সমীপ / অরবিন্দ, গুয়াহাটি: কৃষক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ আহূত মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর)-এর ১২ ঘণ্টার ভারত বনধ-এর মিশ্র প্রভাব পড়েছে অসমের রাজধানী গুয়াহাটি সহ রাজ্যের অন্যান্য জেলা ও মফসসলে। গুয়াহাটিতে সাধারণ জনজীবন প্রায় সচল ছিল। বেশিরভাব এলাকার দোকানপাট ছিল খোলা, রাস্তায় সরকারি ও ব্যক্তিগত যানবাহন, অটোরিকশা যথারীতি চলাচল করলেও বেসরকারি সিটিবাস রাজপথে নামেনি। মহাগনগরের বেশ কয়েকটি এলাকা থেকে বহু পিকেটার্সকে আটক করেছে পুলিশ।
এদিকে কাছাড় জেলা সদর শিলচর শহরের দোকানপাট, হাট-বাজার, অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজ, যানবাহন চলাচল ছিল বন্ধ। তবে জেলার সাতটি বিধানসভা এলাকার বিভিন্ন এলাকায় বনধ-এর মিশ্র প্রভাব পড়েছে। ধোয়ারবন্দ অঞ্চলে চা বাগানগুলোতে সকালে চা শ্রমিকদের কাজে নিয়ে আসার জন্য গাড়ি গেলেও শ্রমিকরা আসেননি। সোনাইবাজারে ছাত্ররা আন্দোলনের সমর্থনে পথে নেমেছিলেন। কালাইন ও কাটিগড়ায় বনধ-এর তেমন প্রভাব পড়েনি। জেলার অন্যান্য স্থানে জনগণকে এগিয়ে এসে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সংবাদ পাওয়া গেছে।
করিমগঞ্জ জেলায়ও মঙ্গলবারের ১২ ঘণ্টার ভারত বনধ-এর মিশ্র প্রভাব পড়েছে। আজকের বনধকে পূর্ণ সর্মথন জানিয়েছিল বিভিন্ন বিরোধী দল ও সংগঠন। বৃহত্তর পাথারকান্দি অঞ্চলে এদিন সকাল থেকে দীর্ঘ জাতীয় সড়ক কিংবা অন্যত্র পিকেটার্সদের বিশেষ উপস্থিতি ছিল না। তবে বনধ-এর ফলে যাত্রীবাহী বড় যানবাহন চলাচল না করলেও শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে যাত্রীবাহী এপি ও অটো গাড়িগুলো যথারীতি চলাচল করেছে। আজ সকালের দিকে বৃহত্তর পাথারকান্দির লোয়াইরপোয়া, বাজারিছড়া, কটামণি, রাঙ্গামাটি, চাঁদখিরা, সোনাখিরা, কাঁঠালতলি, সলগই, হরিবাসর, রাধাপ্যা রী, বৈঠাখাল এলাকাগুলিতে বিভিন্ন দোকানপাট বন্ধ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো খুলতে শুরু করে। সরকারি অফিস-কাছারিতে উপস্থিতির হার ছিল অতি নগন্য। তবে আজকের বনধ-এর ফলে বেশ কয়েটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক বন্ধ ছিল। অনুরূপ দৃশ্য ছিল জেলার অন্য প্রান্তেও।
গুয়াহাটিতে আজ সকাল থেকে নির্দিষ্ট স্থানে বনধ সমর্থকরা পিকেটিঙে বসেন। বাম ও কংগ্রেস সহ অন্য বিরোধী দল ও সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা নানা এলাকায় নয়া কৃষি আইনের প্ৰতিবাদে মিছিল-বিক্ষোভ সংগঠিত করেছিলেন। দিশপুরে ভারতীয় স্টেট ব্যাংকের মুখ্য কাৰ্যালয়ের প্রবেশপথে এসএফআই সদস্যরা ব্যারিকেড তৈরি করে আধিকারিক-কর্মচারীদের বাধা দেন। তখন পুলিশ বেশ কয়েকজন এসএফআই কর্মীকে আটক করে তুলে নিয়ে যায়। দিশপুরের সুপার মাৰ্কেট, গণেশগুড়ি, পল্টনবাজার, পানবাজার, ফ্যান্সিবাজার ইত্যাদি বহু এলাকায় দোকানপাট সম্পূৰ্ণ খোলা ছিল। তবে জনসমাগম বিশেষ ছিল না। বন্ধ ছিল ওলা-ওবের সার্ভিসও। খোলা ছিল পেট্ৰোল পাম্প। রাজপথে বেসরকারি সিটিবাস চলেনি, তবে অসম রাজ্য পরিবহণের সরকারি বাস যাত্রী পরিষেবা দিয়েছে।
অন্যদিকে শিবসাগর, যোরহাট, তিনসুকিয়া, লামডিং, নগাঁও, হোজাই, গোলাঘাট, মঙ্গলদৈ, দরং প্রভৃতি এলাকা বিশেষে বনধ ছিল কোথাও আংশিক, কোথাও সর্বাত্মক।