অর্থনীতি ডেস্ক: বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে। রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার বা দুই হাজার ৯৮৩ কোটি ডলারে। এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) মার্চ-এপ্রিল সময়ের আমদানি ব্যয় ১১৮ কোটি ডলার পরিশোধের পর সোমবার (৮ই মে) রিজার্ভ ৭ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে।
আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে রিজার্ভ হিসাবায়ন করলে রিজার্ভের পরিমাণ আরও প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার কমবে। সেক্ষেত্রে প্রকৃত রিজার্ভ নামবে ২৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
প্রতি মাসে ছয় বিলিয়ন ডলার হিসাবে এ রিজার্ভ দিয়ে সাড়ে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটাতে পারবে বাংলাদেশ।
আগের দিন রোববার (৭ই মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, আকুর ১১৮ কোটি ডলার বিল পরিশোধ করা হয়েছে। সোমবার যা রিজার্ভের হিসাবে দেখানো হবে।
আওয়ামী লুটপাটে পাচার হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা। প্রবাসী শ্রমিকদের ঘামে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা জমা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকে। আর এই বৈদেশিক মুদ্রা লুটে বিদেশে পাচার করেন আওয়ামী মাফিয়ারা। আওয়ামী ব্যবসায়ী, আওয়ামী লুটেরা রাজনীতিক ও আওয়ামী লীগের তাবেদার আমলারা বছরে হাজারো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে।
অথচ, সরকারি বয়ান তৈরি করা হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আমদানি ব্যয় বেড়েছে। পাচারের ফলে ডলার সঙ্কট দেখা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়ন থেকে ডলার বিক্রি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে।
বৈদেশিক মুদ্রার সঙ্কট কাটানোর জন্য এক পর্যায়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ। এই ঋন মঞ্জুর হলে প্রথম দফায় কিস্তি সরবরাহও পায় বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপরও ডলারের রিজার্ভ কমা ঠেকাতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ সালের এপ্রিলে প্রথমবারের মতো ২৯ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে রিজার্ভ। ওই অর্থবছরের শেষে রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। ৭ বছর পর আবারও ২৯ বিলিয়নের ঘরে নেমে এলো রিজার্ভ। ২০১৭ সালের ২২শে জুন বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে। করোনা মহামারীর মধ্যে আমদানি কমে যায়, বিদেশ ভ্রমণে নানা রকম বাধা নিষেধ জারি থাকার কারণে ডলারের চাহিদা কমে। এ সময়ে প্রবাসী আয়ও বৃদ্ধি পায়। বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশে ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রির হার বাড়িয়ে দেয়। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে রিজার্ভের পরিমাণ ৪৮ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবা উল হক জানান, সামনে রিজার্ভ কমার পাশাপাশি বাড়বে। সময়ে আমদানির দায় মেটাতে রিজার্ভ বিক্রি চলমান। আবার সামনের মাসে বিদেশি ঋণ ও অনুদানের কিছু অর্থ যোগ হবে। তখন রিজার্ভ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি ঘটবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১২ বিলিয়ন বা এক হাজার ২০০ কোটি ডলারের বেশি বিক্রি করেছে। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে প্রতি ডলার ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা দামে বিক্রি করছে।