বিনোদন প্রতিবেদক: লোকসংগীত বাঙালি জাতির সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যে হাজার বছর ধরে প্রবহমান। সংগীতের এ ধারায় মিশে আছে জীবনের গভীর দর্শন, আধ্যাত্মিকতা, প্রেম আর মাটির ঘ্রাণ। লোকগানের সুর-সুধা বিশ্ব দরবারে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ২০১৫ সাল থেকে প্রতিবছর এশিয়ার সবচেয়ে বড় লোকসংগীতের অনুষ্ঠান ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট’ – এর উদ্যোগ নেয়।
তবে ২০১৯ সালে উৎসবের পঞ্চম আসরের পর এটি আর অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির জন্য হয়নি ফোকফেস্ট। ২০২১ সালেও হবে হবে করে শেষপর্যন্ত করোনা ভাইরাসের আতঙ্কেই উৎসবটি করার সুযোগ পায়নি সান ফাউন্ডেশন। পরবর্তী দুই বছরেও উঠেনি আন্তর্জাতিক লোকসংগীতের উৎসবের পর্দা।
ধারাবাহিকভাবে পাঁচ বছরের পরিক্রমায় সংগীতপ্রেমীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট’। সেটি বন্ধ হওয়ায় হতাশ ছিলেন সবাই। আশার কথা হলো, চার বছরের বিরতি কাটিয়ে আবারও ফিরতে চলেছে লোক গানের উৎসবটি। এর সংশ্লিষ্ট বেশ কয়টি সূত্রই সেই আভাস দিয়েছে।
ফোকফেস্ট নিয়ে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সান ফাউন্ডেশনের আলোচনা শুরু হয়েছে। শিল্পী বাছাই প্রক্রিয়াও চলছে। সাধারণত শীতকালেই বসে গানের উৎসবটি। সেই ভাবনা থেকে আসছে নভেম্বরের মাঝামাঝিতে শুরু হতে পারে ফোকফেস্ট। আগের মতো এবারও আর্মি স্টেডিয়ামেই উৎসবটি অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনো কোনোকিছু চূড়ান্ত হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সান ফাউন্ডেশনের এক কর্মকর্তা জানান, ‘স্পষ্ট করে দেয়ার মতো কোনো তথ্য এই মুহূর্তে নেই। তবে আলোচনা চলছে যেন আবারও লোক গানের উৎসবটি ফিরিয়ে আনা যায়। সারাদেশের মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিল উৎসবটি। সবাই এটি উপভোগ করতে চান। সবকিছু অনুকূলে থাকলে আগের বছরগুলোর চেয়েও আরও জাঁকজমক করে এটি আয়োজনের চেষ্টা থাকবে। শিল্পী তালিকাতেও থাকবে চমক। বিশ্বের নানা দেশের শিল্পীরা অংশ নেবেন। চূড়ান্ত হলে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানানো হবে।’
২০১৫ সাল থেকে হওয়া উৎসবটিতে এখন পর্যন্ত ১৭ দেশের ৫০০ লোকসংগীত শিল্পী এই আয়োজনে অংশ নিয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৪-১৬ নভেম্বর, এই তিন দিনের প্রতিদিন বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট। সেবার উৎসবে সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের শাহ আলম সরকার, শফিকুল ইসলাম, মালেক কাওয়াল, ফকির শাহাবুদ্দিন, কাজল দেওয়ান, চন্দনা মজুমদারকামরুজ্জামান রাব্বিসহ অনেকে। বিদেশিদের মধ্যে ছিলেন শেভেনেবুরেবি (জর্জিয়া), হিনা নাসরুল্লাহ (পাকিস্তান), হাবিব কইটে অ্যান্ড বামাদা (মালি), সাত্তুমা (রাশিয়া), জুনুন (পাকিস্তান)।