল। সেদিন আমার ভাতিজা তার (মুশতাক) সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সে সুস্থ ছিল।’
এদিকে, মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) মধ্যরাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কয়েকটি বামপন্থী ছাত্র সংগঠন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে বারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ হয়ে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যে মিলিত হয়। মিছিল থেকে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর জন্য সরকারকে দায়ী করা হয়েছে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্স বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মামলায় আটক লেখকের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করছি। একইসঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি।’
গত বছরের মে মাসে লেখক মুশতাক আহমেদ, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর, রাষ্ট্রচিন্তার সদস্য দিদারুল ইসলাম ও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক মিনহাজ মান্নানকে র্যাব গ্রেফতার করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক কথাবার্তা ও গুজব ছড়ানোর অভিযোগে এঁরাসহ মোট ১১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করে র্যাব। সেই মামলায় দুজন জামিনে মুক্তি পেলেও মুশতাক ও কিশোরের জামিন আবেদন ছয় বার নাকচ হয়।
মুশতাক আহমেদের নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানার ছোট বালাপুর এলাকার মো. আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি ছিলেন বাণিজ্যিকভাবে দেশে কুমির চাষের অন্যতম প্রবক্তা। @পার্সটুডে