শিরোনাম
বৃহঃ. ডিসে ৪, ২০২৫

চিকিৎসা নিতে লন্ডনে অর্থমন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি: ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা

চিকিৎসার জন্য এই মুহুর্তে লন্ডনে অবস্থান করছেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। চোখের চিকিৎসার জন্য গত ২রা জুলাই বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে করে লন্ডনে পৌঁছেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। এর আগে গত ২১ জুন বাংলাদেশ বিমানের আরেকটি ফ্লাইটে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রোস্টেটের চিকিৎসার জন্য লন্ডনে আসেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। দুজনকেই বাধ্যতামূলক ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে। তবে ইতিমধ্যে গতকাল ৪ঠা জুলাই নাজমুল হাসান পাপনের কোয়ারেন্টাইন মেয়াদ শেষ হয়েছে। এখন তিনি চিকিৎসা নিতে পারবেন।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখন কেমন এবং উনারা লন্ডনের কোথায় অবস্থান করছেন এসব ব্যাপারে বাংলাদেশ হাইকমিশনের বক্তব্য জানতে চাইলে প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরী বলেন, অর্থমন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতির চিকিৎসার ব্যাপারে হাইকমিশনের কাছে আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য নেই। তাছাড়া অর্থমন্ত্রী নিজ পরিবারের সাথেই আছেন বলে তিনি নিশ্চিত করেন তিনি। অর্থমন্ত্রী লন্ডন হাইকমিশনের অনুরোধ সত্বেও কোন প্রকার প্রটোকল নেননি বলেও জানান হাইকমিশন প্রেস মিনিস্টার আশিকুন্নবী চৌধুরী।

করোনার এই সংকটকালীন সময়ে দেশের জনগণকে মৃত্যুর মুখে রেখে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দুই ব্যাক্তির বিদেশে এসে চিকিৎসা গ্রহণকে ইতিবাচকভাবে নিতে পারছেন না প্রবাসীরা। বাংলাদেশে করোনার প্রকোপের শুরুতেই চীনের মত হাসপাতাল তৈরির ঘোষণা দেয়া অর্থমন্ত্রীর বিদেশে এসে চিকিৎসা নেয়াকে রীতিমত দেশের ও জনগণের সাথে প্রতারণা বলে মনে করছেন সাধারণ প্রবাসীরা।

লন্ডনের হ্যামলেটস সলিসিটর ফার্মের প্রিন্সিপাল মেম্বার ও সলিসিটর বিপ্লব কুমার পোদ্দার এই প্রতিবেদককে বলেন, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতির এই করোনাকালীন সময়ে এবং আর্থিক দুর্যোগকালে লন্ডনে এসে চিকিৎসা নেওয়া বড়ই বেদনাদায়ক। দেশের প্রধানমন্ত্রী যেখানে টিকিট কেটে লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন, সাধারণ জনগণ যেখান চিকিৎসা বঞ্চিত সেখানে তাদের চিকিৎসা বিলাসিতা প্রকারান্তরে দেশের প্রতি উপহাস।

বিসিএ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সেলিব্রেটি শেফ অলি খাঁন বলেন, ‘এই দুঃসময়ে সময়ে জনগণের পাশে থাকার পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের বিশেষ করে মন্ত্রীদের বিদেশে এসে চিকিৎসা না নিয়ে দেশের চিকিৎসা ব্যাবস্থাকে আরো উন্নত করা উচিত’।

প্রবাসী অধিকার পরিষদের যুক্তরাজ্য শাখার সমন্বয়ক ফয়জুল্লাহ বলেন, ‘দেশের জনগন চিকিৎসা না পেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে, রাস্তায় পড়ে মারা যাচ্ছে। আর সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা বিদেশে এসে চিকিৎসা নিচ্ছে। জাতির জন্য এর চেয়ে কষ্টের, বেদনার আর কিছু হতে পারে না। এদের হাত থেকে জাতিকে মুক্তি ছাড়া জাতির সামনে আর কোন বিকল্প নেই’।

বাংলাদেশের চিকিৎসা ব‍্যাবস্হার বিরুদ্ধে সীমাহীন অভিযোগ সাধারণ মানুষের। চিকিৎসার জন‍্য দেশের উচ্চপদস্হ মন্ত্রীদের এভাবে বিদেশে আসার খবর একদিকে সরকারের জন‍্য দৃষ্টিকটু, অন‍্যদিকে সেই অভিযোগকেই সত‍্য প্রমাণিত করে বলে মনে করছেন স্কটল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশী সাংবাদিক হুমায়ুন কবির। আস

সম্পর্কিত পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *